Uncategorized

অমুসলিমের মৃত্যুতে আমাদের কী করা উচিত?উল্লাস করা নাকি দুঃখ প্রকাশ করা। ▬▬▬▬▬▬▬◄❖►▬▬▬▬▬▬▬❂

ourislambd 63

যদি কোনো অমুসলিম তথা কাফির ইসলামের সাথে শত্রুতা না করে নিরীহভাবে জীবনযাপন করে এবং এভাবেই মারা যায়, তবে তার ব্যাপারে মুমিনের মনে এজন্য দুঃখ আসবে যে, সে ঈমানহারা হয়ে কবরে চলে গেলো। তবে, তার প্রতি কোনোরকম ভালোবাসা দেখানো যাবে না। আবার তাকে নিয়ে উল্লাস করারও কিছু নেই। .রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘তোমরা মৃতদের গালি দিও না; কেননা তারা তাদের কৃতকর্মে পৌঁছে গেছে।’’ [সহিহ বুখারি: ১৩৯০].❂ তাদের জন্য কি আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করা যাবে? ‘‘শান্তিতে থাকুন’’ (RIP—Rest in peace) ইত্যাদি বলা যাবে?.উত্তর হলো, না। তাদের জন্য কোনোভাবেই ক্ষমাপ্রার্থনা করা যাবে না এবং তাদের কল্যাণ কামনা করা যাবে না। ইসলামের জন্য আবু তালিবের অবদান বলে বা লিখে শেষ করা যাবে না। কিন্তু সে ঈমান আনার সৌভাগ্য লাভ করতে পারেনি। নবীজি দাঁত কামড়িয়ে চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সে কাফির অবস্থায়ই মৃত্যুবরণ করে। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার মৃত্যুর পর তার জন্য ক্ষমা চাইতে থাকেন আল্লাহর কাছে। তখন আল্লাহ্ আয়াত নাযিল করে বলেন—.‘‘নবী ও মুমিনের উচিত নয় যে, তারা মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে, যদিও তারা আত্মীয় হয়—একথা সুস্পষ্ট হওয়ার পর যে, তারা জাহান্নামের অধিবাসী।’’ [সূরা তাওবাহ, আয়াত: ১১৩].এবার বলুন, যে-আবু তালিব তার জীবন বাজি রেখে ভাতিজা মুহাম্মাদকে সাপোর্ট দিয়ে গেছে, তার জন্যও ক্ষমা প্রার্থনার অনুমতি নেই, তবে আপনি আর কার জন্য শান্তি কামনা করেন?রাসূল (সা:) আল্লাহর কাছে তাঁর মায়ের ক্ষমার জন্য অনুমতি চাইলে আল্লাহতালা অনুমতি দান করেননি। কারণ রাসূল (সা:) মা মুশরিক অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: আমি আমার প্রভুর নিকট আমার মায়ের জন্য ইস্‌তিগফার (ক্ষমা প্রার্থনা) করার অনুমতি চাইলে আমার প্রভু আমাকে অনুমতি দান করেননি। আর তাঁর ক্ববর যিয়ারাত করার অনুমতি চাইলে তিনি আমাকে অনুমতি দিলেন। (ই.ফা. ২১২৭, ই.সে. ২১৩০,সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ২১৪৮)।.মুশরিক তথা কাফিরের ব্যাপারে ইসলামে কেন এত কঠোরতা যে, তাদের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমাও চাওয়া যাবে না?.উত্তর হলো: যে আল্লাহ্ আপনাকে মায়ের পেট থেকে নিয়ে মৃত্যু পর্যন্ত রিযিক দিয়েছেন, এই পৃথিবীর আলো বাতাস উপভোগ করিয়েছেন, সেই আল্লাহ্কে আপনি বিশ্বাস করেন না। আপনার মত নিমকহারাম আর কে আছে? আল্লাহ্ কত সুন্দর করে বলছেন—.‘‘কীভাবে তোমরা আল্লাহর সাথে কুফর করছো, অথচ তোমরা ছিলে মৃত? অতঃপর তিনি তোমাদেরকে জীবিত করেছেন, এরপর তিনি তোমাদের মৃত্যু দেবেন অতঃপর জীবিত করবেন, তারপর তারই নিকট তোমাদের ফিরিয়ে নেওয়া হবে। তিনিই জমিনে যা আছে সব তোমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন। তারপর আসমান সৃষ্টির ইচ্ছা করলেন এবং তাকে সাত আসমানে সুবিন্যস্ত করলেন। আর সবকিছু সম্পর্কে তিনি সম্যক জ্ঞাত।’’ [সূরা বাকারাহ, আয়াত: ২৮-২৯].❂ যদি কোনো কাফির মুসলিমদের সাথে শত্রুতা করে থাকে এবং সারাজীবন মুসলিমদের ক্ষতির চেষ্টা করে থাকে, তবে তার মৃত্যুতে মুসলিমরা আনন্দ করবে। এটাই সুন্নাহ। .‘আব্দুল্লাহ বিন আবু আওফা (রা.) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আবু জাহলের মাথা কর্তনের ব্যাপারে সুসংবাদ দেওয়া হলে তিনি দুই রাকাত (শুকরিয়ার) নামাজ পড়লেন।’ [ইবনু মাজাহ: ১৩৯১].❂ সাধারণভাবে কোনো কাফিরের সাথে বন্ধুত্ব করা যাবে না, সে যতই আপন হোক।.আল্লাহ্ বলেন, ‘‘হে ঈমানদারগণ, তোমরা নিজেদের পিতা ও ভাইদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না, যদি তারা ঈমান অপেক্ষা কুফরিকে প্রিয় মনে করে। তোমাদের মধ্য থেকে যারা তাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে তারাই জালিম।’’ [সূরা তাওবাহ, আয়াত: ২৩].এমনকি কেউ কাফিরের সাথে বন্ধুত্ব করলে নিজেই কাফির হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে। আল্লাহ্ সতর্ক করে বলেন, “হে ঈমানদারগণ! তোমরা ইহুদী ও খৃস্টানদের আওলিয়া (বন্ধু বা অভিভাবক) হিসেবে গ্রহণ করো না। তারা (বরং) একে অপরের বন্ধু। যে কেউ তাদের বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করবে, সে (হবে) তাদেরই একজন। নিশ্চয় আল্লাহ জালিমদের হিদায়াত দেন না।” [সূরা মায়িদাহ, আয়াত: ৫১].❂ তাহলে কি আমরা জীবিত কাফিরদের সাথে সর্বদা খারাপ আচরণ করবো? ইসলাম কি এটাই বলে?.উত্তর হলো, না। বরং আমরা সবার সাথেই সদাচরণ করবো। প্রয়োজনে তাদের সাথে লেনদেনও করবো। তবে, আমাদের ভালোবাসা কেবল মুমিনদের জন্য থাকবে। আল্লাহ্ বলেন, ‘‘যারা দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের সাথে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদেরকে স্বদেশ থেকে বহিষ্কার করেনি, তাদের প্রতি সদাচরণ ও ইনসাফ করতে আল্লাহ তোমাদের নিষেধ করেন না। নিশ্চয়ই আল্লাহ ইনসাফকারীদের ভালোবাসেন।’’ [সুরা মুমতাহিনা, আয়াত: ০৮].আমীন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.