প্রশ্ন: ইদানিং সামাজিক যযোগাযোগ মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা ও মূসা আ. এর মাঝে রোযা বিষয়ে কথোপকথনের একটি গল্প নিম্নোক্ত হাদীসটি প্রচার করা হচ্ছে। সাহিহ হাদিসের ভিত্তিতে গল্পটি কতটুকু সঠিক?
হাদীসটি হচ্ছে —-
একমাত্র মুসা নবীই আল্লাহর সাথে ঘন ঘন সাক্ষাৎ করার বায়না ধরতেন এবং সুযোগও পেতেন। একবার তিনি মহান আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালা’কে জিজ্ঞেস করেছিলেন, হে আল্লাহ্ একমাত্র আমাকে আপনার সাথে সরাসরি কথা বলার সন্মান ও সুযোগ দিয়েছেন। এমন সুযোগ কি অন্য কাউকে দিয়েছেন বা দিবেন ?
আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালা উত্তরে বলেন, “হে মুসা, পরবর্তীকালে আমি উম্মত পাঠাব, যারা মুহাম্মদ (সা:) এর উম্মত হবে। যারা রোজা রাখবে এবং রোজা অবস্থায় তারা তোমার চেয়েও আমার অধিক নিকটবর্তী হবে। হে মুসা যখন তুমি আমার সাথে কথা বল, তখন তোমার আর আমার মাঝে ৭০,০০০ সুক্ষ পর্দা থাকে যা তুমি দেখতে পাওনা কিন্তু ইফতারের সময় আমার আর আমার বান্দাদের মধ্যে একটিও পর্দা থাকবেনা। হে মুসা, আমি স্বয়ং এই দায়িত্ব নিচ্ছি যে ইফতারের সময় আমি কখনোই একজন রোজাদারের দোয়া অস্বীকার করবো না। }]
উত্তর:
আল্লাহ তাআলা ও মূসা আ. এর মাঝে রোযা বিষয়ে কথোপকথনের গল্পটি একটি বানোয়াট গল্প। কোন হাদীসের গ্রন্থে এর অস্তিত্ব নেই। কিছু কিছু লেখক তাদের বইয়ে হাদীসের নামে এ জাতীয় বানোয়াট ও মিথ্যা গল্প উল্লেখ করেছে। যেমন, বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ ও সাহিত্যিক আব্দুর রহমান ইবনে আব্দুস সালাম আসসাফুরী তার ‘নুযহাতুল মাজালিস ওয়া মুন্তাখাবুন নাফায়েস’ বইয়ে এটি উল্লেখ করেছেন। অনুরূপভাবে তাফসীরে রুহুল বায়ানেও এটি উল্লেখিত হয়েছে! অথচ এটি সম্পূর্ণ ভিত্তহীন কথা।
আমরা জানি, মূসা আ. আল্লাহর একজন অত্যন্ত উঁচু মর্যাদা সম্পন্ন রাসূল। বরং তিনি পাঁচজন ‘উলুল আযম’ রাসূলের একজন। আল্লাহ তার সাথে সরাসরি কথা বলেছেন। নবী-রাসূলগণ হলেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষ।
সুতরাং উম্মতে মুহাম্মাদিয়ার একজন সাধারণ রোযাদার কিভাবে এমন উচ্চমর্যাদা সম্পন্ন রাসূলের চেয়েও অধিক নৈকট্যপ্রাপ্ত হতে পারে?!
সুতরাং এটি শরিয়ত বিরুদ্ধ কথা-এতে কোন সন্দেহ নাই।
মোটকথা, এটি হাদীসের নামে মিথ্যাচার। সুতরাং এটিকে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর হাদীস বলে প্রচার করা জায়েয নাই। আল্লাহু আলাম।
উত্তর দিয়েছেন:
শাইখ আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
আল্লাহ তাআলা ও মূসা আ. এর মাঝে রোযা বিষয়ে কথোপকথনের গল্পটি হাদীসের নামে মিথ্যাচার
22
Apr