তাহাজ্জুদ নামাজের পরিচয়, এর সঠিক সময়, আদায়ের পদ্ধতি ও রাকাতসংখ্যা:
▬▬▬▬▬▬▬▬✿▬▬▬▬▬▬▬▬
❑ তাহাজ্জুদ নামাজের পরিচয়:‘তাহাজ্জুদ’ শব্দটি আরবি। এর অর্থ হলো: রাত্রিজাগরণ, ঘুম থেকে ওঠা, রাত্রিকালীন ইবাদত ইত্যাদি। .পরিভাষায়, তাহাজ্জুদ মূলত ওই নামাজকে বলা হয়, যা রাতের বেলায় ঘুম থেকে ওঠে আদায় করা হয়৷ ফায়দ্বুল বারিতে এসেছে, ‘ঘুম থেকে জাগার পর যদি নামাজ পড়ে, তখন তাকে তাহাজ্জুদ নামে নামকরণ করা হয়৷’ [কাশমিরি, ফায়দ্বুল বারি: ২/৪০৭].ইমাম কুরতুবি (রাহ.)-ও একথা বলেছেন। অধিকাংশ আলিমের বক্তব্য এটিই। তাছাড়া দলিলের আলোকে এই মতটিই অগ্রগণ্য। .এর বাইরে কোনো কোনো আলিম বলেছেন, মধ্য রাতের পর যে নামাজ পড়া হয়, সেটি তাহাজ্জুদ। আবার কারও মতে, ইশার পরই তাহাজ্জুদ আদায় করা যায়। .তবে, অধিকতর সঠিক মত সেটিই, যা আমরা প্রথমে উল্লেখ করেছি। তা হলো, রাতের বেলা ঘুম থেকে ওঠে নামাজ পড়া। (এই প্রসঙ্গে অন্য পর্বে আরও আলোচনা আসবে, ইনশাআল্লাহ).
❑ তাহাজ্জুদ নামাজের সঠিক সময়: .তাহাজ্জুদ নামাজের সর্বোত্তম সময় হলো, শেষ রাত। বিশেষত রাতের অবশিষ্ট এক তৃতীয়াংশে তাহাজ্জুদ পড়া উত্তম। .রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘প্রতি রাতের শেষ তৃতীয়াংশে আমাদের রব দুনিয়ার আসমানে অবতীর্ণ হন এবং বলেন ডাকার জন্য কেউ আছে কি, যার ডাক আমি শুনবো? চাওয়ার জন্য কেউ আছে কি, যাকে আমি দেব? গুনাহ থেকে মাফ চাওয়ার কেউ আছে কি, যার গুনাহ আমি মাফ করব?’’ [বুখারি, আস-সহিহ: ১০৯৪; মুসলিম, আস-সহিহ ১৮০৮] .
❑ তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়ের পদ্ধতি:.তাহাজ্জুদের নামাজের বিশেষ কোনো নিয়ম নেই। সাধারণ সুন্নাত বা নফল নামাজের মতই এই নামাজ পড়তে হয়। তবে, চাইলে এটি দুই রাকাত করেও আদায় করা যায় আবার চার রাকাত করেও আদায় করা যায়। চার রাকাত করে আদায় করলে, যোহরের ফরজের পূর্বের চার রাকাত সুন্নাতের মতো করে পড়তে হয়। বিশেষ কোনো সূরা দিয়ে এই নামাজ পড়তে হয় না। এটি সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ নফল নামাজ। .
❑ তাহাজ্জুদ নামাজের রাকাতসংখ্যা:.তাহাজ্জুদের নামাজ সর্বনিম্ন ২ রাকাত থেকে শুরু করে ৪, ৬, ৮, ১০ রাকাতও পড়া যায়। এটি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে প্রমাণিত। [আবু দাউদ, আস-সুনান: ১৩৫৭ ও ১৩৬২; আহমাদ, আল-মুসনাদ: ২৫১৫৯].তবে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাধারণ আমল ছিলো, তিনি অধিকাংশ সময় রাতে ৮ রাকাত তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তেন। [বুখারি, আস-সহিহ: ১১৪৭]