Uncategorized

সালাতে মনে বিনয়-নম্রতা ও ভয়ভীতি সৃষ্টি এবং মনস্থির রাখার উপায়

61045546 708178016268413 4946104481470218240 n

ভয়ভীতি ও বিনয়-নম্রতা সহকারে স্থিরচিত্তে সালাত আদায় করা মুমিনের চূড়ান্ত সাফল্যের সোপান। আল্লাহ তাআলা বলেন:قَدْ أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُونَ- الَّذِينَ هُمْ فِي صَلَاتِهِمْ خَاشِعُونَ”মুমিনগণ সফলকাম হয়ে গেছে যারা ভয়ভীতি সহকারে বিনম্র চিত্তে সালাত আদায় করে।” (সূরা মুমিনূন এর ১ ও ২ নং আয়াত)নিম্নে সালাতরত অবস্থায় মনে ভয়ভীতি সৃষ্টি ও মনস্থির রাখার কতিপয় উপায় তুলে ধরা হল:◈ ১) সালাতের প্রস্তুতি নিয়ে প্রশান্ত মনে আগেভাগে মসজিদে আসা।◈ ২) সালাতে মৃত্যুর কথা স্মরণ করা।আনাস রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:اذكرِ الموتَ في صلاتِك، فإنَّ الرجلَ إذا ذَكر الموتَ في صلاتِه لحريٌّ أن يُحسنَ صلاتَه”সালাতে মৃত্যুর কথা স্মরণ কর। কেননা, মানুষ যখন সালাতে মৃত্যুর কথা স্মরণ করে তখন সে তার সালাতকে সুন্দর ভাবে আদায় করতে সক্ষম হয়। ”(সনদ হাসান, সিলসিলা সহীহাহ/২৮৩৯)◈ ৩) “আমি আল্লাহকে দেখছি বা তিনি আমাকে দেখছেন” এই অনুভূতি মনেজাগ্রত রাখা।◈ ৪) এ কথা স্মরণ করা যে, আল্লাহ তায়ালা সালাতে বান্দার প্রতিউত্তর করে থাকেন।◈ ৫) এ কথা স্মরণ রাখা যে, সালাতে মূলত: আল্লাহর সাথে চুপিসারে কথা বলা হয়।◈ ৬) সালাতে পঠিত দুয়া-তাসবীহ ও সূরা-কিরাতের অর্থ অনুধাবন করা।◈ ৭) খাবার উপস্থিত রেখে বা পেশাব- পায়খানা চেপে সালাত আদায় না করা। কেননা, এতে মনোযোগ বিঘ্নিত হয়।◈ ৮) সেজদায় বেশী বেশী আল্লাহর নিকট দুআ করা।রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,أقربُ مَا يَكونُ العبْدُ مِن ربِّهِ وَهَو ساجدٌ، فَأَكثِرُوا الدُّعاءَ”বান্দা যখন সিজদায় থাকে তখন সে আল্লাহর সবচেয়ে সন্নিকটে থাকে। অত:এব, তোমরা (সিজদা অবস্থায়) অধিক পরিমাণে দুয়া কর।” (সহীহ মুসলিম) তবে একাকী সালাত, নফল, সুন্নত, তাহাজ্জুদ ইত্যাদি ক্ষেত্রে সিজদায় অধিক পরিমাণে দুয়া করা ভালো। কুরআন ও হাদিসে বর্ণিত দুয়া সমূহ অধিক হারে পড়ার চেষ্টা করতে হবে।◈ ৯) হাই আসলে মুখে হাত দিয়ে যথা সম্ভব তা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করা।◈ ১০) সিজদার স্থানে দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখা এবং অন্য দিকে দৃষ্টিপাত না করা।◈ ১১) ভয়-ভীতি ও ধীর স্থিরতা সহকারে সালাত আদায় করা।◈ ১২) শয়তানের উপস্থিতি টের পেলে শয়তান থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করা তথা চুপি স্বরে আউযুবিল্লাহি মিনাশ শয়তানির রাজীম “বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি” পাঠ করা ও বাম দিকে অতি হালকা ভাবে তিনবার থুথু নিক্ষেপ করা।যেমন: হাদিসে বর্ণিত হয়েছে,عن عُثْمَانَ بْن أَبِي الْعَاصِ رضي الله عنه أنه أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ : يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ الشَّيْطَانَ قَدْ حَالَ بَيْنِي وَبَيْنَ صَلَاتِي وَقِرَاءَتِي يَلْبِسُهَا عَلَيَّ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ذَاكَ شَيْطَانٌ يُقَالُ لَهُ خَنْزَبٌ ، فَإِذَا أَحْسَسْتَهُ فَتَعَوَّذْ بِاللَّهِ مِنْهُ وَاتْفِلْ عَلَى يَسَارِكَ ثَلَاثًا قَالَ : فَفَعَلْتُ ذَلِكَ فَأَذْهَبَهُ اللَّهُ عَنِّيউসমান ইবনুল আস থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল, শয়তান আমার সালাত ও কেরাআতে বিঘ্ন সৃষ্টি করে।তিনি বললেন: এটি হল শয়তান। যার নাম খিনযাব। তুমি যদি এমনটি অনুভব কর, তবে “আউযু বিল্লাহি মিনাশ শয়তানির রাজীম পাঠ কর এবং তোমার বাম পাশে তিনবার হালকা ভাবে থুথু নিক্ষেপ কর।”তিনি বলেন: আমি এমনটি করায় আল্লাহ তায়ালা আমার এ সমস্যা দূর করে দিয়েছেন। (সহীহ মুসলিম)উল্লেখ্য যে, শরীর বা কাঁধ বাম দিকে ঘুরার প্রয়োজন নাই। কেবল মাথাটা সামান্য বাম দিকে নিয়ে খুব হালকা ভাবে থুথু ফেলার মত করবে। (এতে মুখ থেকে পানি নির্গত হবে না।) এমনটি করলে শয়তান লাঞ্ছিত অবস্থায় পলায়ন করবে ইনশাআল্লাহ।

▬▬▬▬💠🌀💠 ▬▬▬▬

উত্তর প্রদানে:

আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল

মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সউদী আরব

Leave a Reply

Your email address will not be published.