আকিদাহ আত-তাওহীদ
আকিদাহ আত-তাওহীদ
বইটিতে আলোচিত বিষয়বস্তুসমূহ :
আকিদাহ আত-তাওহীদ
আকীদাহ্ হলো এমন বিষয় যা শুধু বিশ্বাসের সাথে সংশ্লিষ্ট, যার কোনো বাহ্যিক কার্যরূপ নেই। যেমন, আল্লাহ্ হলেন বিশ্বজগতের স্রষ্টা ও প্রতিপালক এবং তাঁর ‘ইবাদাত করা বাধ্যতামূলক—এ বিশ্বাস পোষণ করা একটি ‘আকীদাগত বিষয়। একইভাবে ঈমানের উল্লিখিত বাকি স্তম্ভগুলোর প্রতি বিশ্বাস রাখাও ‘আকীদাগত বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত। এগুলো হলো ঈমানের একান্তই মৌলিক বিষয়।
আর যে বিষয়গুলোকে ফলিত ও ব্যবহারিক বাস্তবতায় কাজে পরিণত করা যায় সেগুলোকে বলা হয় ‘আমালি বিষয়। যেমন, সলাত প্ৰতিষ্ঠা, যাকাত আদায়, সওম পালন ও যাবতীয় ‘আমালি বিধান। ইসলামি শারী‘আতে এগুলোকে ফুরু‘ঈ বা আনুষঙ্গিক বিষয় হিসেবে গণ্য করা হয়। এগুলোর বিশুদ্ধতা মৌলিক ‘আকীদাগত বিষয়গুলোর বিশুদ্ধতার উপর নির্ভরশীল।
আকিদাহ আত-তাওহীদ
মহান আল্লাহ আমাদের চোখের সামনেই তাঁর এককত্বের অগণিত উদাহরণ রেখে দিয়েছেন, যেন আমরা তা উপলব্ধি করতে পারি। করতেও পারেন অনেকে। জাত-পাত নির্বিশেষে অনেককেই শুনবেন উপরওয়ালা ‘একজন’-এর কথা বলতে। এভাবে সৃষ্টির পরতে পরতে মহান আল্লাহ তাঁর এককত্বের নিদর্শন রেখে দিয়েছেন। তাঁকে চিনিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু তাঁর ‘ইবাদাত কীভাবে করতে হবে তা বাতলে দেওয়ার জন্য পাঠিয়েছেন রসূল “তোমাদেরই মধ্য থেকে”। যিনি তাদেরই জাতির ও প্রকৃতির হবেন; সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, ইত্যাদি দিক থেকে তাদেরই মতো অনুভূতি ও বোধসম্পন্ন হবেন; তাদেরই সমাজের ও মর্ত্যের বাসিন্দা হবেন। নবী-রসূল প্রেরণের এ ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ রসূল মুহাম্মাদ (সা.) এসেছেন এবং চলেও গিয়েছেন চৌদ্দশত বছরেরও বেশী পূর্বে। এরপর সাহাবায়ে কেরাম, তাবি‘ঊন, তাবি‘উত তাবি‘ঈন, আইম্মায়ে মুজতাহিদীন ও সালাফ আস সালিহীনগণ তাওহীদের এই ঝাণ্ডাকে সমুন্নত রাখতে চেষ্টা করেছেন। এযুগের প্রথিতযশা আলিম ড. সালিহ আল ফাওযান রচিত আকীদাহ আত-তাওহীদ গ্রন্থ আমাদের জীবন ও সমাজের উপর জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসা শির্ক-কুফরের পাথরটিকে একটু হলেও সরাতে পারবে; আলোকিত করবে আমাদের জীবনকে তাওহীদের নির্মল আলোয়।
আকিদাহ আত-তাওহীদ
জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরের বাসিন্দা যারা…
আভিধানিকভাবে ‘নিফাক’-এর মূল ধাতুর অর্থ হলো ইঁদুর জাতীয় প্রাণীর গর্তের অনেকগুলো মুখের একটি মুখ। তাকে কোনো এক মুখ দিয়ে খোঁজা হলে অন্য মুখ দিয়ে সে বেরিয়ে যায়।
নিফাক প্রথমত দুপ্রকার হয় :
১. বিশ্বাসের ক্ষেত্রে নিফাক
২. আমল বা কর্মের ক্ষেত্রে নিফাক
বিশ্বাসের নিফাকি হলো বড় নিফাকি। এটা তখন হয়, যখন কোনো ব্যক্তি বাহ্যিকভাবে নিজেকে মুসলিম হিসেবে প্রকাশ করে; কিন্তু মনের মধ্যে কুফরি গোপন রাখে। এটা মানুষকে দীন ইসলাম থেকে সম্পূর্ণ বের করে দেয়। পরিণতিতে সে জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে নিজের জায়গা করে নেয়।
আল্লাহ সূরা আল-বাকারাহর শুরুতে তিন শ্রেণির লোকদের কথা বর্ণনা করেছেন : মুমিন, কাফির ও মুনাফিক়। মুমিনদের সম্পর্কে চারটি আয়াত, কাফিরদের সম্পর্কে দুটি আয়াত এবং মুনাফিক়দের সম্পর্কে তেরটি আয়াত অবতীর্ণ করেছেন।
মুনাফিকদের সংখ্যাধিক্য, সমাজে তাদের নিফাক-এর ব্যাপক প্রাদুর্ভাব এবং ইসলামের ব্যাপারে মুসলিমদের জন্য তারা ভয়ানক ফিতনা সৃষ্টির কারণেই তাদের ব্যাপারে এত বেশি আলোচনা করা হয়েছে।
মুনাফিকদের কারণে মুসলিম জাতির উপর অনেক বেশি বিপদ-আপদ আপতিত হয়, কেননা ইসলামের শত্রু হওয়া সত্ত্বেও তারা সমাজে মুসলিম হিসেবে পরিচিত এবং তাদেরকে অনেক সময় ইসলামের বন্ধুও ভাবা হয়।
তারা এমন সব উপায়ে ইসলামের শত্রুতা করে থাকে যা দেখে বাহ্যিকভাবে মনে হতে পারে যে, তারা ইসলামের খেদমত করছে। ফলে অজ্ঞ লোকেরা মনে করে যে, এ হলো তাদের দ্বিনি ইলমের প্রচারণা ও সমাজ সংশোধনমূলক কাজ। অথচ বাস্তবে তা তাদের মূর্খতা ও ফাসাদ সৃষ্টি বৈ কিছু নয়।
এ ধরনের নিফাক আবার ছয় ভাগে বিভক্ত। এর কোনো একটিও যদি কারও মধ্যে পাওয়া যায়, তবে খাঁটি মুনাফিক হিসেবেই সাব্যস্ত হবে এবং তার স্থান হবে জাহান্নামের নিম্নতম স্তরে। যথা :
(ক) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে মিথ্যা সাব্যস্ত করা,
(খ) তাঁর আনীত শারিআহর কোনো অংশকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা,
(গ) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করা,
(ঘ) তাঁর আনীত শারিআহর কোনো অংশের প্রতি বিদ্বেষ রাখা,
(ঙ) তাঁর আনীত দীনের পরাজয়ে খুশি হওয়া,
(চ) তাঁর আনীত দীনের বিজয়ে অখুশি হওয়া কিংবা মনে কষ্ট অনুভব করা।
আকিদাহ আত-তাওহীদ
ইমাম মালিক (রহ.) বলেন, এই জাতির পরবর্তী প্রজন্ম কেবল সেই উপায়েই নিজেদেরকে সংশোধন করতে পারবে, যে উপায় অবলম্বন করে জাতির প্রথম প্রজন্ম নিজেদেরকে সংশোধন করেছিলেন। আর এ কথা বলার অপেক্ষাই রাখে না যে, সেই উপায়টির সর্বপ্রধান অনুষঙ্গ হলো বিশুদ্ধ আকীদা-বিশ্বাস।
আরব বিশ্বের প্রতিথযশা আলিম ড. সালিহ আল ফাওযান তার ‘আকিদাহ আত-তাওহীদ’ বইয়ে আকীদা-বিশ্বাসের মৌলিক বিষয়গুলো সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত মানুষের জন্য বোধগম্য করে সংক্ষিপ্তভাবে আলোচনা করেছেন। ইসলাম সম্পর্কে মৌলিক ধারণা রাখার জন্য অসাধারণ একটি বই আকিদাহ আত-তাওহীদ। এই আকিদাহ আত-তাওহীদ বইটি অনুবাদ করেছেন, বাংলাদেশের প্রখ্যাত আলিম ড. মানযুরে ইলাহী।

আকিদাহ-আত-তাওহীদ
Reviews
There are no reviews yet.