জান্নাতের নিআমত ও তা লাভের উপায়
লেখক : নাজমুস সাআদাত
সম্পাদক : উস্তায মোস্তফা কামাল ও সাজ্জাদ সালাদীন
প্রকাশনায় : দারুল কারার পাবলিকেশন্স
পরিবেশনায়: তাওহীদ পাবলিকেশন্স
পৃষ্ঠা সংখ্যা : ৯৬
জান্নাতের নিআমত ও তা লাভের উপায়
সম্পাদকের বাণী
আসসালামু আলাইকুম, সকল প্রশংসা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার জন্য, দরূদ নাজিল হােক প্রিয় নবী মুহাম্মদ (স)-এর উপর। সৃষ্টিকুলের মধ্যে মানুষ এমন এক জাতি, যারা যে-কোনাে কাজের প্রতিদান সম্পর্কে
জানলে বা দেখতে না পেলে, কোন কাজে পূর্ণ মনােযােগ দিতে চায় না। এটা মানুষ হিসাবে আমাদের ফিতরাত। “জান্নাতের নি’আমত ও তা লাভের উপায়” বইটি পড়লে যে-কোনাে সচেতন মুসলিম ইবাদতের প্রতিদান কেমন হতে পারে তা একটু হলেও উপলব্ধিতে আঁচ করতে পারবে, অন্তর কিছুটা হলেও বিগলিত হবে ইনশাআল্লাহ।
জান্নাত সম্পর্কে কুরআনের আয়াত ও হাদীসগুলাে পড়লে সাধারণত প্রতিটি মানুষই ইমােশনাল হয়ে থাকে, আমি নিজেই বইটি পড়ে খুব ইমােশনাল হয়ে জান্নাতের কল্পনায় অনেকক্ষণ চুপচাপ আবেগে আপ্লুত অবস্থায় ছিলাম-কেমন হতে পারে জান্নাতের নি’আমত, যদিও কোন হৃদয় কখনাে কল্পনা করতে পারবে না।
আলহামদুলিল্লাহ, ছােট্ট এ বইটি পড়ে অনেক আনন্দ লাগছিল। আমার বিশ্বাস, এ বইটি যে-কোনাে সাধারণ মানুষ পড়লে জান্নাত সম্পর্কে সার্বিকভাবে সংক্ষিপ্ত একটা সুস্পষ্ট বর্ণনা পাবে, যার ফলে সে জান্নাতের মতাে মহান নি’আমত নিশ্চিত করতে অবশ্যই আগ্রহী হবে এবং জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে ইনশাআল্লাহ।
আরাে ভালাে লাগলাে, বইটিতে ছােট ছােট গুরুত্বপূর্ণ কিছু আমল অত্যান্ত সহজ সাবলিল ভাষায় তুলে ধরা হয়েছে, যা পাঠকের ইবাদতকে বেগবান করার জন্য চমৎকারভাবে সহায়তা করবে ইনশাআল্লাহ। বইটির প্রতিটি অধ্যায়ে প্রচুর পরিমাণে কুরআন ও সুন্নাহভিত্তিক বিশুদ্ধ দলিল রয়েছে। বইটির মাধ্যমে যে-কোনাে পাঠক উপকৃত হবে আশা করছি।
সবশেষে বইটির বহুল প্রচারণা কামনা করছি। বইটির লেখক তরুন আলেম নাজমুস সাআদাত ভাইয়ের কঠোর পরিশ্রম ও তার সকল খেদমাতকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা কবুল করুন এবং তার ইলমে ও হায়াতে বারাকাহ দান করুন, আমীন!
-উস্তা মােস্তফা কামাল দাঈ : মারকাজ আল-হিদায়া, বাংলা বিভাগ, আল-হিদ, বাহরাইন
জান্নাতের নিআমত ও তা লাভের উপায়
সূচিপত্র
জান্নাতরে নিআমত ও তা লাভরে উপায়, ১১ জান্নাতরে ফল ফলাদরি ববিরণ, ১২ জান্নাত ও নারী সর্ম্পকে ববিরণ, ১৩ জান্নাতরে নদ-নদীর ববিরণ, ১৫ জান্নাতে প্রত্যাশার অতরিক্তি লাভ, ১৫ জান্নাতরে গৃহরে র্বণনা, ১৬ সুসজ্জতি সিংহাসন, ১৭ কশিোরদরে আপ্যায়ন, ১৯ পানি ও শরাব আপ্যায়ন, ২১ পাখরি ভুনা গোশত ও মাছরে কলজিা, ২৬ আনত-নয়না হুর, ২৭ শামত্মির আওয়াজ, ৩২ জান্নাতরে বৃক্ষসমূহ, ৩৪ জান্নাতে খজেুর বৃক্ষ র্অজনরে মাধ্যম, ৩৮ অগণতি ফল-মূল, ৪০ জান্নাতরে সুগন্ধি ও খোশবু, ৪৪ জান্নাত লাভরে উপায়, ৪৬ আলস্নাহর একতবের স্বীকৃত,ি ৪৬ আলস্নাহর প্রতি ঈমান আনয়ন করা, ৪৭ তাক্বওয়া র্অজন করা, ৪৯ মুহাম্মদ (সা.)-এর অনুসরণ করা, ৫০ ছালাত আদায় করা, ৫২ সময়মত ছালাত আদায় করা, ৫৩ তাহয়্যিাতুল ওযূ ছালাত আদায় করা, ৫৪ ছয়িাম পালন করা, ৫৪ হজ্জ্বব্রত পালন করা, ৫৭ যাকাত আদায় করা, ৫৮ দান সাদকা করা, ৫৯ ন্যায়বচিার, ৬০ তাসবীহ পাঠ করা, ৬১ আলস্নাহর নাম মুখস্থ করা, ৬৩ আলস্নাহর নকিট র্প্রাথনা করা, ৬৩ আলস্নাহর পথে দান করা, ৬৪ কুরআন তলোওয়াত করা, ৬৫ সূরা বাকারা ও সূরা ইমরান পাঠ করা, ৬৭ আয়াতুল কুরসী পাঠ করা, ৬৮ সূরা কাহ্ফ তলোওয়াত করা, ৬৯ সূরা মুলক পাঠ করা, ৭০ সূরা ইখলাছ পাঠ করা, ৭১ উত্তমরূপে ওযূ করা, ৭২ পতিা-মাতার প্রতি সদাচরণ করা, ৭৪ আত্মীয়তার সর্ম্পক রক্ষা করা, ৭৬ প্রতবিশেরি প্রতি সদাচরণ করা, ৭৭ ইয়াতমি প্রতপিালন করা, ৭৮ কন্যা সমত্মান প্রতপিালন করা, ৮০ আলস্নাহর জন্য ভালবাসা স্থাপন করা , ৮০ মুসলমি ভাইয়রে কষ্ট দূরীভূত করা, ৮৩ ছয়টি বশৈষ্ট্যিরে অধকিারী হওয়া, ৮৪ মহলিাদরে জন্য স্বামীর আনুগত্য করা, ৮৫ ঋণগ্রসত্মকে অবকাশ দওেয়া, ৮৬ গোলাম আযাদ করা, ৮৭ তাওবা করা, ৮৮ ------- ইহকালীন জীবনের সৎ আমলের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তোষ লাভ করা এবং পরকালীন জীবনে জাহান্নাম থেকে পরিত্রাণ পেয়ে জান্নাতে প্রবেশ করাই হচ্ছে মুসলমিদের প্রধান লক্ষ্য। আর জান্নাত লাভ করতে হলে রাসূল @-এর পদ্ধতি অনুযায়ী শিরক ও বিদ‘আত মুক্ত আমল করা জরুরী। আলোচ্য নিবন্ধে আমরা জান্নাতের নি‘আমতসমূহ উল্লেখপূর্বক তা লাভের উপায় আলোচনা করার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।
জান্নাতবাসীদের জন্য আল্লাহ অফুরন্ত নি‘আমত প্রস্তুত করে রেখেছেন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
জান্নাতের নিআমত ও তা লাভের উপায়
وَإِذَا رَأَيْتَ ثَمَّ رَأَيْتَ نَعِيمًا وَمُلْكًا كَبِيرًا
‘আর যখন তুমি সেখানে দেখবে তখন দেখতে পাবে ভোগবিলাসের উপকরণ ও বিশাল রাজ্য’।[1]
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা আরো বলেন,
فَأَمَّا مَنْ ثَقُلَتْ مَوَازِينُهُ (6) فَهُوَ فِي عِيشَةٍ رَاضِيَةٍ (7) وَأَمَّا مَنْ خَفَّتْ مَوَازِينُهُ (8) فَأُمُّهُ هَاوِيَةٌ (9)
‘তখন যার (নেকীর) পাল্লা ভারী হবে, সে লাভ করবে সন্তোষজনক জীবন। কিন্তু যার পাল্লা হাল্কা হবে তার অবস্থান হবে হাবিয়া (জাহান্নাম)’।[2]
সৎকর্মশীল বান্দার জন্য আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলার দয়া ও রহমত সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ @ বলেন,
قَالَ اللهُ أَعْدَدْتُ لِعِبَادِى الصَّالِحِيْنَ مَا لاَ عَيْنَ رَأَتْ، وَلاَ أُذُنَ سَمِعَتْ، وَلاَ خَطَرَ عَلَى قَلْبِ بَشَرٍ، فَاقْرَءُوْا إِنْ شِئْتُمْ: فَلاَ تَعْلَمُ نَفْسٌ مَا أُخْفِىَ لَهُمْ مِنْ قُرَّةِ أَعْيُنٍ-
‘আল্লাহ তা‘আলা এর শাদ করেছেন, আমি আমার পুণ্যবান বান্দাদের জন্য এমন সব জিনিস প্রস্তুত করেছি, যা কখনও কোনো চক্ষু দেখেনি, কোনো কান কখনও শুনেনি এবং মানুষের অমত্মঃকরণ যা কখনও কল্পনাও করেনি। তিনি বলেন, (এর সত্যতা প্রমাণে) তোমরা ইচ্ছা করলে এই আয়াতটি তেলাওয়াত করতে পার فَلاَ تَعْلَمُ نَفْسٌ مَا أُخْفِىَ لَهُمْ مِنْ قُرَّةِ أَعْيُنٍ অর্থাৎ কেউই জানে না তাদের জন্য নয়ন প্রীতিকর কি লুক্কায়িত রাখা হয়েছে, তাদের কৃতকর্মের পুরস্কারস্বরূপ’।[3]
জান্নাতের ফল-ফলাদির বিবরণ ৎ জান্নাতের নিআমত ও তা লাভের উপায়
জান্নাতে আল্লাহ তা‘আলা বিভিন্ন প্রকার সুস্বাদু ফল-মূল তৈরী করে রেখেছেন জান্নাতবাসীদের জন্য। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, জান্নাতের নিআমত ও তা লাভের উপায়
وَلَكُمْ فِيْهَا مَا تَشْتَهِيْ أَنْفُسُكُمْ وَلَكُمْ فِيْهَا مَا تَدَّعُوْنَ، نُزُلاً مِّنْ غَفُوْرٍ رَحِيْمٍ-
‘সেখানে তোমাদের জন্য রয়েছে যা কিছু তোমাদের মন চায় এবং সেখানে তোমাদের জন্য রয়েছে যা তোমরা চাইবে। এটা ক্ষমাশীল ও দয়াবান আল্লাহর তরফ হতে মেহমানদারী’ ।[4]
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন, জান্নাতের নিআমত ও তা লাভের উপায়
فِيْ سِدْرٍ مَخْضُوْدٍ، وَطَلْحٍ مَنْضُوْدٍ، وَظِلٍّ مَمْدُوْدٍ، وَمَاءٍ مَسْكُوْبٍ، وَفَاكِهَةٍ كَثِيْرَةٍ، لاَ مَقْطُوْعَةٍ وَلاَ مَمْنُوْعَةٍ، وَفُرُشٍ مَرْفُوْعَةٍ-
‘তাদের জন্য রয়েছে কাঁটাহীন কুলবৃক্ষসমূহ, থরে থরে সাজানো কলা, সম্প্রসারিত ছায়া, সর্বদা প্রবহমান পানি, আর প্রচুর পরিমাণ ফল-মূল যা কোনো দিন শেষ হবে না; আর নিষিদ্ধও হবে না। আর সমুচ্চ শয্যাসমূহ’।[5]
জান্নাতের নারী সম্পর্কে বিবরণ জান্নাতের নিআমত ও তা লাভের উপায়
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
مُتَّكِئِيْنَ عَلَى سُرُرٍ مَصْفُوْفَةٍ وَزَوَّجْنَاهُمْ بِحُوْرٍ عِيْنٍ
‘তারা সামনাসামনিভাবে সাজানো সারি সারি আসনের উপর ঠেস দিয়ে বসে থাকবে এবং আমি তাদের সাথে সুনয়না হূরদেরকে বিবাহ দিব’।[6]
আল্লাহ তা‘আলা বলেন, فِيْهِنَّ خَيْرَاتٌ حِسَانٌ ‘সেই উদ্যানসমূহের মাঝে রয়েছে সচ্চরিত্রবান ও সুদর্শনগণ’।[7]
[1]. সূরা দাহর ৭৬:২০
[2]. সূরা ক্বারি‘আহ ১০১:৬-৯
[3]. বুখারী হা/৩২৪৪; মুসলিম হা/১৮৯; মিশকাত হা/৫৬১২
[4]. সূরা হা-মীম সাজদাহ ৪১/৩১-৩২
[5]. সূরা হা-মীম সাজদাহ ৪১/২৮-৩৪
[6]. সূরা তূর ৫২/২০
[7]. সূরা আর-রহমান ৫৫/৭০
প্রকাশনায় : দারুল কারার পাবলিকেশন্স
পরিবেশনায় : তাওহীদ পাবলিকেশন্স
Reviews
There are no reviews yet.