তাহকীক তাফসীর ইবনু কাসীর ৩য় খণ্ড

৳ 540

তাহকীক তাফসীর ইবনু কাসীর ৩য় খণ্ড
লেখক : ইমাম আল হাফিজ
প্রকাশনী : তাওহীদ পাবলিকেশন্স
বিষয় : তরজমা ও তাফসীর
কভার : র্হাড কভার
পৃষ্ঠা সংখ্যা : ৭৮৪

Description

তাহকীক তাফসীর ইবনু কাসীর ৩য় খণ্ড

তাহকীক তাফসীর ইবনু কাসীর ৩য় খণ্ড
লেখক : ইমাম আল হাফিজ
প্রকাশনী : তাওহীদ পাবলিকেশন্স
বিষয় : তরজমা ও তাফসীর
কভার : র্হাড কভার
পৃষ্ঠা সংখ্যা : ৭৮৪
বইটি কিনতে কিল্ক করুন: তাহকীক তাফসীর ইবনু কাসীর ৩য় খণ্ড
আরো জানতে কিল্ক করুন: তাওহীদ পাবলিকেশন্স

তাহকীক তাফসীর ইবনু কাসীর ৩য় খণ্ড কালজয়ী মুহাদ্দিস মুফাসসির যুগশ্রেষ্ঠ মনিষী আল্লামা হাফিয ইবনু কাসীরের একনিষ্ঠ নিরলস সাধনা ও অক্লান্ত পরিশ্রমের অমৃত ফল। তাফসির জগতে এ যে বহুল পঠিত সর্ববাদী সম্মত নির্ভরযোগ্য এক অনন্য সংযোজন ও অবিস্মরনীয় কীর্তি এতে সন্দেহ সংশয়ের কোন অবকাশ মাত্র নেই। এর অনবদ্ধতা ও শ্রেষ্ঠত্বকে সকল যুগের বিদগ্ধ মনীষীরা অকপটে ও একবাক্যে স্বীকার করে নিয়েছেন। তাই  পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি মুসলিম অধ্যুষিত দেশে, সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে এমনকি ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষায়তনের গ্রন্থাগারেও সর্বত্রই এটি বহুল পঠিত, সুপরিচিত,সমাদৃত এবং হাদীস –সুন্নাহর আলোকে এক স্বতন্ত্র মর্জাদার অধিকারী। আর এই বইটি মূলত ইবনু কাসিরের আম্মা পারার  অর্থাৎ ৩০ তম পারার সংকলন। আর বাংলা ভাষাভাষী পাঠকদের জন্য বইটি প্রকাশ করেছে তাওহীদ পাবলিকেশন্স।

তাহকীক তাফসীর ইবনু কাসীর ৩য় খণ্ড

(সূরাহ আলু ইমরান ও সূরাহ আন-নিসা)

ইমাম আল-হাফিয আল্লামাহ ইমামুদ্দিন আবুল ফিদা ইসমাঈল বিন উমার বিন

কাজীর আল কারনী আল-বায়রী

তাওহীদ পাবলিকেশন্স অনুবাদ ও গবেষণা বিভাগ কর্তৃক

অনূদিত ও সম্পাদিত

প্রকাশনায়

তাওহীদ পাবলিকেশন্স

ঢাকা-বাংলাদেশ

আলেমগণের মন্তব্যসমূহ:

ইবনু হাজার (রঃ) বলেন: “৭০৭ হিজরীতে তার পিতার মৃত্যুর পর সাত বছর বয়সে তিনি ভাইয়ের সঙ্গে দামেশকে আসেন। সেখানে “তানবীহ” মুখস্থ করেন এবং আঠারো বছর বয়সে তা উপস্থাপন করেন। তিনি “মুখতাসার ইবনুল হাজিব” মুখস্থ করেন। অতঃপর তিনি (শায়খ) বুরহানুদ্দীন আল-ফাযারী ও কামাল ইনে কাদী শহবার নিকট ইলমুল ফিক্হ শিক্ষালাভ করেন। অতঃপর (শায়খ) মিযীর কন্যাকে বিয়ে করেন। তিনি ইবনু তায়মিয়্যাহ-এর সাহচর্য লাভ করেন এবং (শায়খ) আসবাহানীর নিকট ইলমুল উসূল শিক্ষালাভ করেন। শৈশবেই ইবনু কাসীর [রঃ] “আহকামুত তানবীহ” নামক কিতাব সংকলন করেন। বলা হয়, শায়খ বুরহান তা দেখে বিস্মিত হয়ে প্রশংসা করেন …। তিনি অসাধারণ মেধাশক্তির অধিকারী, কম ভুলতেন এবং উত্তম বোধশক্তির অধিকারী ছিলেন।’ তিনি আরবী ভাষায় দক্ষতা অর্জন করেন এবং এ ভাষায় কবিতা রচনা করেন। হাফিয ইবনু হুজ্জী বলেন: আমি যখনই তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করছি তার থেকে উপকৃত হয়েছি আর আমি তার সান্নিধ্যে ছয় বছর থেকেছি। যাহাবী তার মু’জামুল মুখতাস গ্রন্থে বলেছেন: ‘ইবনু কাসীর হলেন ইমাম মুহাদ্দিস ও দক্ষ মুফতী।’ একদল বিদ্বান যেমন-হুসায়নী, আমাদের শিক্ষক ইরাকী প্রমুখ বলেছেন-তিনি হাদীসের হাফিয এবং তীক্ষ্ণ মেধাসম্পন্ন ছিলেন। তিনি হাজ্জার, কাসিম বিন আসাকির ও অন্যান্যদের নিকট হতে হাদীস শুনেন। তিনি হাফিয আল-মিযী-এর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন ও তার কন্যাকে বিবাহ করেন। হাফিয আল-মিযীর অধিকাংশ রচনাবলী তার নিকট থেকেই শুনেন। শায়খ তাকীউদ্দীন ইবনু তায়মিয়্যাহ-এর নিকট থেকে তিনি বিপুল জ্ঞানার্জন করেন। ইবনু কাসীর তাফসীর, ইতিহাস ও বিধি-বিধান প্রসঙ্গে অনেক গ্রন্থ রচনা করেন।”১১ ইবনু হাবীব বলেন: তিনি আল্লাহভীরুদের ইমাম এবং মুফাসসিরদের নেতা ছিলেন। তিনি জ্ঞানের কথা শ্রবণ, তা একত্রিকরণ এবং সেসবের সমন্বয়ে গ্রন্থ সংকলন করেন। গুছিয়ে কথা বলার জন্য শ্রোতারা তার কথায় উচ্ছ্বসিত হতেন। তিনি হাদীস বর্ণনা এবং জ্ঞান বিতরণ করতেন। তার ফাতওয়া দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়ে আর সবাই তা সযত্নে সংরক্ষণ করেন।

ইবনুল ইমাদ [রঃ] বলেন: “প্রখর মেধার অধিকারী ছিলেন, বিস্মৃতি কম এবং উপলব্ধি ছিল অনন্য। তিনি “তানবীহ” মুখস্থ করে আঠারো বছর বয়সে উপস্থাপন করেন। অতঃপর তিনি “মুখতাসার ইবনুল হাজিব” মুখস্থ করেন। তারপর হাদীসের দিকে অগ্রসর হন এবং হাদীস্ত্রের মতন ও রাবীদের নিয়ে গবেষণায় ব্যস্ত’ থাকেন।

তিনি ইমাম মালিক-এর মুআত্তা, ইমাম বুখারী-এর জামিউস সহীহ, ইমাম মুসলিম-এর জামিউস সহীহ, সুনানে দারাকুতনী, বায়হাকী-এর সুনানুল কুবরার কিছু অংশ এবং মুসনাদ শাফেঈ ও অন্যান্য হাদীসের গ্রন্থগুলো শুনেন। এতকিছু তিনি যৌবনকালেই করেন।” ১২

ইমাম যাহাবী বলেন: “ফকীহ, মুফতী ও দক্ষ মুহাদ্দিস-ইমাদুদ্দীন ইসমাঈল বিন উমার ইবনু কাসীর আল- বাসরাবী আশ-শাফিঈ ৭০০ হিজরীর পরে অথবা ৭০০ হিজরীতে জন্মগ্রহণ করেন। ইবনু শিহনাহ, ইবনু যারাদ ও একদল (আলিম) থেকে জ্ঞানার্জন করেন। রিজালশাস্ত্র, ফিকহ এবং (হাদীসের) মতনে তার পাণ্ডিত্য ছিল। (ইলম অর্জনের জন্য) সফর করেন, গ্রন্থ প্রণয়ন ও মুনাযারা করেন, তাফসীর সংকলন করেন আর এসবে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।”১৩

ইমাম যাহাবী আরো বলেন: “তিনি হলেন ফাকীহ এবং দক্ষ মুহাদ্দিস। ফিকহ্ শিক্ষা দেন এবং ফাতওয়া প্রদান করেন। আরবী ভাষা ও ইল্মে উসূলে পাণ্ডিত্য অর্জন করেন। হাদীস্রের মাতান, রিজাল শাস্ত্র ও তাদের অবস্থার জ্ঞান আয়ত্ত

ইবনু তাগরী বলেন: “হাফিয, মুফাস্সির ও ইতিহাসবেত্তা-যিনি ইবনু কাসীর নামে পরিচিত।… তিনি পরিশ্রমের মাধ্যমে জ্ঞানার্জন করেন এবং অনেক কিতাব লিপিবদ্ধ করেন। তিনি ফিক্হ, তাফসীর ও হাদীয়ে দক্ষতা অর্জন করেন।… তিনি (কুরআন-হাদীসের জ্ঞান) সংগ্রহ ও গ্রন্থ প্রণয়ন করেন; পাঠদান, বর্ণনা এবং সংকলন করেন। হাদীস, তাফসীর, ফিকহ, আরবী ভাষা ও অন্যান্য বিষয়ে তিনি পারদর্শিতা লাভ করেন। ১৫

সূয়ুতী [রঃ] বলেন: “ইমাম, মুহাদ্দিস, বিশিষ্ট হাফি… তার এমন তাফসীর গ্রন্থ রয়েছে, যার অনুরূপ অন্য কেউ রচনা করেননি। তিনি হাদীস্নশাস্ত্রের অনুষদ। সহীহ হাদীস, দুর্বল ও ত্রুটিযুক্ত হাদীস্ব, হাদীস্নের স্তরের ভিন্নতা ও রাবীদের ভালো-মন্দ সম্পর্কে জানতেন।”১৬

শিক্ষকগণ: ইবনু কাসীর [রঃ] অনেক আলেমদের থেকে জ্ঞানার্জন করেন। তাদের মধ্যে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করা হলো: ঈসা মুতইম, আহমাদ বিন শায়খাহ, কাসিম বিন আসাকির, ইবনু শীরাযী, ইসহাক আল- আমিদী, মুহাম্মাদ বিন যারাদ। মিসরের মধ্যে আবুল ফাতাহ দাব্বুসী, আলী বিন উমার ওয়ানী, য়ূসুফ আল- খানাতী ও অন্যান্য আলেমগণ তাকে শিক্ষাদানের অনুমতি) দিয়েছেন।

তিনি হাফিয জামালুদ্দীন মিযযী হতে সর্বাধিক শিক্ষালাভ করেন ও উপকৃত হন। পরবর্তীতে তাঁরই কন্যার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ইবনু তায়মিয়া । -এর সান্নিধ্যেও দীর্ঘদিন অধ্যয়নরত ছিলেন। এ ছাড়া অন্যান্যদের থেকে জ্ঞানার্জন করেন। ১৭

রচনাবলী: ইবনু কাসীর [রঃ] অনেক অমূল্য গ্রন্থরাজি রচনার মাধ্যমে দীনী খেদমতে অবদান রাখেন। তার প্রণীত যে-সব গ্রন্থের দ্বারা মানুষ উপকার লাভ করে তার কয়েকটি নিম্নে উল্লেখ করা হলো:

১. তাফসীরুল কুরআনিল আযীম। এটিই ‘তাফসীর ইবনু কাসীর’ নামে খ্যাত।

২. তাবাকাতুল ফুকাহা’

৩. মানাকীবুশ শাফিঈ

৪. আল-বিদায়াহ ওয়ান-নিহায়াহ

৫. ইখতিসারু উলূমিল হাদীস্ব

৬. আত-তাকমিল ফী মা’রিফাতিস্ত্র স্নিকাতি ওয়াদ দুআফা’ ওয়াল মাজাহীল।

৭. মুখতাসার ইবনুল হাজিব-এর হাদীস্রের তাখরীজ

৮. আল-আহকামুল কাবীর

৯. মুসনাদ ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল-এতে বর্ণমালার ক্রমানুসারে আহমাদ বিন হাম্বালের মুসনাদকে বিন্যস্ত করা হয়েছে। পরন্তু ইমাম তাবারানীর মাজমা’, আবূ ইয়া’লার মুসনাদ এবং অন্যান্য হাদীস সংযোজিত হয়েছে। ১৮

মৃত্যু: ৭৭৪ হিজরীর শা’বান মাসে মৃত্যুবরণ করেন।১৯ বৃদ্ধ বয়সে তিনি দৃষ্টিশক্তি হারান।২০ অতঃপর দামেশকে সুবহানার-এর কবরের পার্শ্বে তাকে সমাহিত করা হয়।২১ সূফিয়াহদের কবরস্থানে শায়খ ইবনু তায়মিয়াহ |

১৫ মানহালুস সাফী ওয়াল-মুসতাওফা বা’দাল ওয়াফী: ২/৪১৪-৪১৫

১৭ মানহালুস সাফী ওয়াল-মুসতাওফা বা’দাল ওয়াফী: ২/৪১৫, দুরারুল কামিনাতু ফী আ’ইয়ানিল মিআতী সামিনাহ: ১/৪৪৫

১৬ তাবাকাতুল হুফফাৰ্য লিস-সুয়ূতী পৃ. ৫৩৪

১৮ মানহালুস সাফী ওয়াল-মুসতাওফা বা’দাল ওয়াফী: ২/৪১৫, দুরারুল কামিনাতু ফী আ’ইয়ানিল মিআতী সামিনাহ: ১/৪৪৫, তাবাকাতুল হুফফাথ লিস-সুয়ূতী পৃ. ৫৩৪, আল-আ’লাম লিয-যিকালী: ১/৩২০-৩২১

১৯ শাযারাতু যাহাব ফী আখবারি মান যাহাব: ১/৬৮, দুরারুল কামিনাতু ফী আ’ইয়ানী মিআতী স্বামিনাহ: ১/৪৪৬, তাবাকাতুল হুফফার্য লিস-সুয়ূতী পৃ. ৫৩৪

২০ দুরারুল কামিনাতু ফী আ’ইয়ানিল মিআতী সামিনাহ: ১/৪৪৬

২১ দুরারুল কামিনাতু ফী আ’ইয়ানিল মিআতী সামিনাহ: ১/৪৪৬

তাফসীর ইবনু কাসীর পরিচিতি

১. সংক্ষিপ্তধারায় সহজবোধ্য ও সাবলীল ভাষায় বর্ণিত একটি অনন্য তাফসীর।

২. অধিকাংশ হাদীক্ষ্ম সনদ সহকারে বর্ণনা ক’রে তার হুকুম উল্লেখ করেছেন। দঈফ হলে তার কারণ বর্ণনা করেছেন। আর কতিপয় বর্ণনার ক্ষেত্রে চুপ থেকেছেন, কোনো হুকুম উল্লেখ করেননি।

৩. কুরআন দ্বারা কুরআন-এর তাফসীর এমনভাবে করা হয়েছে, যাতে উদ্দেশ্য সু ̄পষ্ট হয়েছে। কখনো কখনো সাদৃশ্যপূর্ণ আয়াত, কিরাআত ও শানে-নুযূল উল্লেখ করা হয়েছে।

৪. সিফাত-এর আয়াতগুলোর ক্ষেত্রে তিনি অনেক তাফসীরকারের বিরোধিতা করে সত্য ও সঠিক পথে চলেছেন।

৫. যেসব জায়গায় তিনি কুরআন দ্বারা তাফসীর করতে অসমর্থ হয়েছেন, সেখানে সুন্নাহ্ দ্বারা তাফসীর করেছেন। অতঃপর তিনি সাহাবী, তাবিঈ ও তাবে-তাবিঈদের বক্তব্য উল্লেখ করেছেন। এমনকি তিনি ইমাম তাবারী-এর বক্তব্যও এনেছেন।

ইবনু কাসীর [রঃ] নিজেই তার তাফসীর করার পদ্ধতি সম্পর্কে বলেছেন: “তাফসীর-এর ক্ষেত্রে উত্তম পন্থা হলো, কুরআন দ্বারা কুরআনের তাফসীর করা। আমার কোনো জায়গায় সংক্ষেপে আলোচনা থাকলে অন্য জায়গায় বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। তুমি কুরআন দ্বারা কুরআনের তাফসীর উদ্ধারে সক্ষম না হলে-তোমার উচিত হলো সুন্নাহর দ্বারা তাফসীর করা। কেননা তা হলো কুরআনের ব্যাখ্যাকারী ও স্পষ্টকারী। যখন কুরআন ও হাদীস্ত্র দ্বারা তাফসীর করতে আমরা অপারগ হয়েছি, তখন সাহাবীদের বক্তব্যের দিকে ফিরে গিয়েছি। কেননা তারা তাফসীর সম্পর্কে সর্বাধিক জ্ঞান রাখেন, তারা সে সময় ও অবস্থার সাক্ষী, আর এ জন্যই তাদেরকে নির্দিষ্ট করা হয়েছে। এজন্য তাদের সে বিষয়ে পরিপূর্ণ বুঝ, সহীহ জ্ঞান ও সঠিক আমল রয়েছে, বিশেষ করে তাদের আলিম ও অগ্রজদের মতো-যেমন চার খলীফা, হিদায়াতপ্রাপ্ত ইমামগণ ও আবদুল্লাহ বিন মাসউদ।” ২২

ইসরাঈলী বর্ণনা প্রসঙ্গ:

ইবনু কাসীর [রঃ] বলেন, ইসরাঈলী বর্ণনাগুলো আমরা সাক্ষ্যস্বরূপ এনেছি, সমর্থনস্বরূপ নয়। আর তার হুকুম তিনভাগে বিভক্ত।

প্রথম: যেসব বর্ণনার বিশুদ্ধতা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় দলীল-প্রমাণ বিদ্যামান, কেবল সেসব বর্ণনা গ্রহণ করেছি।

দ্বিতীয়: আর যেসব বর্ণনার বিশুদ্ধতা সম্পর্কে যথাযথ প্রমাণ পাওয়া যায়নি, তা পরিত্যাগ করেছি।

তৃতীয়: আর যেসব বর্ণনাকে শুদ্ধ-অশুদ্ধতার কোনো শ্রেণীতে বিভক্ত করা যায়নি, সেগুলো সম্পর্কে নামসমূহ, তাদের কুকুরের রং, তাদের সংখ্যা, মূসা (আঃ) ইবরাহীম (আঃ)-এর জন্য আল্লাহ তাআলা যে পাখিগুলো -এর লাঠি কোন্ গাছের ছিল, জীবিত করেন তাদের নাম, গরুর ঐ অংশকে নির্দিষ্ট করা যে অংশ দ্বারা নিহত ব্যক্তিকে আঘাত করা হয়েছিল, ঐ গাছের শ্রেণী নির্দিষ্ট করা যেখান থেকে মূসা ( আল্লাহর সঙ্গে কথা বলেছেন, ইত্যাদি বিষয়াবলী যেগুলোকে আল্লাহ তাআলা কুরআনে অ পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন। যেগুলো নির্দিষ্টকরণে মুসলিমদের দীনী ও দুনিয়াবী কোনো উপকার নেই, তবে এ বিষয়ে তাফসীরকারদের বিরোধ বর্ণনা করা জায়েয।২৩

ইবনু কাসীর আরো বলেছেন, যেসকল জায়গায় কুরআন, হাদীস ও সাহাবীদের বক্তব্য দ্বারা তাফসীর করা সম্ভব হবে না, সেসকল জায়গায় তাবিঈদের বক্তব্যের দিকে ফিরে যেতে হবে, বিশেষ করে তাদের বড়ো তাবেঈদের দিকে।

ইবনু কাসীর [রঃ] বলেন: যখন কুরআন, হাদীস ও সাহাবীদের বক্তব্য দ্বারা তাফসীর করা সম্ভব হবে না, তখন অধিকাংশ ইমামগণ তাবিঈদের বক্তব্যের দিকে ফিরে গিয়েছেন। যেমন মুজাহিদ, তিনি তাফসীরশাস্ত্রের এক সুউচ্চ স্তম্ভ। এজন্য সুফইয়ান সাওরী বলেছেন: যদি মুজাহিদ থেকে তোমার নিকট কোনো তাফসীর আসে, তা হলে তা তোমার জন্য যথেষ্ট।

যেমন সাঈদ বিন জুবায়র, ইকরিমাহ, আতা বিন আবূ রাবাহ, হাসান বাসরী, মাসরূক ইবনু আজদা, সাঈদ বিন মুসায়্যাব, আবুল আলিইয়াহ, রাবী বিন আনাস, কাতাদাহ, দইহাক বিন মুযাহিম, এ ছাড়া অন্যান্য তাবিঈ, তাবে-তাবিঈ ও পরবর্তীগণ।

আমরা দেখি যে, আয়াতের তাফসীরে তাদের শাব্দিক ভিন্নতা ও মতানৈক্য রয়েছে। এ ব্যাপারে যাদের জ্ঞান নেই, তারা ভাবে তাদের মধ্যে তাফসীর নিয়ে মতানৈক্য রয়েছে। ফলে তারা তাফসীরে একাধিক মত উল্লেখ করে। তাদের এ ধারণা ঠিক নয়। কেউ তাফসীর করে তার মতানুযায়ী, আবার কেউ মূল নস দ্বারা তাফসীর করে। অধিকাংশ স্থানে উভয়ের তাফসীর একই অর্থ বহন করে। বিচক্ষণ ব্যক্তি যেন এক্ষেত্রে সচেতন থাকে। আল্লাহ হেদায়াতদাতা। ২৪

তারপর ইবনু কাসীর বলেন: শাখাগত মাসআলার ক্ষেত্রে তাবিঈদের বক্তব্য দলিল কি না? এই প্রসঙ্গে শু‘বাহ বিন হাজ্জাজ ও অন্যান্যদের বক্তব্য হলো: শাখা মাসআলার ক্ষেত্রে তাবিঈদের বক্তব্য দলিল নয়। সুতরাং তাফসীরের ক্ষেত্রে কিভাবে সেটা দলিল হতে পারে? আর এটাই সঠিক মত। যখন তারা কোনো বিষয়ে একমত হবেন, তখন এটা দলিল হওয়ার ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।

আর যদি তারা মতানৈক্য করে তা হলে তাদের একজনের উপর অপরজনের কথা দলিল হবে না এবং তাদের পরবর্তীদের উপরও দলিল হবে না। সেক্ষেত্রে কুরআন, সুন্নাহ, সাধারণ আরবী ভাষা ও সাহাবীদের বক্তব্য থেকে সমাধান নিতে হবে।

প্রকাশকের কথা

আলহামদু লিল্লাহ। সূরাহ বাকারাহর তাফসীর পাঠকবৃন্দের করকমলে তুলে দিয়ে পেরে মহান আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া আদায় করছি। দীর্ঘ সময় ধরে চলা গবেষণার পর ইবনু কাসীর রচিত “তাফসীরুল কুরআনিল আযীম”-এর তাহকীক, তাখরীজ ও রিজালশাস্ত্র নিয়ে কাজ করে তা ‘তাহকীক তাফসীর ইবনু কাসীর’ নামে প্রকাশিত হচ্ছে। দীর্ঘ এ গবেষণায় অনেক বিদ্বান তাদের সুপরামর্শ ও মেধা দিয়ে আমাদেরকে সহযোগিতা করেছেন। তাদের জন্য মহান আল্লাহর নিকট উত্তম জাযা কামনা করছি। বিশেষ করে স্মরণ করছি প্রধান অনুবাদক শাইখ আসাদুল্লাহ মাদানীর কথা। তিনি মাদীনাহ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা সমাপ্ত করে দেশে ফিরে দীর্ঘদিন যাবত অনুবাদকর্মে শ্রম দিয়েছেন। তৎসঙ্গে সুউদী দূতাবাস কর্মকর্তা ড. আবদুল্লাহ ফারূক সালাফী, শাইখ আকমাল হুসাইন বিন বাদীউযযামান মাদানী, অধ্যাপক মোহাম্মাদ মোজাম্মেল হক, শাইখ মুহাম্মাদ আলী গোদাগাড়ী, শাইখ আল-আমীন বিন য়ূসুফ, শিহাবুদ্দীন, আব্দুর রহমান [হাফিযাহুমুল্লাহ]-সহ যারা এ গ্রন্থটিকে এ পর্যায়ে রূপদানের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখেছেন তাদের সকলকে আল্লাহ উত্তম প্রতিদান দান করুন। আর এ কাজের জন্য সর্বপ্রথম যিনি উৎসাহিত করেছেন, সেই মুহাতারামাহ সালমা আপার জন্যও অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে দুআ’ রইল। জাযাহুমুল্লাহু আহসানাল জাযা।

আমরা ভুলত্রুটির ঊর্ধ্বে নই। অনিচ্ছাকৃত ভুলত্রুটির জন্য ক্ষমাপ্রার্থী। সুহৃদ পাঠক আমাদের ত্রুটি- বিচ্যুতিগুলো চিহ্নিত করে সুপরামর্শ দিলে আমরা সেটিকে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্বাগত জানাবো, ইনশাআল্লাহ।

বিনীত

প্রকাশক

 

ইমাম ইবনু কাসীর (রঃ) -এর জীবনী

নাম, বংশ ও জন্মস্থান:

তাঁর মূল নাম ইসমাঈল বিন উমার বিন কাস্ত্রীর বিন দও বিন কাসীর বিন দারআ। আর উপনাম-উপাধিসমেত: শায়খ ইমাম আল্লামাহ ইমাদুদ্দীন আবুল ফিদা’ ইবনুশ শায়খ শিহাবুদ্দীন আবূ হাফস আল-কুরাশী আল- বাসরাবী আদ্-দিমাশকী আশ-শাফিঈ। তিনি ইবনু কাসীর নামে প্রখ্যাত।

ঐতিহাসিকদের ঐকমত্যে ৭০০ হিজরী (১৩০০ খ্রিস্টাব্দে) দামেশক প্রদেশের পূর্ব-বাসরায় ইবনু কাসীর [রঃ] জন্মগ্রহণ করেন। চার বছর বয়সে তার পিতা মারা যান। ইবনুল ইমাদ বলেন, সাত বছর বয়সে তার বাবা মারা যান। ইবনু হাজার [সাধার] বলেন, ৭০৩ হিজরীতে তার পিতা মৃত্যুবরণ করেন, অতঃপর তিনি দামেশকে বড়ো হতে থাকেন। বলা হয়, ইবনু কাসীর [রঃ] শাম (বৃহত্তর সিরিয়া)-এর হাওরান অঞ্চলের বুসরা শহরের মাজদাল নামক ছোট্ট গ্রামে ৭০০ হিজরীতে জন্মগ্রহণ করেন, ঐ সময় তার পিতা সেখানকার খাতীব ছিলেন। যিকালী বলেন: ‘ইবনু কাসীর শামের বাসরা প্রদেশের একটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ৭০৬ হিজরীতে তার ভাইয়ের সঙ্গে জ্ঞানার্জনের জন্য দামেশকে গমন করেন এবং সেখানেই মারা যান। জীবদ্দশাতেই তার রচনাবলী লোকেরা সংগ্রহ করতে থাকে। ৭

প্রতিপালন, আয়ুষ্কাল ও শিক্ষালাভ:

ইবনু কাসীর [রঃ] ধার্মিক পরিবারে লালিতপালিত হন। তার পিতা খাতীব ছিলেন, যা পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়টি তার প্রতিভাবান হওয়ার অন্যতম কারণ। পিতার মৃত্যুর পর তিনি ইয়াতীম অবস্থায় বড়ো হন, তখন তার বয়স ছিল চার বছর অথবা বলা হয় সাত বছর, যা ইতঃপূর্বে আলোচনা করা হয়েছে। অতঃপর তার পরিবার দামেশকে স্থানান্তারিত হয়। মাদ্রাসাহ আন-নূরীয়্যাহ হতে জ্ঞানার্জনের জন্য তিনি তার পার্শ্বে অবস্থান করেন। বড়ো ভাই শায়খ আবদুল ওয়াহ্হাব তার প্রতিপালনের দায়িত্ব নেন এবং শুরুতে তার কাছেই তিনি ফিকহ শিখেন।

ইবনু কাসীর [রঃ] নিজেই বলেন: “আমার পিতা ৭০৩ হিজরীর জুমাদাল ঊলা মাসে মুজায়দাল নামক গ্রামে মারা যান। যায়তূনাহ-এর নিকটবর্তী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। তখন আমার বয়স প্রায় তিন বছর, শিশুবোধ ব্যতীত কিছুই জানতাম না। অতঃপর ৭০৭ হিজরীতে আমার ভাই কামালুদ্দীন আবদুল ওয়াহাব-এর সঙ্গে দামেশকে গমন করি। তিনি আমার সহোদর এবং আমার প্রতি নরম ও স্নেহশীল ছিলেন। তিনি ৭৫০ হিজরীতে মৃত্যুবরণ করেন। শেষ পর্যন্ত তার নিকট জ্ঞানার্জনে মগ্ন ছিলাম। অতঃপর আল্লাহ তাআলা যা সহজ করার তা তার দ্বারা সহজ করেছেন। আর যা দুঃসাধ্য ছিল, তা তার মাধ্যমে সুসাধ্য করেছেন। আল্লাহই ভাল জানেন।” ১০

১ শাযারাতু যাহাব ফী আখবারি মান যাহাব: ১/৬৭, মানহালুস সাফী ওয়াল-মুসতাওফা বা’দাল ওয়াফী: ২/৪১৪, দুরারুল কামিনাতু ফী আ’ইয়ানীল মিআতী স্বামিনাহ: ১/৪৪৫, তাবাকাতুল হুফফাথ লিস-সুয়ূতী পৃ. ৫৩৪, আল-আ’লাম লিয-যিকালী: ১/৩২০

২ শাযারাতু যাহাব ফী আখবারি মান যাহাব: ১/৬৭, মানহালুস সাফী ওয়াল-মুসতাওফা বা’দাল ওয়াফী: ২/৪১৪, দুরারুল কামিনাতু ফী আ’ইয়ানিল মিআতী স্বামিনাহ: ১/৪৪৫, তাবাকাতুল হুফফা্য লিস-সুয়ূতী পৃ. ৫৩৪, আল-আ’লাম লিয-যিকালী: ১/৩২০

৩ মানহালুস সাফী ওয়াল-মুসতাওফা বা’দাল ওয়াফী: ২/৪১৫

৪ শাযারাতু যাহাব ফী আখবারি মান যাহাব: ১/৬৮

৫ দুরারুল কামিনাতু ফী আ’ইয়ানিল মিআতী সামিনাহ: ১/৪৪৫

৬ শাযারাতু যাহাব ফী আখবারি মান যাহাব: ১/৬৭, মানহালুস সাফী ওয়াল-মুসতাওফা বা’দাল ওয়াফী: ২/৪১৪

৭ আল-আ’লাম লিয-যিকালী: ১/৩২০

৮ শাযারাতু যাহাব ফী আখবারি মান যাহাব: ১/৬৮

* মানহালুস সাফী ওয়াল-মুসতাওফা বা’দাল ওয়াফী: ২/৪১৫ মানহালুস সাফী ওয়াল-মুসতাওফা বা’দাল ওয়াফী: ২/৪১৫

১০ আল-বিদায়াহ ওয়ান-নিহায়াহ: ১৮/৪২

তাহকীক তাফসীর ইবনু কাসীর-এর বৈশিষ্ট্যসমূহ

১. কোনো রূপ সংক্ষেপণ ব্যতীত মূল আরাবী তাফসীরের পূর্ণাঙ্গ সরল বঙ্গানুবাদ।

২. ইবনু কাসীর [রঃ] তাফসীর করতে যেসব হাদীস এনেছেন, তন্মধ্যে কেবল মারফূ’ হাদীসসমূহ ক্রমানুসারে বিন্যস্ত করে হাদীস নম্বর দেওয়া হয়েছে। দারুল কিতাব আল-আরাবী-বৈরূত-লেবানন কর্তৃক প্রকাশিত তাফসীর ইবনু কাসীরের প্রদত্ত হাদীস্ব নম্বর অনুসরণ করা হয়েছে। মোট হাদীস সংখ্যা ৭৬২৯।

৩. সহজে শনাক্তকরণের জন্য কুরআনের আয়াত ও হাদীসের আরবী ইবারাতের ভিন্ন ভিন্ন ফন্টব্যবহার করা হয়েছে।

৪ . গবেষণার সুবিধার্থে হারাকাত-সহ হাদীস্বের আরবী ইবারাত দেওয়া হয়েছে।

৫. কোন আয়াতের তাফসীর চলমান, তা অনুধাবনের জন্য ঐ আয়াতের অনুবাদ বোল্ড (মোটা) করা হয়েছে।

৬. হাদীসের শুরুতেই তাহকীক (সহীহ, দঈফ, হাসান, মাওদূ’ ইত্যাদি) দেওয়া হয়েছে। হাদীসু-সহীহ বা দঈফ হওয়ার কারণ টীকায় আলোচনা করা হয়েছে।

৭. হাদীসের সকল রাবীর নাম এবং তাদের উপর কোনো জার থাকলে, তা অনুবাদে উল্লেখ করা হয়েছে। হাদীসের সানাদ সহজে বুঝার জন্য বিশেষ চিহ্ন ব্যবহার করা হয়েছে।

৮. ইসরাঈলী বর্ণনাসমূহ থেকে সতর্ক করা হয়েছে। বিশেষত যেসব বর্ণনা মুনকার। ৯. হাদীস গ্রন্থসমূহের তাখরীজের ক্ষেত্রে আল-মু’জামুল মুফাহরিস লি-আলফাযিল আহাদীস্ব-এর ক্রমধারা অনুযায়ী, বুখারীর নাম্বার ফাতহুল বারীতে ব্যবহৃত নাম্বারের সঙ্গে, মুসলিম ও ইবনু মাজাহর নাম্বার ফুয়াদ আবদুল বাকী কর্তৃক ব্যবহৃত নাম্বারের সঙ্গে, তিরমিযীর নাম্বার আহমাদ শাকির ব্যবহৃত নাম্বারের সঙ্গে, আবূ দাউদের নাম্বার ইমাম মুহিউদ্দীন ব্যবহৃত নাম্বারের সঙ্গে, নাসায়ীর নাম্বার আবূ গুদ্দাহ ব্যবহৃত নাম্বারের সঙ্গে, আহমাদের নাম্বার ইহইয়াউত তুরাস্ত্র আল- ইসলামী ব্যবহৃত নাম্বারের সঙ্গে এবং মুয়াত্তা মালিক-এর ক্ষেত্রে তার নিজস্ব নাম্বার উদ্ধৃতিস্বরূপ পেশ করা হয়েছে।

১০. কাঙ্ক্ষিত বিষয় অধ্যয়নের নিমিত্তে আলোচ্য বিষয়ের আলোকে তাফসীরের পূর্বে শিরোনাম দেওয়া হয়েছে।

১১. আরবী শব্দগুলোর সঠিক উচ্চারণের জন্য বিশেষ চিহ্ন ব্যবহার করে লিপ্যন্তর করা হয়েছে।

১২. ইমাম ইবনু কাসীর [রঃ]-এর জীবনী ও তাফসীর ইবনু কাসীর গ্রন্থের পরিচিতি, ইলমে হাদীস ও রাবীদের স্তর পরিচিতি সংযোজিত হয়েছে।

 

হাদীস ও ইলমে হাদীস

হাদীসের সংজ্ঞা ও পরিচয়:

হাদীস আরবী শব্দ।২৬ এর আভিধানিক অর্থ নতুন, কথা ও খবর। এটি কাদীম (পুরাতন)-এর বিপরীত অর্থবোধক শব্দ। আল্লাহ তাআলা কুরআন মাজীদের অনেক স্থানে কুরআনকে হাদীস বলেছেন।২৭ (আনোয়ার) বলেছেন: আল্লাহর কিতাবই হলো উত্তম হাদীসু।২৮ (আলায়ার -এর যাবতীয় কথা, কাজ, অনুমোদন, সমর্থন এবং তাঁর রোমানোর ] বলেন: ‘যা কিছু রাসূল (সা)-এর

মুহাদ্দিস্নগণের পরিভাষায়: রাসূলুল্লাহ অবস্থার বিবরণকে হাদীস বলে। আল্লামা জা’ফর আহমদ উসমানী নামে বর্ণিত আছে, তার সমুদয়কে হাদীস্ব বলা হয়। ২৯

ডক্টর মাহমুদ তাহান বলেন: ‘রাসূলের নামে বর্ণিত কথা, কাজ অনুমোদন ও গুণ-বৈশিষ্ট্যকে হাদীস বলা হয়। ৩০

আল্লামাহ তীবি, ইবনু হাজার আসকালানী, নবাব সিদ্দীক হাসান খান ও ইমাম সাখাবী প্রমুখ বলেন: “হাদীসের অর্থ ব্যাপক। রাসূলুল্লাহর কথা, কাজ ও অনুমোদনকে যেমন হাদীস বলা হয়, তেমনি সাহাবী, তাবেঈ ও তবে তাবে’ তাবেঈদের কথা কাজ এবং অনুমোদনকেও হাদীস বলা হয়। ৩১

উল্লেখ্য, উপর্যুক্ত বিবরণে নবী কারীম (সোনাদার), সাহাবায়ে কেরাম, তাবেঈ ও তাবে তাবেঈদের-কথা, কাজ ও সমর্থন যদিও সাধারণত হাদীস নামে অভিহিত তথাপি শরীয়তী মর্যাদার দৃষ্টিতে এসবের মধ্যে অবশ্যই পার্থক্য আছে। তাই হাদীস শাস্ত্রে প্রত্যেকটির জন্য স্বতন্ত্র পরিভাষা নির্ধারণ করা হয়েছে। যথা: নবী কারীম (আনোয়ার)-এর কথা, কাজ ও সমর্থনকে বলা হয় হাদীস্ব। সাহাবীদের কথা, কাজ ও সমর্থনকে বলা হয় আস্থার এবং তাবেঈ ও তাবে তাবেঈগণের কথা, কাজ ও সমর্থনকে বলা হয় ফাতাওয়া।

এছাড়া তিন প্রকার হাদীসের আরো তিনটি পারিভাষিক নাম রয়েছে। যথা: নবী কারীম আলায়ার -এর কথা, কাজ ও সমর্থন সংক্রান্ত বিবরণকে বলা হয় মারফূ’। সাহাবীদের কথা, কাজ ও সমর্থনের বিবরণকে বলা হয় মাওকূফ এবং তাবেঈগণের কথা, কাজ ও সমর্থনের বিবরণকে বলা হয় মাকতূ— ৩২

হাদীসের অপর নাম সুন্নাহ। সুন্নাহ শব্দের অর্থ চলার পথ, পদ্ধতি ও কর্মনীতি। ইমাম রাগিব ইস্পাহানী বলেন: সুন্নাতুন্নবী বলতে সে পথ ও রীতি-পদ্ধতিকে বুঝায়, যা নবী কারীম (সাঃ) বাছাই করে নিতেন এবং অবলম্বন করতেন।৩৩ মুহাদ্দিসগণ হাদীয় ও সুন্নাহকে একই অর্থে ব্যবহার করেছেন।৩৪

শায়খ ডক্টর মুস্তাফা সাবায়ী বলেন: আরবী অভিধানে সুন্নাহ অর্থ কর্মপন্থা, কর্মপদ্ধতি-তা ভালো বা মন্দ যা হোক। সহীহ মুসলিমের হাদীস দ্বারাও তা বুঝা যায়। পক্ষান্তরে পরিভাষায় ‘সুন্নাহ’-এর একাধিক ব্যাখ্যা রয়েছে। যেমন:

(১) হাদীস শাস্ত্রবিদগণের পরিভাষায় রাসূল কারীম (সঃ)-এর কথা, কর্ম ও সম্মতি এবং তাঁর শারীরিক বৈশিষ্ট্য, স্বভাব ও চাল-চরিত্রকে সুন্নাহ বলা হয়। তা নুবুওয়াত লাভের আগের হোক বা পরের।

২৬ তাজুল আরূস

২৭ সূরাহ যুমার ৩৯: ২৩, সূরাহ আত-তূর ৫২: ৩৫, সূরাহ আন-নাজম ৫৩: ৫৯

২৮ বুখারী, কিতাবুল আদব

২৯ কাওয়ায়িদ ফী উলুমিল হাদীস পৃ. ১৯

৩০ ডক্টর মাহমুদ তাহ্হান-তায়সীরুল মুসতালাহ

৩১ তাওজীহুন-নজর পৃ. ৯৩, আল-হিত্তাহ পৃ. ২৪, ফাতহুল মুগীয় পৃ. ১২

৩২. ইবনু হাজার আসকালানী, হাদয়ুস সারী, লেখক- হাদীসের হিফাযত ও সংকলন: পৃ. ২৮

৩০ ইমাম রাগিব, মুফরাদাত: ২৪৫

(২) উসূল শাস্ত্রবিদগণের মতে সুন্নাহ বলা হয়, প্রত্যেক কথা, কর্ম ও সম্মতিকে, যা রাসূল কারীম (সঃ)-এর সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং যার থেকে শরীয়তের কোনো না কোনো হুকুম প্রমাণিত হয়।

(৩) ফিকাহ শাস্ত্রবিদগণের মতে সুন্নাহ হলো, ফরদ-ওয়াজিব ব্যতীত শরীয়তের অন্যান্য হুকুম আহকাম।

(৪) মুহাদ্দিস্বগণের মতে এবং অনেক সময় ফিকাহ্ শাস্ত্রবিদগণের মতেও সুন্নাহ বলা হয়, সে-সব কমর্কে যা শরীয়তের কোনো দলীল কিংবা উসূলে-শরীয়তের কোনো আসল তথা মৌল-নীতি দ্বারা দীনের অন্তর্ভুক্ত বলে প্রমাণিত।’৩৫

এছাড়া আরো দু’টি শব্দ কখনো হাদীস অর্থে ব্যবহৃত হয়, তা ‘খবর’ ও ‘আস্থার’। কিন্তু বেশি প্রসিদ্ধ শব্দ হলো হাদীস ও সুন্নাহ।

মিশকাত শরীফের ব্যাখ্যাকার প্রখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামাহ আবুল হাসান [রঃ] বলেন: ‘জানা আবশ্যক যে, রাসূল কারীম (সঃ)-এর কর্ম মোটামুটি দু প্রকার। প্রথম যেগুলিতে অনুসরণ জায়িয। দ্বিতীয়, যেগুলিতে অনুসরণ জায়িয নয়। অনুসরণীয় কাজগুলি হলো মুস্তাহাব, সুন্নাত, ওয়াজিব ও ফারদ। অনুসরণ জায়িয নয়- এমন কাজ হল, যথা: এক সঙ্গে নয়জন বিবি রাখা, দিন-রাত লাগাতার সিয়াম পালন করা ইত্যাদি। মোট কথা, অনুসরণীয় এবং অনুসরণীয় নয়, এ উভয় প্রকারের কর্মকাণ্ডের উপর হাদীস শব্দটি প্রযোজ্য হয়। কিন্তু সুন্নাত শব্দটি তেমন নয়। বরং সুন্নাত বলা হয়, কেবল তাঁর অনুসরণীয় কর্মকাণ্ডকে। এ কারণে বলা যায়, প্রত্যেক সুন্নাত তো হাদীস্ব, কিন্তু প্রত্যেক হাদীস সুন্নাত নয়। যেমন লজিকের ভাষায় বলা হয়, প্রত্যেক মানুষ তো প্রাণী, কিন্তু প্রত্যেক প্রাণী মানুষ নয়। ৩৬

হাদীসের প্রকারভেদঃ

হাদীস প্রথমত তিন প্রকার। কাওলী, ফে‘লী ও তাকরীরী। রাসূল কারীম (সালাই)-এর কথা জাতীয় হাদীস গুলোকে কাওলী বলে। তাঁর কাজ সম্পর্কীয় হাদীস গুলিকে ফে‘লী বলে। আর তাঁর সমর্থন ও অনুমোদন সম্পর্কীয় হাদীস গুলোকে তাকরীরী বলে। এছাড়া হাদীস বর্ণনাকারীদের নিজস্ব গুণ-বৈশিষ্ট্যের প্রেক্ষিতে হাদীস্বকে বিভিন্ন শ্রেণীতে বিভক্ত করা হয়। যথা: সহীহ, হাসান, সহীহ লিযাতিহী, সহীহ লিগাইরিহী, হাসান লিযাতিহী, হাসান লিগাইরিহী, দঈফ, মুনকার, মাওর্দূ ইত্যাদি। আবার হাদীস বর্ণনাকারীদের সংখ্যা হিসাবে হাদীসের কয়েকটি শ্রেণী হয়। যথা: মুতাওয়াতির, মাশহুর, আযীয ও গরীব ইত্যাদি। অনুরূপ হাদীস্রের সনদ পরম্পরা হিসাবে হাদীস কয়েক প্রকার হয়ে থাকে। যথা: মারফূ’, মাওকূফ ও মাকতূ ইত্যাদি। এছাড়া হাদীস্ত্রের সুবহানায়] বলেন: আলেমদের ঐকমত্যে আরেকটি প্রকার আছে, যাকে বলা হয় হাদীসে কুদসী। ইমাম শাফিয়ী। সুন্নাহ তিন প্রকার:

১. যাতে, কুরআন যা বলেছে হুবহু তাই বর্ণিত হয়েছে।

২.যাতে, কুরআনে যা আছে তার ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ রয়েছে।

৩.যাতে, কুরআন যে বিষয়ে নীরব, সে বিষয়ে নতুন কথা বলা হয়েছে। সুন্নাহ যে প্রকারেরই হোক না কেন, আল্লাহ তাআলা সুস্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন যে, তাতে আমাদেরকে তার আনুগত্য করতে হবে। সুন্নাহ জানার পর বরখেলাফ করার অধিকার আল্লাহ তাআলা কাউকে দেননি।

ষষ্ঠ: যে হাদীসকে শুধু মুসলিমের শর্তানুযায়ী অন্য কোনো মুহাদ্দিস্র বর্ণনা করেছেন।

সপ্তম: যে হাদীসকে বুখারী, মুসলিম ব্যতীত অন্য কোনো মুহাদ্দিস্ন সহীহ মনে করেছেন।

গায়রে মাকবূল তথা দঈফ: যে হাদীসে  সহীহ ও হাসান হাদীস্ত্রের শর্তসমূহ পাওয়া যায় না, তাকে হাদীসে দঈফ’ বলে।

সনদ: হাদীসের মূল কথাটুকু-যে সূত্র পরম্পরায় গ্রন্থ সংকলনকারীর পর্যন্ত পৌঁছেছে, তাকে সনদ বলে।

মতন: হাদীসের মূল কথা ও তার শব্দসমষ্টিকে মতন বলে।

তা‘দীল: হাদীস বর্ণনাকারী রাবী সম্পর্কে ভাল গুণাগুণ বর্ণনাকে তা‘দীল বলে।

জারহ: হাদীস বর্ণনাকারী রাবী সম্পর্কে মন্দ গুণাগুণ বর্ণনাকে জারই বলে।

মুআল্লাক: যে হাদীসের এক রাবী বা ততোধিক রাবী সনদের শুরু থেকে বাদ পড়ে যায় তাকে ‘মুআল্লাক’ বলে।

মুনকাতি: যে হাদীসের এক রাবী বা একাধিক রাবী বিভিন্ন স্তর থেকে বাদ পড়েছে তাকে ‘মুনকাতি” বলে।

মুরসাল: যে হাদীসের রাবী সনদের শেষ ভাগ থেকে বাদ পড়েছে অর্থাৎ তাবেঈর পরে সাহাবীর নাম নেই তাকে ‘মুরসাল’ বলে।

মু’দাল: যে হাদীসের দুই অথবা দু’য়ের অধিক রাবী সনদের মধ্য থেকে বাদ পড়ে যায়, তাকে মু‘দাল বলে।

মাওদূঃ যে হাদীসের কোন রাবী জীবনে কখনো নবী কারীম (সা)-এর নামে মিথ্যা রচনা করেছে, বলে প্রমাণিত হয়েছে তাকে ‘মাওদূ’ বলে।

মাতরূক: যে হাদীসের রাবী হাদীসের ক্ষেত্রে নয় বরং সাধারণ কাজকর্মে মিথ্যার আশ্রয় গ্রহণ করে বলে খ্যাত, তাকে ‘মাতরূক’ বলে।

মুনকার: যে হাদীসের রাবী ফাসিক, বিদআতপন্থী ইত্যাদি হয়, তাকে ‘মুনকার’ বলে।

ইদতিরাব: রাবী কর্তৃক হাদীসের মতন ও সনদকে বিভিন্ন প্রকারে এলোমেলোভাবে বর্ণনাকে ইদতিরাব বলা হয়। কোনোরূপ সমন্বয় সাধন না করা পর্যন্ত এ প্রকারের হাদীস গ্রহণ করা হতে বিরত থাকতে হয়।

তাদলীস: যে হাদীসের রাবী নিজের প্রকৃত শায়খের (উসতাযের) নাম উল্লেখ না করে তাঁর উপরের শায়খের নামে এভাবে হাদীস বর্ণনা করে-যাতে মনে হয়, তিনি নিজেই উপরের শায়খের নিকট তা শুনেছেন। অথচ তিনি তাঁর নিকট সে হাদীস্ন শুনেননি-এমন হাদীসুকে মুদাল্লাস হাদীস, এরূপ করাকে তাদলীস আর যিনি এরূপ করেন তাকে মুদাল্লিস বলা হয়।

ওয়াহিন, লীন, মাকাল: ওয়াহিন অর্থ মারাত্মক দুর্বল ও লীন অর্থ দুর্বল। আর মাকাল অর্থ সমালোচনা অর্থাৎ যে রাবীর বিষয়ে সমালোচনা রয়েছে।

হুজ্জাহ: দলীলযোগ্য গুণসম্পন্ন রাবী, স্নিকাহ রাবীর পরেই যার স্থান। স্নিকাহ ও হুজ্জাহ হচ্ছে নির্ভরযোগ্য রাবীর চতুর্থ স্তর।

আসার: আসার-এর শাব্দিক অর্থ অবশিষ্ট থাকা।-এর দুটি পরিভাষা রয়েছে।

(ক) এটা হাদীসের মুরাদিফ অর্থাৎ হাদীস ও আসারের পরিভাষা একই।

(খ) সাহাবা ও তাবেঈনদের কথা এবং কার্যাবলীকে আস্থার বলা হয়।

ইনকিতা’: যে হাদীসের সনদের ধারাবাহিকতা রক্ষিত হয়নি, মাঝখানে কোনো স্তরে কোনো রাবীর বাদ পড়েছে, তাকে মুনকাতি— হাদীস্ব-আর এ বাদ পড়াকে ইনকিতা— বলা হয়।

মুআল্লাল: যে হাদীসের মধ্যে অত্যন্ত সূক্ষ্ম ত্রুটি থাকে, যা হাদীস্মের সাধারণ পণ্ডিতগণ ধরতে পারেন না, একমাত্র সুনিপুণ হাদীস শাস্ত্র বিশারদ ব্যতিরেকে। এ প্রকার হাদীসকে মুআল্লাল বলে।-এরূপ ত্রুটিকে ‘ইল্লাত’ বলে।

হাদীসে কুদসী: হাদীসে কুদসী বলতে বুঝায় সেই হাদীয়কে যা রাসূল কারীম (স) আল্লাহর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন, অথচ তা কুরআনের আয়াত নয়। অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা তাঁর নবীকে ইলহাম বা স্বপ্নযোগে য জানিয়ে দিতেন এবং নবী (সা) তা নিজ ভাষায় বর্ণনা করেছেন।

মুহাদ্দিস মোল্লা আলী কারী হানাফী [রা] বলেন: “হাদীস্নে কুদসী সেই হাদীশ্বকে বলা হয়, যা রাসূলুল্লাহ (সঃ) আল্লাহর পক্ষ থেকে বর্ণনা করেন। কখনো জিবরাঈলের মাধ্যমে আবার কখনো সরাসরি ওয়াহী, ইলহাম বা স্বপ্নযোগে জেনে। আর যে কোনো ভাষায় তা প্রকাশ করার দায়িত্ব রাসূলের প্রতি অর্পিত হয়।

বাংলায় আরবী উচ্চারণ পদ্ধতি

বাংলা ভাষায় আরবী হরফগুলো মাখরাজসহ বিশুদ্ধভাবে উচ্চারণ করা অত্যন্ত দুরূহ। আরবীকে বাংলায় উচ্চারণ করতে গিয়ে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিকৃত করা হয়েছে, যা আরবী ভাষার জন্য অতিমাত্রায় দূষণীয়। কেননা, অনেক ক্ষেত্রে উচ্চারণ বিকৃতির কারণে অর্থগত ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে যায়। আরবী হরফগুলোর বাংলা উচ্চারণ বিশুদ্ধভাবে করার প্রচেষ্টায় নানাভাবে করা হয়েছে। কিন্তু আরবী ২৮ টি বর্ণমালার প্রতিবর্ণ এ পর্যন্ত কেউ-ই পূর্ণাঙ্গভাবে ব্যবহার করেননি। আলহামদুলিল্লাহ! সম্ভবত আমরাই সর্বপ্রথম ২৮টি বর্ণমালাকে আলাদাভাবে উপস্থাপন করতে সক্ষম হলাম। একটু চেষ্টা ও খেয়াল করলেই স্বল্পশিক্ষিত পাঠক-পাঠিকাও এ উচ্চারণ রীতিমালা আয়ত্ব করে মোটামুটি শুদ্ধভাবে উচ্চারণ করতে পারবেন বলেই আমাদের একান্ত বিশ্বাস। আইন অক্ষরের পরে ইয়া সার্কিন হলে সেক্ষেত্র ঈ লিখা হবে। ফাতহাহ বা রাবারের বাম পাশে ইয়া সাকিন হলে য় ব্যবহৃত হবে। যেমন লায় এ। ওয়াও এর উচ্চারণ ব এর মতো হলে সেক্ষেত্রে উক্ত ব এর উপর বিন্দু অর্থাৎ ব হবে। ফাতহাহ বা খাবারের বাম পাশে হামযাহতে যের হলে সেক্ষেত্রে য়ি ব্যবহৃত হবে। আইন ( অক্ষর সাকিন হলে সেক্ষেত্রে (‘) ব্যবহার করা হয়েছে। যেমন আ’মাশ। হামযাহ সাকিনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে। যেমন (১) মু’মিন। অনুরূপভাবে শেষাক্ষরে হামযাহ থাকলেও ওয়াকফের কারণে () ব্যবহার করা হয়েছে। খাড়া যাবার বা মাদ্দে আসলির ক্ষেত্রে (1) এর উপরে খাড়া যাবার-ই ব্যবহার করা হয়েছে।

তাহকীক তাফসীর ইবনু কাসীর ৩য় খণ্ড

তাহকীক তাফসীর ইবনু কাসীর ৩য় খণ্ড

Reviews (0)

Reviews

There are no reviews yet.

Be the first to review “তাহকীক তাফসীর ইবনু কাসীর ৩য় খণ্ড”

Your email address will not be published.

Shopping cart
Facebook Twitter Instagram YouTube WhatsApp WhatsApp

Sign in

No account yet?