তাহক্বীক রিয়াযুস স্বা-লিহীন (আর্ট পেপার)
তাহক্বীক রিয়াযুস স্বা-লিহীন (আর্ট পেপার)
লেখক: ইমাম নাবাবী (রহ.)
অনুবাদক: আল্লামা নাসিরুদ্দীন আলাবানী (রহ.)
প্রকাশনায় : তাওহীদ পাবলিকেশন্স
অর্থানুবাদ: আরবী ও বাংলা
পৃষ্ঠা সংখ্যা : ৮৪৫ পৃষ্ঠা
বিষয় : হাদিস
বইটি কিনতে কিল্ক করুন: তাহক্বীক রিয়াযুস স্বা-লিহীন (আর্ট পেপার)
আরো জানতে কিল্ক করুন: তাওহীদ পাবলিকেশন্স
তাহক্বীক রিয়াযুস স্বা-লিহীন (আর্ট পেপার)
ইসলামে হাদিস বা হাদিস শাস্ত্র বলা হয় সেই জ্ঞান সম্পর্কে যার সাহায্যে রাসুল্লাহ (সঃ) এর কথা, কাজ, ইত্যাদি সম্পর্কে অগ্রগতি লাভ করা যায়। যে কাজ তার উপস্থিতিতে সম্পাদন করা হয়েছে, কিন্তু তিনি তা নিষেধ করেননি, এমন কাজও হাদিসের অন্তর্ভুক্ত। হাদিস শাস্ত্র দুই ভাগে বিভক্ত। এক ইলমে রওয়ায়েতুল হাদিস, দুই ইলমে দেবায়াতুল হাদিস। মুহাদ্দিসগন হাদিসের বিশুদ্ধতা নির্ধারনে যে বিশ্বস্তত ও আমানতদারীর পরিচয় দিয়েছেন, তা অতুলনীয়। কুরআন মজীদের বিশুদ্ধতা রক্ষার জন্য সাহাবায়ে কিরাম যেরুপ সতর্কতা অবলম্বন করেছেন হাদিসের ক্ষেত্রেও অনেক মুহাদ্দিস তাই করেছেন। এ ব্যাপারে মুসলিম উম্মাহ প্রচুর দায়িত্ব বোধের পরিচয় দিয়েছে। মুহাদ্দিসগন হাদিসের বিশুদ্ধতা রক্ষার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা ও সাধনা করেছেন। ইমাম নববী (রহ) এই গ্রন্থের বিষয়ভিত্তিক বিন্যাস সাধনে যে পরিশ্রম ও আন্তরিকতার পরিচয় দিয়েছেন তা আতুলনীয়। তিনি ফিকাহর দৃষ্টিতে হাদিসের বিন্যাস করেছেন এবং প্রতিটি অধ্যায়ের শুরুতে কুরআনের আয়াত উদ্ধৃত করেছেন। এভাবে হাদিসের এই সংকলনকে তিনি সর্বতোভাবে সুন্দর ও সমৃদ্ধ করে তুলেছেন। এর ফলে হাদিসের এই তাহক্বীক রিয়াযুস স্বা-লিহীন গ্রন্থটি বিপুলভাবে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে এবং পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় অনুদিত হয়েছে। ইতিপূর্বে এই তাহক্বীক রিয়াযুস স্বা-লিহীন গ্রন্থটি অনুদিত হলেও রিয়াযুস স্বা-লিহীন গ্রন্থটিতে কিছু যঈফ হাদিস থাকায় শাইখ নাসিরুদ্দিন আল আলবানি কতৃক তাহক্বীক কৃত গ্রন্থটির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে তাওহীদ পাবলিকেশন্স ঢাকা তাহক্বীক রিয়াযুস স্বা-লিহীন (আর্ট পেপার) বইটি প্রকাশ করেছে।
তাহক্বীক রিয়াযুস স্বা-লিহীন (আর্ট পেপার)
তাহক্বীক রিয়াযুস স্বা-লিহীন (আর্ট পেপার) গ্রন্থের বিশেষ বৈশিষ্ট্যাবলীঃ
১. স্পেশাল ফন্টে আরবী ইবারতের পাশাপাশি বাংলা সরল অনুবাদ।
২. তাহক্বীক রিয়াযুস স্বা-লিহীন গ্রন্থে প্রতিটি হাদিসকে ৯টি হাদীসগ্রন্থ (বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী, আবূ দাউদ, নাসাঈ, ইবনু মাজাহ, মুয়াত্তা মালিক, মুসনাদ আহমাদ ও দারেমী )র আলকে তাখরীজ করা হয়েছে।
৩. তাহক্বীক রিয়াযুস স্বা-লিহীন গ্রন্থে প্রতিটি হাদিসের শেষে ৯টি গ্রন্থের যে নাম্বার গুলো দেয়া হয়েছে তাতে পাঠক ও গাবেষকবৃন্দ একই বিষয়ের উপর ৯ টি গ্রন্থের কোথায় কতটি হাদিস আছে তা সহজেই জানতে পারবেন। মূল হাদিসের সাথে সম্পূর্ণ কিংবা আংশিক মিল থাকা হাদিস গুলোর নাম্বার উল্লেখ করেছি। কোন হাদিসগ্রন্থে এক বিষয়ের একাধিক হাদিস থাকলে তার অধিকাংশ পুনরাবৃত্তি নম্বর উল্লেখ করা হয়েছে।
৪. তাহক্বীক রিয়াযুস স্বা-লিহীন গ্রন্থে উল্লেখিত বুখারি ও মুসলিমের হাদিস ব্যাতীত প্রতিটি হাদিস যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস শাইখ নাসিরুদ্দিন আল আলবানীর তাহক্বীক কৃত।
৫. তাহক্বীক রিয়াযুস স্বা-লিহীন গ্রন্থে আলবানীর তাহক্বীকৃত হাদিস যেগুলো যঈফ সেগুলোর চারিদিকে সিঙ্গেল বর্ডার দিয়ে আলাদাভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আর ফুটনোটের মাধ্যমে প্রতিটি যঈফ হাদিসের দুর্বল রাবী চিহ্নিত করে এ হাদিস সম্পর্কে মুহাদ্দিস আলবানির পর্যালোচনা উল্লেখ করা হয়েছে।
৬. যে হাদিস গুলোতে আল্লামা আলবানি (রহ) তার পূর্বের মত থাকে ফিরে অন্য মত প্রকাশ করেছেন। অর্থাৎ প্রথমে যঈফ না বললেও সর্বশেষ তাহক্বীক অনুযায়ী যঈফ বলেছেন সে হাদিস গুলো হচ্ছেঃ ৪৮৮, ১৩৯৩, ১৭২০ নং হাদিস। আর তিনি প্রথম তাহক্বীকে যঈফ মন্তব্য করলেও পরে তিনি সহীহ আখ্যা দিয়েছেন আমন একটি হাদিস হচ্ছে ১৫০০ নং হাদিস।
৭. তাহক্বীক রিয়াযুস স্বা-লিহীন গ্রন্থে প্রতিটি হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর মুখ নিঃসৃত বাণীগুলো বোল্ড বা মোটা অক্ষরে প্রকাশ করা হয়েছে।
৮. তাহক্বীক রিয়াযুস স্বা-লিহীন গ্রন্থে হাদিসের নম্বরের ক্ষেত্রে বুখারীর নম্বর ফাতহুল বারীর নম্বর এর সঙ্গে, মুসলিম ও ইবনু মাজাহ ফুয়াদ আব্দুল বাকীর নম্বরের সঙ্গে, তিরমিযীর নম্বর আহমেদ শাকেরের নম্বরের সঙ্গে, আবু দাউদ মুহাম্মাদ মহিউদ্দিন আব্দুল হামিদের নম্বরের সঙ্গে, মুসনাদ আহমাদ এহইয়াউত তুরাস আল ইসলামীর নম্বরের সঙ্গে, মুয়াত্তা মালিক তার নিজস্ব নম্বরের সঙ্গে, নাসাঈর নম্বর আবু গুদ্দার নম্বরের সঙ্গে মিল রেখে করা হয়েছে।
৯. তাহক্বীক রিয়াযুস স্বা-লিহীন গ্রন্থে প্রতিটি হাদিসে পরিচ্ছেদের বিষয়ের সঙ্গে হাদিসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অংশটুকু অনুবাদে বোল্ড বা মোটা অক্ষরে দেখানো হয়েছে।
১০. মাঝে মাঝে হাদিসের অনুবাদের শেষে অনুবাদক কতৃক ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়েছে।
১১. তাহক্বীক রিয়াযুস স্বা-লিহীন গ্রন্থে বাংলা সূচীপত্রের পাশাপাশি আরবী সূচীও উল্লেখ করা হয়েছে।
১২. তাহক্বীক রিয়াযুস স্বা-লিহীন গ্রন্থে যঈফ হাদিসের একটি আলাদা তালিকা উল্লেখ করা হয়েছে।
তাহক্বীক রিয়াযুস স্বা-লিহীন (আর্ট পেপার)
মূল:
মুহিউদ্দীন আবূ যাকারিয়্যা ইয়াহইয়া বিন শারফ আন্-নাবাবী (রহ.)
(৬৩১-৬৭৬ হিজরী)
তাহক্বীক:
যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস ও মুহাক্কিক
আল্লামা মুহাম্মাদ নাসিরুদ্দীন আলবানী (রহ.)
(১৯১৪-১৯৯৯ ঈসায়ী)
অনুবাদ সম্পাদনায়:
আবদুল হামীদ ফাইযী আল-মাদানী
সম্পাদনা সহযোগী:
মুহাম্মাদ আকমাল হুসাইন বিন বদীউয্যামান
অধ্যাপক মোহাম্মাদ মোজাম্মেল হক
মুহাম্মাদ হাশেম মাদানী
সফিউর রহমান রিয়াযী
প্রকাশনায়
তাওহীদ পাবলিকেশন্স
ঢাকা-বাংলাদেশ
তাহক্বীক রিয়াযুস স্বা-লিহীন (আর্ট পেপার)
সম্পাদকের কথা
الحمد لله رب العالمين، والصلاة والسلام على رسوله الكريم، وعلى آله وصحبه أجمعين، وبعد:
অনুবাদের বাজারে ‘তাহক্বীক রিয়াযুস স্বা-লিহীন’ মজুদ রয়েছে ; তবুও এর প্রয়োজন কেন?
প্রথমতঃ সে সব অনুবাদে নানা ভুল-ভ্রান্তি দৃষ্টিগোচর হলে দ্বীনী ভাইদের চাহিদাক্রমে যথাসম্ভব ভুল এড়িয়ে এ তাহক্বীক রিয়াযুস স্বা-লিহীন সম্পাদিত হয়েছে।
দ্বিতীয়তঃ গ্রন্থে কিছু যঈফ হাদীস রয়েছে, যেগুলো আল্লামা নাসিরুদ্দীন আলবানী তাহক্বীক্ব করেছেন এবং যঈফ হওয়ার কারণ উল্লেখ করেছেন। সেগুলো চিহ্নিত করে যঈফ রাঈ সম্পর্কে মুহাদ্দিসগণের মতামত তুলে ধরা হয়েছে। যেন দুর্বল হাদীসের উপর আমলের ব্যাপারে সতর্ক হন। তাহক্বীক রিয়াযুস স্বা-লিহীন অনুবাদের অধিকাংশ অনুকরণ করা হয়েছে জনাব মাওলানা আব্বাস আলী তারানগরী ও আমার পরম শ্রদ্ধেয় ভাই জনাব মাওলানা আব্দুস সালাম মাদানী সাহেবের অনূদিত গ্রন্থের।
আমার সবগুলো গ্রন্থ বাংলাদেশের তাওহীদ পাবলিকেশন্সকে ছাপানোর অনুমতি প্রদান করেছি। বাংলাদেশে প্রকাশিত তাহক্বীক রিয়াযুস স্বা-লিহীনটি সবধরনের পাঠকের দিকে লক্ষ্য রেখে আরো গবেষণাধর্মী আকারে বের হলো।
তাহক্বীক রিয়াযুস স্বা-লিহীন গ্রন্থটি প্রকাশের ব্যাপারে যারা বিশেষ অবদান রেখেছেন তাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। বিশেষ করে শাইখ হাবীবুর রহমান ফাইযী ও শাইখ মুহাম্মাদ হাশেম মাদানী, শায়খ সফিউর রহমান রিয়াযী, বাংলাদেশের অধ্যাপক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, মুহাম্মদ আকমাল হুসাইন সহ যাঁরাই এ তাহক্বীক রিয়াযুস স্বা-লিহীন গ্রন্থে কোন না কোনভাবে সহযোগিতা করেছেন আল্লাহ যেন তাঁদের সকলকে নেক প্রতিদান দেন এবং আমলকে কিয়ামতের দিন নেকীর পাল্লায় রাখেন। আমীন!
ইহকালের প্রমোদোদ্যান ও বিলাস বাগে মানুষ বিলাস-বিহার তথা অবসর বিনোদন ক’রে আনন্দ উপভোগ ক’রে থাকে। কিন্তু সৎশীল মুসলিমরা এ তাহক্বীক্ব ‘রিয়াযুস স্বা-লিহীন’ তথা ‘সৎশীলদের বাগান’-এ ভ্রমণ ক’রে পরকালের বেহেশতে ইচ্ছা-সুখের বাগানে বিলাস-বিহার করতে পারবেন। আল্লাহ সকলকে তাওফীক দিন। আমীন!
বিনীত
আবদুল হামীদ মাদানী
আল-মাজমাআহ
সঊদী আরব
২৪ শে রমযান ১৪২৯ হি.
তাহক্বীক রিয়াযুস স্বা-লিহীন (আর্ট পেপার)
গ্রন্থকারের ভূমিকা
যাবতীয় প্রশংসা সেই আল্লাহর জন্য, যিনি একক, প্রতাপশালী, পরাক্রমশালী, মহা ক্ষমাশীল। যিনি রাত্রিকে আচ্ছাদিত করেন দিন দ্বারা হৃদয়বান ও জ্ঞানবান ব্যক্তিদের জন্য উপদেশ স্বরূপ, বিচক্ষণ ও উপদেশ গ্রহণকারীদের জন্য জ্ঞানালোক স্বরূপ। যিনি সৃষ্টিকুলের মধ্য হতে যাদেরকে মনোনীত করেছেন তাদেরকে সচেতন করেছেন, সুতরাং তাদেরকে এ পার্থিব সংসারের মোহমুক্ত করেছেন, তাদেরকে তাঁর নিজের ব্যাপারে সতর্কতা ও সতত চিন্তা-গবেষণায় ব্যাপৃত রেখেছেন, তাদেরকে প্রতিনিয়ত উপদেশ ও শিক্ষা গ্রহণে রত রেখেছেন। তিনি তাদেরকে নিরবধি নিজ আনুগত্য করার, পরকালের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার, যে বিষয় তাঁকে অসন্তুষ্ট করে এবং ধ্বংস অনিবার্য করে সে বিষয় থেকে সতর্ক থাকার এবং অবস্থা ও পরিস্থিতির পরিবর্তন সত্ত্বেও তাতে যত্নবান থাকার তওফীক দিয়েছেন।
আমি তাঁর প্রশংসা করি, অতিশয় ও পবিত্রতম প্রশংসা, ব্যাপকতম ও অধিকতম বর্ধনশীল প্রশংসা। আর সাক্ষ্য দিই যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য উপাস্য নেই, যিনি কৃপানিধি ও দানশীল, চরম দয়াশীল, পরম করুণাময়। সাক্ষ্য দিই যে, আমাদের সর্দার মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও রসূল, তাঁর প্রিয়পাত্র ও বন্ধু, যিনি সরল পথ প্রদর্শক এবং সঠিক দ্বীনের প্রতি আহ্বানকারী। আল্লাহর অসংখ্য দরূদ ও সালাম তাঁর উপর বর্ষিত হোক এবং সকল আম্বিয়া, সকলের বংশধর এবং সকল নেক বান্দাদের উপরও।
অতঃপর মহান আল্লাহ বলেছেন,
{وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُوْنِ (৫৬) مَآ أُرِيْدُ مِنْهُمْ مِّنْ رِّزْقٍ وَّمَآ أُرِيْدُ أَنْ يُّطْعِمُوْنِ (৫৭)}
অর্থাৎ, আমি সৃষ্টি করেছি জ্বিন ও মানুষকে কেবল এ জন্য যে, তারা আমারই ইবাদত করবে। আমি তাদের নিকট হতে জীবিকা চাই না এবং এও চাই না যে, তারা আমার আহার্য যোগাবে। (সূরা যারিয়াত ৫১/৫৬-৫৭)
এটি স্পষ্ট ঘোষণা যে, জিন-ইনসান ইবাদতের জন্য সৃষ্টি হয়েছে। সুতরাং তাদের উচিত, সেই কর্মের প্রতি যত্ন নেওয়া, যার জন্য তারা সৃষ্ট হয়েছে এবং বিষয়-বিতৃষ্ণার সাথে পার্থিব ভোগ-বিলাস হতে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া। যেহেতু পার্থিব জীবন হল ক্ষণস্থায়ী, চিরস্থায়ী নয়। তা হল পারের নাও মাত্র, আনন্দের বসত-বাড়ি নয়। অস্থায়ী পানি পানের ঘাট, চিরস্থায়ী বাসস্থান নয়। এই জন্য তার সচেতন বাসিন্দা তারাই, যারা আল্লাহর ইবাদত-গুযার এবং সবচেয়ে বুদ্ধিমান মানুষ তারাই, যারা তার প্রতি আসক্তিহীন। মহান আল্লাহ বলেন,
{إِنَّمَا مَثَلُ الْحَيٰوةِ الدُّنْيَا كَمَآءٍ أَنْزَلْنٰهُ مِنَ السَّمَآءِ فَاخْتَلَطَ بِهٰ نَبَاتُ الْأَرْضِ مِمَّا يَأْكُلُ النَّاسُ وَالْأَنْعَامُ ط حَتّٰىٓ إِذَآ أَخَذَتِ الْأَرْضُ زُخْرُفَهَا وَازَّيَّنَتْ وَظَنَّ أَهْلُهَآ أَنَّهُمْ قٰدِرُوْنَ عَلَيْهَآ لا أَتٰهَآ أَمْرُنَا لَيْلًا
أَوْ نَهَارًا فَجَعَلْنٰهَا حَصِيْدًا كَأَنْ لَّمْ تَغْنَ بِالْأَمْسِ ط كَذٰلِكَ نُفَصِّلُ الْاٰيٰتِ لِقَوْمٍ يَّتَفَكَّرُوْنَ (২৪)}
অর্থাৎ, বস্তুত পার্থিব জীবনের দৃষ্টান্ত তো বৃষ্টির মত, যা আমি আসমান হতে বর্ষণ করি। অতঃপর তার দ্বারা উৎপন্ন হয় ভূপৃষ্ঠির উদ্ভিদগুলো অতিশয় ঘন হয়ে, যা হতে মানুষ ও পশুরা ভক্ষণ করে। অতঃপর যখন ভূমি তার শোভা ধারণ করে এবং নয়নাভিরাম হয়ে ওঠে এবং তার মালিকরা মনে করে যে, তারা এখন তার পূর্ণ অধিকারী, তখন দিনে অথবা রাতে তার উপর আমার (আযাবের) আদেশ এসে পড়ে, সুতরাং আমি তা এমনভাবে নিশ্চিহ্ন করে দিই, যেন গতকাল তার অস্তিত্বই ছিল না। এরূপেই আয়াতগুলোকে আমি চিন্তশীল সম্প্রদায়ের জন্য বিশদরূপে বর্ণনা করে থাকি। (সূরা ইউনুস ১০/২৪) আর এ মর্মে আরো অনেক আয়াত রয়েছে। কবি কত সুন্দরই না বলেছেন,
নিশ্চয় আল্লাহর অনেক বিচক্ষণ বান্দা আছেন,
যাঁরা দুনিয়াকে তালাক দিয়েছেন এবং ভয় করেছেন ফিতনাকে।
দুনিয়া নিয়ে তাঁরা চিন্তা-ভাবনা করে জেনেছেন যে,
তা কোন জীবেনর জন্য (চির) বাসস্থান নয়।
তাকে তাঁরা সমুদ্র গণ্য করেছেন
এবং তা পারাপারের জন্য কিশ—ী বানিয়েছেন নেক আমলকে।
সুতরাং এই যদি তার অবস্থা হয়, যা বর্ণনা করলাম এবং এই যদি আমাদের ও যে জন্য আমরা সৃষ্ট হয়েছি তার অবস্থা হয়, যা পূর্বে উল্লেখ করলাম, তা হলে ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তির উচিত যে, সে নিজেকে সৎলোকেদের দলভুক্ত করবে, জ্ঞানী ও বিচক্ষণ ব্যক্তিবর্গের পথ অবলম্বন করবে, ইতিপূর্বে যার ইঙ্গিত করেছি, তার জন্য প্রস্তুত হবে এবং যার প্রতি সতর্ক করেছি, তাতে যত্নবান হবে। আর এর জন্য সবচেয়ে সঠিক পথ ও নির্ভুল পন্থা হল, আমাদের নবীর সহীহ হাদীসের সাথে আদব প্রদর্শন করা (তার আদর্শ গ্রহণ করা), যিনি পূর্বাপর সকল মানুষের সর্দার এবং পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকল মানুষ অপেক্ষা অধিক সম্মানীয়। তাঁর উপর এবং সকল আম্বিয়ার উপর আল্লাহর অসংখ্য দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক। পক্ষান্তরে মহান আল্লাহ বলেছেন, {وَتَعَاوَنُوْا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوٰى} [ المائدة:২ ] অর্থাৎ, তোমরা সৎ ও সংযমশীলতার কাজে পরস্পর সগযোগিতা কর। (সূরা মায়িদাহ ২ আয়াত) আর সহীহসূত্রে প্রমাণিত, আল্লাহর রাসূল @ বলেছেন,“আল্লাহ বান্দার সাহায্যে থাকেন, যতক্ষণ বান্দাহ নিজ ভায়ের সাহায্যে থাকে।” (মুসলিম ২৬৯৯ নং) “যে ব্যক্তি কল্যাণের প্রতি পথনির্দেশ করে তার জন্য ঐ কল্যাণ সম্পাদনকারীর সমপরিমাণ সওয়াব লাভ হয়।” (ইবনে হিব্বান)
“যে ব্যক্তি সৎপথের দিকে আহ্বান করে (দাওয়াত দেয়) সে ব্যক্তির ঐ পথের অনুসারীদের সমপরিমাণ সওয়াব লাভ হবে। এতে তাদের সওয়াব থেকে কিছু মাত্র কম হবে না। আর যে ব্যক্তি অসৎ পথের দিকে আহ্বান করে সেই ব্যক্তির ঐ পথের অনুসারীদের সমপরিমাণ গোনাহর ভাগ হবে। এতে তাদের গোনাহ থেকে কিছুমাত্র কম হবে না।” (মুসলিম ২৬৭৪ নং) আলী <-কে বলেছিলেন, “আল্লাহর কসম! তোমার মাধ্যমে আল্লাহ যদি একটি লোককেও হিদায়াত করেন, তা হলে তোমার জন্য লাল উঁটনী (আরবের সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পদ) অপেক্ষা উত্তম।” (বুখারী ৩৭০১, মুসলিম ২৪০৬ নং) সুতরাং আমি মনস্থ করলাম যে, সহীহ হাদীস সম্বলিত একটি সংক্ষিপ্ত গ্রন্থ সঞ্চয়ন করি, যাতে এমন সব বিষয়ের সমাবেশ ঘটবে, যা পাঠকের জন্য পরকালের পাথেয় হবে, বাহ্যিক ও আভ্যন্তরিক আদব ও শিষ্টাচারিতা অর্জন হবে, যাতে উৎসাহদান, ভীতিপ্রদর্শন এবং পরহেযগার মানুষদের নানা আদব সম্বলিত বিষয়-বিরাগমূলক, আত¥া-অনুশীলন ও চরিত্রগঠনমূলক, অন্তরশুদ্ধি ও হৃদরোগের চিকিৎসামূলক, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংশুদ্ধি ও তার বক্রতা দূরীকরণমূলক ইত্যাদি আল্লাহ-ভক্তদের উদ্দেশ্যমূলক আরো অন্যান্য হাদীস পরিবেশিত হবে। আর এতে আমি বাধ্যবাধকতার সাথে স্পষ্ট সহীহ হাদীস ছাড়া অন্য হাদীস উল্লেখ করব না এবং যা উল্লেখ করব, তাতে প্রসিদ্ধ ও বিশুদ্ধ হাদীসগ্রন্থের হাওয়ালা দিব। কুরআন আযীযের আয়াত কারীমা দিয়ে এর পরিচ্ছেদগুলির সূচনা করব। শব্দের সঠিক উচ্চারণ এবং নির্গঢ় অর্থ-সম্বলিত ব্যাখ্যার প্রয়োজনবোধে মূল্যবান টীকা-টিপ্পনী ব্যবহার করব। যখন বলব, متفق عليه তখন তার মানে হবে, হাদীসটিকে বুখারী ও মুসলিম (সহীহহায়নে) বর্ণনা করেছেন। আমি আশা করি যে, তাহক্বীক রিয়াযুস স্বা-লিহীন গ্রন্থ যদি পূর্ণাঙ্গরূপ লাভ করে, তা হলে তা যত্নবান (পাঠকের) জন্য কল্যাণের পথপ্রদর্শক হবে এবং সকল প্রকার মন্দ ও সর্বনাশী কর্ম থেকে বিরত রাখবে। আমি সেই ভায়ের কাছে আবেদন রাখব, যিনি এ গ্রন্থের কিছু অংশ দ্বারাও উপকৃত হবেন, তিনি যেন আমার জন্য, আমার মাতা-পিতার জন্য, আমার উস্তাদ, সকল বন্ধু-বান্ধব ও সমস্ত মুসলমানের জন্য দুআ করেন। আর আমি মহানুভব আল্লাহর উপর ভরসা করি, তাঁকেই আমার সবকিছু সমর্পণ করি, তাঁরই উপর আমি নির্ভর করি, তিনিই আমার জন্য যথেষ্ট এবং তিনিই উত্তম কর্মবিধায়ক। পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময় আল্লাহর প্রেরণা দান ছাড়া পাপ থেকে ফিরার এবং সৎকাজ করার (নড়া-সরার) কোন শক্তি নেই।
তাহক্বীক রিয়াযুস স্বা-লিহীন (আর্ট পেপার)
পরিচ্ছেদ – ১ : ইখলাস প্রসঙ্গে
প্রকাশ্য ও গোপনীয় আমল, (কর্ম) কথা ও অবস্থায় আন্তরিকতা ও বিশুদ্ধ নিয়ত জর“রী
আল্লাহ তাআলা বলেন,
{وَمَا أُمِرُوا إِلَّا لِيَعْبُدُوا اللهَ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ حُنَفَاء وَيُقِيمُوا الصَّلَاةَ وَيُؤْتُوا الزَّكَاةَ وَذَلِكَ دِينُ الْقَيِّمَةِ} (سورة البينة : ৫)
অর্থাৎ, তারা তো আদিষ্ট হয়েছিল আল্লাহরআনুগত্যে বিশুদ্ধচিত্ত হয়ে একনিষ্ঠভাবে তাঁর ইবাদত করতে এবং নামায কায়েম করতে ও যাকাত প্রদান করতে। আর এটাই সঠিক ধর্ম। (সূরা বাইয়িনাহ্ ৫নং আয়াত)
তিনি আরো বলেন, {لَن يَنَالَ الله لُـحُومُهَا وَلا دِمَاؤُهَا وَلَكِن يَنَالُهُ التَّقْوٰى منكُمْ}
অর্থাৎ, আল্লাহর কাছে কখনোও ওগুলির মাংস পৌঁছে না এবং রক্তও না; বরং তাঁর কাছে পৌঁছে তোমাদের তাক্বওয়া (সংযমশীলতা)। (সূরা হাজ্জ্ব ৩৭ নং আয়াত)
তিনি আরো বলেন, {قُلْ إن تُخْفُوا مَا فِي صُدُوْرِكُمْ أَوْ تُبْدُوْهُ يَعْلَمْهُ الله}
অর্থাৎ, বল, তোমাদের মনে যা আছে তা যদি তোমরা গোপন রাখ কিংবা প্রকাশ কর, আলাহ তা অবগত আছেন। (সূরা আলে ইমরান ২৯ নং আয়াত)
১/১. عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ : إِنَّمَا الْأَعْمَالُ بِالنِّيَّةِ، وَإِنَّمَا لِامْرِئٍ مَا نَوَى، فَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهُ إِلَى اللهِ وَرَسُولِهِ فَهِجْرَتُهُ إِلَى اللهِ وَرَسُولِهِ، وَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهُ لِدُنْيَا يُصِيبُهَا أَوْ امْرَأَةٍ يَتَزَوَّجُهَا فَهِجْرَتُهُ إِلَى مَا هَاجَرَ إِلَيْهِ. (متفقٌ على صحته)
১/১। উমার র:) বলেন, আমি রসূল (স:)-কে বলতে শুনেছি যে, “যাবতীয় কার্য নিয়ত বা সংকল্পের উপর নির্ভরশীল। আর মানুষের জন্য তাই প্রাপ্য হবে, যার সে নিয়ত করবে। অতএব যে ব্যক্তির হিজরত (স্বদেশত্যাগ) আল্লাহর(সন্তুষ্টি লাভের) উদ্দেশ্যে ও তাঁর রসূলের জন্য হবে; তার হিজরত আল্লাহ ও তাঁর রসূলের জন্যই হবে। আর যে ব্যক্তির হিজরত পার্থিব সম্পদ অর্জন কিংবা কোন মহিলাকে বিবাহ করার উদ্দেশ্যেই হবে, তার হিজরত যে সংকল্প নিয়ে করবে তারই জন্য হবে।”
এই হাদীসটি খুবই গুরত্বপূর্ণ। ইমাম শাফেয়ী (রঃ) ও ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বাল (রঃ) এটিকে ‘এক তৃতীয়াংশ অথবা অর্ধেক দ্বীন’ বলে অভিহিত করেছেন।
এটিকে ইমাম বুখারী (রঃ) তাঁর গ্রন্থ সহীহ বুখারীতে সাত জায়গায় বর্ণনা করেছেন। প্রত্যেক স্থানে এই হাদীসটি উলেখ করার উদ্দেশ্য হল কর্মের বিশুদ্ধতা ও কর্মের প্রতিদান নিয়তের সাথে সম্পৃক্ত—সে কথা প্রমাণ করা।
২/২. وَعَن أُمِّ المُؤمِنِينَ أُمِّ عَبدِ الله عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللهِ : يَغْزُو جَيْشٌ الْكَعْبَةَ، فَإِذَا كَانُوا بِبَيْدَاءَ مِنْ الْأَرْضِ يُخْسَفُ بِأَوَّلِهِمْ وَآخِرِهِمْ، قَالَتْ: قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ! كَيْفَ يُخْسَفُ بِأَوَّلِهِمْ وَآخِرِهِمْ وَفِيهِمْ أَسْوَاقُهُمْ وَمَنْ لَيْسَ مِنْهُمْ؟ قَالَ: يُخْسَفُ بِأَوَّلِهِمْ وَآخِرِهِمْ، ثُمَّ يُبْعَثُونَ عَلَى نِيَّاتِهِمْ. (متفقٌ عليه. هذا لفظ البخاري)
২/২। উম্মুল মু’মেনীন উম্মে আব্দুল্লাহ আয়েশা (র:)থেকে বর্ণিত রসূলুল্লাহ(স:) বলেছেন, “একটি বাহিনী কা’বা ঘরের উপর আক্রমণ করার উদ্দেশ্যে বের হবে। অতঃপর যখন তারা সমতল মর“প্রাš—রে (বাইদা) পৌঁছবে তখন তাদের প্রথম ও শেষ ব্যক্তি সকলকেই যমীনে ধসিয়ে দেওয়া হবে। তিনি (আয়েশা) বলেন যে, আমি (এ কথা শুনে) বললাম, হে আল্লাহররসূল! কেমন করে তাদের প্রথম ও শেষ সকলকে ধসিয়ে দেওয়া হবে? অথচ তাদের মধ্যে তাদের বাজারের ব্যবসায়ী এবং এমন লোক থাকবে, যারা তাদের (আক্রমণকারীদের) অন্তর্ভুক্ত নয়। তিনি বললেন, তাদের প্রথম ও শেষ সকলকে ধসিয়ে দেওয়া হবে। তারপর তাদেরকে তাদের নিয়ত অনুযায়ী পুনর“ত্থিত করা হবে।”
৩/৩.وعَن عَائِشَةَ رَضِيَ الله عَنهَا قَالَت: قَالَ النَّبِيُّ : ্রلاَ هِجْرَةَ بَعْدَ الْفَتْحِ وَلَكِنْ جِهَادٌ وَنِيَّةٌ وَإِذَا اسْتُنْفِرْتُمْ فَانْفِرُواগ্ধ. متفق عليه
৩/৩। আয়েশা (র:)থেকে বর্ণিত নবী (স:) বলেছেন, “মক্কা বিজয়ের পর (মক্কা থেকে) হিজরত নেই; বরং বাকী রয়েছে জিহাদ ও নিয়ত। সুতরাং যদি তোমাদেরকে জিহাদের জন্য ডাক দেওয়া হয়, তাহলে তোমরা (জিহাদে) বেরিয়ে পড়।”
‘মক্কা বিজয়ের পর আর হিজরত নেই’ এর অর্থ এই যে, মক্কা এখন ইসলামী রাষ্ট্রে পরিণত হল। ফলে এখান থেকে মুসলমানেরা আর হিজরত করতে পারবে না।
৪/৪.وعَنْ أَبِي عبدِ اللهِ جابر بن عبدِ اللهِ الأنصاريِّ رَضي اللهُ عنهما ، قَالَ : كُنَّا مَعَ النَّبيِّ في غَزَاةٍ ، فَقالَ : ্র إِنَّ بالمدِينَةِ لَرِجَالاً ما سِرْتُمْ مَسِيراً ، وَلاَ قَطَعْتُمْ وَادِياً ، إلاَّ كَانُوا مَعَكمْ حَبَسَهُمُ الْمَرَضُগ্ধ . وَفي روَايَة : ্র إلاَّ شَرَكُوكُمْ في الأجْرِ গ্ধ. رواهُ مسلمٌ
৪/৪। আবূ আব্দুল্লাহ জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ আনসারী (র:) বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা নবী (স:)-এর সাথে এক অভিযানে ছিলাম। তিনি বললেন, “মদীনাতে কিছু লোক এমন আছে যে, তোমরা যত সফর করছ এবং যে কোন উপত্যকা অতিক্রম করছ, তারা তোমাদের সঙ্গে রয়েছে। অসুস্থতা তাদেরকে মদীনায় থাকতে বাধ্য করেছে।” আর একটি বর্ণনায় আছে যে, “তারা নেকীতে তোমাদের অংশীদার।”
৫/৫.ورواهُ البخاريُّ عن أنسٍ ، قَالَ : رَجَعْنَا مِنْ غَزْوَةِ تَبُوكَ مَعَ النَّبيِّ ، فقال : ্র إنَّ أقْواماً خَلْفَنَا بالْمَدِينَةِ مَا سَلَكْنَا شِعْباً وَلاَ وَادياً ، إلاّ وَهُمْ مَعَنَا ؛ حَبَسَهُمُ العُذْرُ
৫/৫। সহীহ বুখারীতে আনাস < থেকে এরূপ বর্ণনা রয়েছে যে, নবী (স:)-এর সাথে তাবূক অভিযান থেকে আমাদের প্রত্যাবর্তনকালে তিনি বললেন যে, “আমাদের পিছনে মদীনায় এরূপ কিছু লোক আছে যারা প্রত্যেক গিরিপথ বা উপত্যকা অতিক্রমকালে আমাদের সাথে রয়েছে। বিশেষ ওজর তাদেরকে ঘরে থাকতে বাধ্য করেছে।”
৬/৬.وعَنْ أَبِي يَزيدَ مَعْنِ بنِ يَزيدَ بنِ الأخنسِ ، وهو وأبوه وَجَدُّه صحابيُّون ، قَالَ : كَانَ أبي يَزيدُ أخْرَجَ دَنَانِيرَ يَتَصَدَّقُ بِهَا ، فَوَضعَهَا عِنْدَ رَجُلٍ في الْمَسْجِدِ ، فَجِئْتُ فأَخذْتُها فَأَتَيْتُهُ بِهَا . فقالَ : واللهِ ، مَا إيَّاكَ أرَدْتُ ، فَخَاصَمْتُهُ إِلى رسولِ اللهِ ، فقَالَ : ্র لكَ مَا نَوَيْتَ يَا يزيدُ ، ولَكَ ما أخَذْتَ يَا مَعْنُ গ্ধ. رواهُ البخاريُّ .
৬/৬। আবূ ইয়াযীদ মা’ন ইবনে ইয়াযীদ ইবনে আখনাস < – তিনি (মা’ন) এবং তাঁর পিতা ও দাদা সকলেই সাহাবী—তিনি বলেন, আমার পিতা ইয়াযীদ দান করার জন্য কয়েকটি স্বর্ণমুদ্রা বের করলেন। অতঃপর তিনি সেগুলি (দান করতে) মসজিদে একটি লোককে দায়িত্ব দিলেন। আমি (মসজিদে) এসে তার কাছ থেকে (অন্যান্য ভিক্ষুকের মত) তা নিয়ে নিলাম এবং তা নিয়ে বাড়ী এলাম। (যখন আমার পিতা এ ব্যাপারে অবগত হলেন তখন) বললেন, আল্লাহরকসম! তোমাকে দেওয়ার নিয়ত আমার ছিল না। (ফলে এগুলি আমার জন্য হালাল হবে কি না তা জানার উদ্দেশ্যে) আমি আমার পিতাকে নিয়ে রসূল (স:)-এর খিদমতে উপস্থিত হলাম। তিনি বললেন, “হে ইয়াযীদ! তোমার জন্য সেই বিনিময় রয়েছে যার নিয়ত তুমি করেছ এবং হে মা’ন! তুমি যা নিয়েছ তা তোমার জন্য হালাল।”
৭/৭. وَعَنْ أَبِي إسحَاقَ سَعدِ بنِ أبي وَقَّاصٍ مالِكِ بنِ أُهَيْب بنِ عبدِ مَنَافِ بنِ زُهرَةَ بنِ كِلاَبِ بنِ مُرَّةَ بنِ كَعبِ بنِ لُؤيٍّ القُرشِيِّ الزُّهريِّ ، أَحَدِ العَشَرَةِ المشهودِ لَهُم بِالْجَنَّةِ ، قَالَ : جَاءَنِي رسولُ اللهِ يَعُودُنِي عَامَ حَجَّةِ الوَدَاعِ مِنْ وَجَعٍ اشْتَدَّ بي ، فقُلْتُ : يَا رَسُولَ اللهِ ، إنِّي قَدْ بَلَغَ بي مِنَ الوَجَعِ مَا تَرَى ، وَأَنَا ذُو مالٍ وَلا يَرِثُني إلا ابْنَةٌ لِي ، أفأَتَصَدَّقُ بِثُلُثَيْ مَالِي ؟ قَالَ : ্র لاَ গ্ধ ، قُلْتُ : فالشَّطْرُ يَا رَسُولَ اللهِ ؟ فقَالَ : ্র لا গ্ধ ، قُلْتُ : فالثُّلُثُ يَا رَسُولَ اللهِ ؟ قَالَ : ্রالثُّلُثُ والثُّلُثُ كَثيرٌ থ أَوْ كبيرٌ থ إنَّكَ إنْ تَذَرْ وَرَثَتَكَ أغنِيَاءَ خيرٌ مِنْ أنْ تَذَرَهُمْ عَالَةً يتكفَّفُونَ النَّاسَ ، وَإنَّكَ لَنْ تُنفِقَ نَفَقَةً تَبْتَغي بِهَا وَجهَ اللهِ إلاَّ أُجِرْتَ عَلَيْهَا حَتَّى مَا تَجْعَلُ في فِيِّ امْرَأَتِكَগ্ধ ، قَالَ : فَقُلتُ : يَا رسولَ اللهِ ، أُخلَّفُ بعدَ أصْحَابي ؟ قَالَ : ্র إِنَّكَ لَنْ تُخَلَّفَ فَتَعملَ عَمَلاً تَبتَغي بِهِ وَجْهَ اللهِ إلاَّ ازْدَدتَ بِهِ دَرَجةً ورِفعَةً ، وَلَعلَّكَ أنْ تُخَلَّفَ حَتّى يَنتَفِعَ بِكَ أقْوَامٌ وَيُضَرَّ بِكَ آخرونَ . اَللهم أَمْضِ لأصْحَابي هِجْرَتَهُمْ ولاَ تَرُدَّهُمْ عَلَى أعقَابهمْ ، لكنِ البَائِسُ سَعدُ بْنُ خَوْلَةَ গ্ধ يَرْثي لَهُ رَسُولُ اللهِ أنْ ماتَ بمَكَّة . مُتَّفَقٌ عليهِ .
৭/৭। সা’দ বিন আবী অক্কাস (র) বলেন, যে দশজন সাহাবীকে জান্নাতের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছিল ইনি তাঁদের মধ্যে একজন-। বিদায় হজ্জ্বের বছর রসূলুল্লাহ(স:) আমার রগ্ন অবস্থায় আমাকে দেখা করতে এলেন। সে সময় আমার শরীরে চরম ব্যথা ছিল। আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমার (দৈহিক) জ্বালা-যন্ত্রণা কঠিন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে–যা আপনি স্বচক্ষে দেখছেন। আর আমি একজন ধনী মানুষ; কিন্তু আমার উত্তরাধিকারী বলতে আমার একমাত্র কন্যা। তাহলে আমি কি আমার মাল-সম্পদের দুই তৃতীয়াংশ দান করে দেব?’ তিনি বললেন, “না।” আমি বললাম, ‘তাহলে অর্ধেক মাল হে আল্লাহররসূল!’ তিনি বললেন, “না।” আমি বললাম, ‘তাহলে কি এক তৃতীয়াংশ দান করতে পারি?’ তিনি বললেন, “এক তৃতীয়াংশ (দান করতে পার), তবে এক তৃতীয়াংশও অনেক। কারণ এই যে, তুমি যদি তোমার উত্তরাধিকারীদের ধনবান অবস্থায় ছেড়ে যাও, তাহলে তা এর থেকে ভাল যে, তুমি তাদেরকে কাঙ্গাল করে ছেড়ে যাবে এবং তারা লোকের কাছে হাত পাতবে। (মনে রাখ,) আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে তুমি যা ব্যয় করবে তোমাকে তার বিনিময় দেওয়া হবে। এমনকি তুমি যে গ্রাস তোমার স্ত্রীর মুখে তুলে দাও তারও তুমি বিনিময় পাবে।” আমি বললাম, ‘হে আল্লাহররসূল! আমি কি আমার সঙ্গীদের ছেড়ে পিছনে (মক্কায়) থেকে যাব?’ তিনি বললেন, “তুমি যদি তোমার সঙ্গীদের মরার পর জীবিত থাক এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে কোন কাজ কর, তাহলে তার ফলে তোমার মর্যাদা ও সম্মান বর্ধন হবে। আর সম্ভবতঃ তুমি বেঁচে থাকবে। এমনকি তোমার দ্বারা কিছু লোক (মু’মিনরা) উপকৃত হবে। আর কিছু লোক (কাফেররা) ক্ষতিগ্রস্থ — হবে। হে আল্লাহ! তুমি আমার সাহাবীদেরকে হিজরতে পরিপূর্ণতা দান কর এবং তাদেরকে (হিজরত থেকে) পিছনে ফিরিয়ে দিও না। কিন্তু মিসকীন সা’দ ইবনে খাওলা।” তাঁর মৃত্যু মক্কায় হওয়ার জন্য নবী (স:) দুঃখ ও শোক প্রকাশ করেন।
৮/৮.وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ عَبدِ الرَّحمَانِ بنِ صَخرٍ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ الله : ্র إنَّ الله لاَ ينْظُرُ إِلى أجْسَامِكُمْ ، وَلاَ إِلَى صُوَرِكمْ ، وَلَكن ينْظُرُ إِلَى قُلُوبِكُمْ وَأَعمَالِكُم গ্ধ. رواه مسلم
৮/৮। আবূ হুরাইরাহ আব্দুর রহমান বিন সাখ্র < কর্তৃক বর্ণিত, রসূলুল্লাহ(স:) বলেছেন, “নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা তোমাদের দেহ এবং তোমাদের আকৃতি দেখেন না, বরং তিনি তোমাদের অন্তরের ও আমল দেখেন।”
৯/৯. وعَنْ أَبِي موسى عبدِ اللهِ بنِ قيسٍ الأشعريِّ ، قَالَ : سُئِلَ رَسُولُ اللهِ عَنِ الرَّجُلِ يُقاتلُ شَجَاعَةً ، ويُقَاتِلُ حَمِيَّةً، ويُقَاتِلُ رِيَاءً، أَيُّ ذٰلِكَ في سبيلِ الله ؟ فَقَالَ رَسُول الله : ্র مَنْ قَاتَلَ لِتَكونَ كَلِمَةُ اللهِ هي العُلْيَا ، فَهوَ في سَبِيلِ اللهِ গ্ধ. مُتَّفَقٌ عَلَيهِ .
৯/৯। আবূ মূসা আব্দুল্লাহ ইবনে কায়স আশআরী (র) বলেন, আল্লাহররসূল (স:)-কে এমন ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল, যে বীরত্ব প্রদর্শনের জন্য যুদ্ধ করে, অন্ধ পক্ষপাতিত্বের জন্য যুদ্ধ করে এবং লোক প্রদর্শনের জন্য (সুনাম নেওয়ার উদ্দেশ্যে) যুদ্ধ করে, এর কোন্ যুদ্ধটি আল্লাহরপথে হবে? আল্লাহররসূল (স:) বললেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহর কালেমাকে উঁচু করার উদ্দেশ্যে যুদ্ধ করে, একমাত্র তারই যুদ্ধ আল্লাহর পথে হয়।”
১০/১০.وعَنْ أَبِي بَكرَةَ نُفيع بنِ الحارثِ الثقَفيِّ : أَنَّ النَّبيَّ ، قَالَ : ্র إِذَا التَقَى المُسلِمَان بسَيْفَيهِمَا فالقَاتِلُ وَالمَقْتُولُ في النّارِ গ্ধ قُلتُ : يا رَسُولَ اللهِ! هَذا القَاتِلُ فَمَا بَالُ المقْتُولِ ؟ قَالَ : ্র إنَّهُ كَانَ حَريصاً عَلَى قتلِ صَاحِبهِ গ্ধ. مُتَّفَقٌ عليهِ.
১০/১০। আবূ বাক্রাহ নুফাই বিন হারেস সাক্বাফী < হতে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ(স:) বলেন, “যখন দু’জন মুসলমান তরবারি নিয়ে আপোসে লড়াই করে, তখন হত্যাকারী ও নিহত দু’জনই দোযখে যাবে।” আমি বললাম, ‘হে আল্লাহররসূল! হত্যাকারীর দোযখে যাওয়া তো স্পষ্ট; কিন্তু নিহত ব্যক্তির ব্যাপার কী?’ তিনি বললেন, “সেও তার সঙ্গীকে হত্যা করার জন্য লালায়িত ছিল।”
১১/১১.وعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ ، قَالَ : قالَ رَسُول الله : ্র صَلاةُ الرَّجلِ في جمَاعَةٍ تَزيدُ عَلَى صَلاتهِ في سُوقِهِ وبيتهِ بضْعاً وعِشرِينَ دَرَجَةً ، وَذَلِكَ أنَّ أَحدَهُمْ إِذَا تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ الوُضوءَ ، ثُمَّ أَتَى المَسْجِدَ لا يُرِيدُ إلاَّ الصَّلاةَ ، لاَ يَنْهَزُهُ إِلاَّ الصَلاةُ : لَمْ يَخْطُ خُطْوَةً إِلاَّ رُفِعَ لَهُ بِهَا دَرجَةٌ ، وَحُطَّ عَنْهُ بها خَطِيئَةٌ حَتَّى يَدْخُلَ المَسْجِدَ ، فإِذا دَخَلَ المَسْجِدَ كَانَ في الصَّلاةِ مَا كَانَتِ الصَّلاةُ هِي تَحْبِسُهُ ، وَالمَلائِكَةُ يُصَلُّونَ عَلَى أَحَدِكُمْ مَا دَامَ في مَجْلِسِهِ الَّذِي صَلَّى فِيهِ ، يَقُولُونَ : اَللهم ارْحَمْهُ ، اَللهم اغْفِرْ لَهُ ، اَللهم تُبْ عَلَيهِ ، مَا لَم يُؤْذِ فيه ، مَا لَمْ يُحْدِثْ فِيهِ গ্ধ . مُتَّفَقٌ عليه ، وهذا لفظ مسلم .
১১/১১। আবূ হুরাইরাহ < হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (স:) বলেছেন, “মানুষের জামাআতের সঙ্গে নামায পড়ার নেকী, তার বাজারে ও বাড়ীতে নামায পড়ার চেয়ে (২৫ বা ২৭) গুণ বেশী। আর তা এ জন্য যে, যখন কোন ব্যক্তি উত্তমরূপে ওযূ করে সালাত আদায়ের উদ্দেশ্যে মসজিদে আসে এবং সালাতই তাজক মসজিদে নিয়ে যায়, তখন তার মসজিদে প্রবেশ করা পর্যš— প্রত্যেক পদ¶েপের বিনিময়ে একটি মর্যাদা উন্নত হয় ও একটি পাপ মোচন করা হয়। অতঃপর যখন সে মসজিদে প্রবেশ করে, তখন যে পর্যন্ত— সালাত তাকে (মসজিদে) আটকে রাখে, সে পর্যন্ত— সে নামাযের মধ্যেই থাকে। আর ফিরিশতারা তোমাদের কোন ব্যক্তির জন্য সে পর্যš— রহমতের দুআ করতে থাকেন—যে পর্যন্ত— সে ঐ স্থানে বসে থাকে, যে স্থানে সে সালাত আদায় করেছে। তাঁরা বলেন, ‘হে আল্লাহ! এর প্রতি দয়া কর, হে আল্লাহ! একে ক্ষমা কর, হে আল্লাহ! এর তওবাহ কবুল কর।’ (ফিরিশতাদের এই দুআ সে পর্যš— চলতে থাকে) যে পর্যš— সে কাউকে কষ্ট না দেয়, যে পর্যন্ত— তার ওযূ নষ্ট না হয়।”
১২/১২.وَعَنْ أَبِي العبَّاسِ عَبدِ اللهِ بنِ عَبَّاسِ بنِ عَبدِ المُطَّلِبِ رَضِيَ اللهُ عنهما ، عَن رَسُول الله ، فِيمَا يَروِي عَن رَبّهِ تَبَارَكَ وَتَعَالى ، قَالَ : ্র إنَّ اللهَ كَتَبَ الحَسَنَاتِ والسَّيِّئَاتِ ثُمَّ بَيَّنَ ذلِكَ ، فَمَنْ هَمَّ بحَسَنَةٍ فَلَمْ يَعْمَلْهَا كَتَبَها اللهُ تَبَارَكَ وتَعَالى عِنْدَهُ حَسَنَةً كامِلَةً ،وَإنْ هَمَّ بهَا فَعَمِلَهَا كَتَبَهَا اللهُ عَشْرَ حَسَناتٍ إِلى سَبْعمئةِ ضِعْفٍ إِلى أَضعَافٍ كَثيرةٍ ، وإنْ هَمَّ بِسَيِّئَةٍ فَلَمْ يَعْمَلْهَا كَتَبَهَا اللهُ تَعَالَى عِنْدَهُ حَسَنَةً كَامِلةً ، وَإنْ هَمَّ بِهَا فَعَمِلَهَا كَتَبَهَا اللهُ سَيِّئَةً وَاحِدَةً গ্ধ مُتَّفَقٌ عليهِ .
১২/১২। আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (র) থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ(স:) তাঁর বর্কতময় মহান প্রভু থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন যে, “নিশ্চয় আল্লাহ পুণ্যসমূহ ও পাপসমূহ লিখে দিয়েছেন। অতঃপর তিনি তার ব্যাখ্যাও করে দিয়েছেন। যে ব্যক্তি কোন নেকী করার সংকল্প করে; কিন্তু সে তা কর্মে বাস্তবায়িত করতে পারে না, আল্লাহ তাবারাকা অতাআলা তার জন্য (কেবল নিয়ত করার বিনিময়ে) একটি পূর্ণ নেকী লিখে দেন। আর সে যদি সংকল্প করার পর কাজটি করে ফেলে, তাহলে আল্লাহ তার বিনিময়ে দশ থেকে সাতশ গুণ, বরং তার চেয়েও অনেক গুণ নেকী লিখে দেন। পক্ষান্তরে যদি সে একটি পাপ করার সংকল্প করে; কিন্তু সে তা কর্মে বাস্তবায়িত না করে, তাহলে আল্লাহ তাআলা তাঁর নিকট একটি পূর্ণ নেকী হিসাবে লিখে দেন। আর সে যদি সংকল্প করার পর ঐ পাপ কাজ করে ফেলে, তাহলে আল্লাহ মাত্র একটি পাপ লিপিবদ্ধ করেন।”

তাহক্বীক রিয়াযুস স্বা-লিহীন (আর্ট পেপার)
Reviews
There are no reviews yet.