ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম
ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম মূলত প্রখ্যাত শায়খ মুহাম্মাদ বিন সালেহ আল উসাইমীন (রহঃ) এর বিভিন্ন ফাতাওয়ার সংকলন। ইসলামের পাঁচটি স্তম্ব অর্থ্যাৎ (ঈমান, নামায, রোজা, হজ্জ ও যাকাত) সম্পর্কে মানুষের প্রশ্নের অন্ত নেই, জিজ্ঞাসার শেষ নেই। শায়খ এখানে ঐ সকল জিজ্ঞাসার দলীল ভিত্তিক এবং সহজ সাবলীল নির্ভরযোগ্য জবাব প্রদান করেছেন। প্রতিটি জবাব পবিত্র কুরআন ও রাসুলূল্লাহ (সাঃ) এর বিশুদ্ধ হাদীস ও পুর্বসুরী নির্ভরযোগ্য উলামাদের মতামত থেকে দেয়া হয়েছে। আশা করি তা পাঠকের জিজ্ঞাসার যথাযথ জবাব দানে সক্ষম হবে।
ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম
মূলঃ
শায়খ মুহাম্মাদ বিন সালেহ আল-উসাইমীন(র:)
অনুবাদ:
আবদুল্লাহ্ শাহেদ আল-মাদানী
(লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, এম,এম,ফার্স্ট ক্লাশ)
মুহাঃ আবদুল্লাহ আল-কাফী
(লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়)
সম্পাদনা:
আকরামুজ্জামান বিন আবদুস সালাম
(লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়)
আব্দুল্লাহিল হাদী
(লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়)
মুহাঃ জাহিদুল ইসলাম
(লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়)
প্রকাশনায়
তাওহীদ পাবলিকেশন্স
ঢাকা, বাংলাদেশ
ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম
শায়খ মুহাম্মাদ বিন সালেহ আল-উসাইমীন (রঃ)-এর
সংক্ষিপ্ত জীবনী
নাম ও জন্ম তারিখঃ
তাঁর নাম আবূ আবদুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন ছালেহ বিন মুহাম্মাদ আত্- তামীমী। তিনি হিজরী ১৩৪৭ সালের ২৭ রামাযানের রাত্রিতে সউদী আরবের আল ক্বাসীম প্রদেশের উনাইযা শহরে জম্ম গ্রহণ করেন ।
শিক্ষা জীবনঃ
শিক্ষা জীবনের শুরুতে তিনি তাঁর নানার কাছ থেকে কুরআন শিক্ষা করেন। অতঃপর আরবী ভাষা ও অন্যান্য বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অর্জনের পর মাদ্রাসায় ভর্তি হন। তিনি অতি অল্প বয়সেই কুরআন মজীদ মুখস্থ করেন এবং হাদীস ও ফিক্হসহ কতিপয় পুস্তিকাও মুখস্থ করেন ।
অতঃপর তিনি তাওহীদ, ফিক্হ এবং নাহু শাস্ত্রের জ্ঞান অর্জন করার পর শায়খ আবদুর রাহমান বিন নাসির আল-সা’দী (রঃ)এর পাঠশালায় যোগদান করেন। সেখানে তিনি তাফসীর, হাদীস, ফারায়েয, ফিক্হ, উসূলে ফিক্হ এবং আরবী ব্যকরণ অধ্যয়ন করেন। যে সমস্ত শায়খদের ইলম, আকীদাহ এবং পাঠদান পদ্ধতির দ্বারা তিনি সবচেয়ে বেশী প্রভাবিত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে শায়খ আব্দুর রাহমান বিন নাসের আল-সা’দী (রঃ) সৰ্বপ্ৰথম ।
উনাইযাতে থাকাবস্থায় তিনি শায়খ আব্দুর রাহমান বিন আলী বিন আওদান (রঃ)এর নিকট ইলমে ফারায়েয এবং শায়খ আব্দুর রাজ্জাক আফীফী (রঃ)-এর নিকট ইলমে নাহু এবং ইলমে বালাগাত শিক্ষা করেন ।
রিয়াদ শহরে ইসলামিক শিক্ষা ইন্সটিটিউট খোলা হলে তিনি বন্ধুদের পরামর্শক্রমে এবং তাঁর উস্তাদ শায়খ আব্দুর রাহমান সা’দীর অনুমতিক্রমে তথায় ভর্তি হন। সেখানে তিনি দু’বছর অধ্যয়ন কালে শায়খ মুহাম্মাদ আল-আমীন শানকীতী, আব্দুল আজীজ নিব নাসের বিন রাশীদ এবং শায়খ আব্দুর রাহমান আল-আফ্রিকীসহ অন্যান্য উস্তাদদের নিকট থেকে শিক্ষা অর্জনের সুযোগ পান। এ সময়ই আল্লামা ইবনে বায (রঃ)-এর কাছে উপস্থিত হয়ে সহীহ বুখারী এবং ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রঃ)-এর লিখিত বিভিন্ন কিতাব অধ্যয়ন করেন। তিনি তাঁর কাছ থেকে হাদীস এবং ফিকহী মাজহাব সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞান অর্জন করেন। ইলম অর্জনের ক্ষেত্রে যাদের দ্বারা বিশেষভাবে প্রভাবিত হয়েছেন ইবনে বায (রঃ) ছিলেন তাঁদের মধ্যে দ্বিতীয় ।
অতঃপর তিনি ইমাম মুহাম্মাদ বিন সউদ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে একাডেমিক শিক্ষা সমাপ্ত করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ শিক্ষা সমাপ্ত করে উনাইযায় ফেরত এসে উনাইযা জামে মসজিদে পাঠ দান শুরু করেন। তাঁর উস্তাদ আব্দুর রাহমান সা’দী ইন্তেকাল করার পর উায়যা জামে মসজিদের ইমাম ও খতীবের দায়িত্ব পালনসহ উস্তাদের প্রতিষ্ঠিত উনায়যা কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীতে শিক্ষা দানের দায়িত্ব পালন করেন। ছাত্রের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকলে লাইব্রেরীতে স্থান দেয়া অসম্ভব হওয়ায় মসজিদেই ক্লাশ নেওয়া শুরু করেন। এ পর্যায়ে সউদী আরবের বাইরে থেকেও বিপুল সংখক ছাত্রের আগমণ ঘটতে থাকে। জীবনের শেষ কাল পর্যন্ত তিনি অত্র মসজিদে শিক্ষা দানে ব্যস্ত ছিলেন। সাউদী সরকারের উলামা পরিষদেরও তিনি সদস্য ছিলেন।
ব্যক্তিগত আমল-আখলাকঃ
শায়খ একজন উঁচু মানের আলেম হওয়ার সাথে সাথে উন্নত চরিত্রের অধিকারী ছিলেন । তিনি ছিলেন অত্যন্ত ধৈর্য্যশীল, বিনয়ী, নম্র এবং আল্লাহ ভীরু। জীবনের প্রতিটি কাজে তিনি রাসূল (সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর সুন্নাত বাস্তবায়নে সচেষ্ট থাকতেন। ফতোওয়া দানের ক্ষেত্রে তিনি তাড়াহুড়া না করে ধীরস্থীরতা অবলম্বন করতেন। তিনি মানুষের অভাব-অভিযোগের কথা শুনতেন এবং সাধ্যানুসারে তাদের প্রয়োজন পূরণ করতে সচেষ্ট থাকতেন। বিভিন্ন সমাজ সেবা মূলক সংগঠনকে তিনি বিশেষভাবে সহযোগিতা প্রদান করতেন ।
দাওয়াতী কর্মতৎপরতাঃ
তিনি ছিলেন বিশ্ববিখ্যাত একজন আলেম এবং দাঈ। পৃথিবীতে এমন কোন তালেবে ইলম পাওয়া যাবেনা, যে শায়খ ইবনে উছাইমীন সম্পর্কে অবগত নয় । প্রচণ্ড রোগে আক্রান্ত অবস্থায়ও তিনি মক্কা শরীফে দারস্ এবং তালীমের কাজ আঞ্জাম দিতেন। মৃত্যুর ছয়মাস পূর্বে তিনি চিকিৎসার জন্য আমেরিকা সফরে গিয়ে বিভিন্ন ইসলামী সেন্টারে উপস্থিত হয়ে লেকচার প্রদান করেন। তথায় তিনি জুমুআর খুৎবা দেন এবং ইমামতি করেন। সাউদী আরব আল কুরআন রেডিওতেও তিনি নিয়মিত শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর প্রদান করতেন ।
ইলমী খিদমতঃ
ফতোওয়া আরকানুল ইসলাম ছাড়াও তাঁর রচিত কিতাব ও পুস্তিকার সংখ্যা অনেক । তাঁর লেখনীর মধ্যে রয়েছেঃ-
১) শারহুল আকীদাহ আল-ওয়াসিতীয়াহ। ২) কাশফুশ্ শুবহাত । ৩) আল কাওয়ায়েদুল মুছলা ৪) শারহুল আরবাঈন আন নাবুবীয়াহ। ৫) কিতাবুল ইলম। ৬) আশ্ শারহুল মুমতিউ (সাত ভলিওম) ৭) শারহু ছালাছাতুল উসূল ৮) আল উছূল মিন ঈলমিল উচ্ছ্বল। এছাড়া রয়েছে তাঁর আরো অসংখ্য ক্যাসেট ও ছোট ছোট পুস্তিকা, যা তাঁর নামে প্রতিষ্ঠিত ইবনে উছাইমীন কল্যাণ সংস্থা বিশেষ গুরুত্ব সহকারে প্রচার করে থাকে। বর্তমানে তাঁর ইসলামের খিদমত সমূহ ওয়েব সাইটেও পাওয়া যায়।
পরলোক গমণঃ
এই স্বনামধন্য ও বিশ্ববরেণ্য আলেমে দ্বীন দীর্ঘ দিন ইসলামের খেদমত আন্জাম দেয়ার পর ১৪২১ হিঃ শাওয়াল মাসের ১৫ তারিখ মাগরিবের নামাযের সামান্য পূর্বে ইন্তেকাল করেন। তাঁর মৃত্যুতে সউদী আরবের বাদশাসহ রাজ পরিবারের সকল সদস্য, সে দেশের সকল আলেম এবং সর্বস্তরের জনগণ শোকাহত হন । বিশ্ব এক অপূরণীয় ক্ষতি অনুভব করে ।
আল্লাহর কাছে দু’আ করি তিনি যেন শায়খের সমস্ত দ্বীনি খেদমত কবূল করেন এবং তাঁকে জান্নাতুল ফেরদাউসে স্থান প্রদান করেন । আমীন
ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম
ভূমিকা
আল্লাহ্ তা’আলা এরশাদ করেনঃ “নিশ্চয় আল্লাহর নিকট মনোনিত দ্বীনহচ্ছে ইসলাম।” (সূরা আল-ঈমরান-১৯ )
তিনি আরো বলেন, “যে ব্যক্তি ইসলাম ছাড়া অন্য কোন দ্বীন অনুসন্ধান করবে, ওটা তার নিকট থেকে গ্রহণ করা হবে না। আর সে পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভূক্ত হবে।” (সূরা আল ঈমরান-৮৫ )
রাসূলুল্লাহ্ (স) বলেনঃ “ইসলাম ধর্মের ভিত্তি হচ্ছে পাঁচটি বিষয়ের উপর। ১) এ কথার স্বাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ্ ব্যতীত প্রকৃত কোন উপাস্য নেই, মুহাম্মাদ কে) আল্লাহর রাসূল ২) সালাত প্রতিষ্ঠা করা ৩) যাকাত প্রদান করা ৪) মাহে রামাযানে সিয়াম পালন করা এবং ৫) সাধ্য থাকলে আল্লাহর ঘরের হজ্জ পালন করা।” (বুখারী ও মুসলিম)
ইসলামের এই পাঁচটি ভিত্তি সম্পর্কে মানুষের প্রশ্নের অন্ত নেই, জিজ্ঞাসার শেষ নেই। তাই নির্ভরযোগ্য প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন, যুগের অন্যতম সেরা গবেষক আল্লামা শায়খ মুহাম্মাদ বিন ছালেহ্ আল-উছাইমীন (রহঃ) ঐ সকল জিজ্ঞাসার দলীল ভিত্তিক নির্ভরযোগ্য জবাব প্রদান করেছেন । প্রতিটি জবাব পবিত্র কুরআন, রাসূলুল্লাহ্ মা এর বিশুদ্ধ হাদীস ও পূর্বসূরী নির্ভরযোগ্য উলামাদের মতামত থেকে দেয়া হয়েছে। সেই জবাবগুলোকে একত্রিত করে বই আকারে বিন্যস্ত করেছেন জনাব ‘ফাহাদ বিন নাসের বিন ইবরাহীম আল-সুলাইমান’। নাম দিয়েছেন ‘ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম’। ইসলামী জ্ঞানের জগতে ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম বইটি অত্যন্ত মূল্যবান হওয়াই বাংলা ভাষায় আমরা তা অনুবাদ করার প্রয়োজন অনুভব করি । তাছাড়া বাংলা ভাষী মুসলমানদের জন্য এ ধরণের দলীল নির্ভর পুস্তকের খুবই অভাব ।
তাই ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম বইটিকে সম্মানিত পাঠক-পাঠিকাদের হাতে তুলে দিতে পেরে আমরা আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি জুবাইল দা’ওয়া সেন্টারের দা’ওয়া বিভাগের পরিচালক শায়খ খালেদ নাসের আল উমাইরির। তিনি ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম বইটি প্রকাশ করার ব্যাপারে যাবতীয় নির্দেশনা প্রদান করেছেন ।
সুবিজ্ঞ পাঠক সমাজের প্রতি বিশেষ নিবেদন, কোন প্রকার ভুল-ত্রুটি নজরে আসলে আমাদেরকে জানিয়ে বাধিত করবেন। যাতে করে পরবর্তী সংস্করণে তা সংশোধন করা যায়। হে আল্লাহ্ এই বইয়ের লেখক, অনুবাদক, সম্পাদক ও ছাপানোর কাজে সহযোগিতাকারী, তত্ববধানকারী এবং পাঠক-পাঠিকাদের সবাইকে উত্তম বিনিময় দান কর। সকলকে মার্জনা কর এবং এ কাজটিকে তোমার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে কবূল কর।
আবদুল্লাহ শাহেদ আল-মাদানী
মুহাম্মদ আবদুল্লাহ্ আল কাফী
ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম
সূচীপত্র
বিষয়ঃ
- শায়খ ইবনে উসাইমীন (রহঃ)এর সংক্ষিপ্ত জীবনী
- ভূমিকা
- অধ্যায়ঃ ঈমান
- তাওহীদ কাকে বলে? উহা কত প্রকার ও কি কি ?
- মক্কার কাফেরদের শির্ক কোন ধরণের ছিল? আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের মূলনীতি কি?
- আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত কারা?
- জান্নাতী দলের পরিচয়
- নাজাত প্রাপ্ত দলের বৈশিষ্ট কি?
- দ্বীনের মধ্যে মধ্যম পন্থা বলতে কি বুঝায়?
- আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের নিকট ঈমান অর্থ কি? ঈমান কি বাড়ে এবং কমে?
- হাদীসে জিবরীল এবং আবদুল কায়েসের হাদীসের মধ্যে সমন্বয়ঃ ঈমানের সত্তরের অধিক শাখা-প্রশাখা রয়েছে
- মসজিদে আসার অভ্যাস আছে, এমন ব্যক্তিকে কি আমরা মুমিন হিসাবে সাক্ষ্য দিতে পারি?
- আল্লাহ সম্পর্কে শয়তানের ওয়াস্ ওয়াসা (কুমন্ত্রনা)
- কাফেরের উপর কি ইসলাম গ্রহণ করা ওয়াজিব?
- যে ব্যক্তি ইলমে গায়েব দাবী করবে, তার হুকুম কি?
- মাতৃগর্ভে কি আছে তা আল্লাহই ভাল জানেন
- সূর্য কি পৃথিবীর চার দিকে ঘুরে?
- আল্লাহকে এক বলে সাক্ষ্য দেয়া এবং মুহাম্মদ (সাঃ)কে আল্লাহর রাসূল হিসাবে সাক্ষ্য দেয়ার অর্থ কি?
- লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ কিভাবে তাওহীদের সকল প্রকারকে অন্তর্ভূক্ত করতে পারে?
- মানুষ এবং জিন সৃষ্টির উদ্দেশ্য কি?
- আল্লাহর কাছে দু’আ কবূল হওয়ার শর্ত
- ইবাদতে ইখলাছ এবং জান্নাত লাভের কামনা
- আশা এবং ভয়ের ব্যাপারে আহলে সুন্নাত জামাতের মতামত কি?
- উপায় গ্রহণ আল্লাহর উপর ভরসা করার পরিপন্থী নয় ইসলামে উপায়-উপকরণ অবলম্বন করার হুকুম কি?
- ঝাড়-ফুঁকের বিধান কি? কুরআনের আয়াত লিখে গলায় ঝুলিয়েরাখার হুকুম কি?
- ঝাড়-ফুঁক করা কি আল্লাহর উপর (তাওয়াক্কুল) ভরসার পরিপন্থী? তাবীজ ব্যবহার করার হুকুম কি?
- পানাহারের পাত্রে চিকিৎসা স্বরূপ আয়াতুল কুরসী বা কুরআনের অন্য কোন আয়াত লিখে রাখা জায়েয আছে কি?
- কোন প্রকার পরিবর্তন, অস্বীকার কিংবা দৃষ্টান্ত পেশ করা ছাড়াই আল্লাহর নাম ও গুণাবলীতে বিশ্বাস স্থাপন করা ।
- আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর ক্ষেত্রে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আকীদাহ
- আল্লাহর নাম কি নির্দিষ্ট সংখ্যায় সীমিত?
- আল্লাহ রাব্বুল আলামীন উপরে আছেন । একজন নারীর সাক্ষ্য
- আল্লাহ তায়া’লা সুউচ্চ আরশের উপরে আছেন
- ‘আল্লাহ আরশের উপরে সমুন্নত’ এ কথাটির বিস্তারিত ব্যাখ্যা
- কখন ইনশা-আল্লাহ বলতে হবে?
- ইরাদাহ বা আল্লাহর ইচ্ছা কত প্রকার?
- আল্লাহর নামের ভিতরে ইলহাদ কাকে বলে? উহা কত প্রকার ও কি কি?
- আল্লাহর ‘চেহারা’, আল্লাহর ‘হাত’ ইত্যাদি সম্পর্কে
- আল্লাহর কোন নাম বা গুণ অস্বীকার করার হুকুম কি?
- আল্লাহর গুণাবলী কি মানুষের গুণাবলীর মতই?
- শেষ রাতে আল্লাহ দুনিয়ার আকাশে নেমে আসেন। একথার ব্যাখ্যা
- আল্লাহকে দেখার মাসআলায় সালাফে সালেহীনের অভিমত কি? জিনের আক্রমণ থেকে বাঁচার উপায় কি?
- জিনেরা কি গায়েব জানে?
- আল্লাহর নবী (সাঃ)কে হাবীবুল্লাহ বলার বিধান
- দুনিয়ার স্বার্থ হাসিলের জন্য নবী (সাঃ)এর প্রশংসা করার হুকুম কি?
- নবী কি নূরের তৈরী?
- ইমাম মাহদীর আগমণ সংক্রান্ত হাদীসগুলো কি সহীহ?
- ইয়াজুজ-মাজুজ কারা?
- নবীগণ কেন উম্মাতকে দাজ্জালের ফিতনা থেকে সাবধান করেছেন?
- যারা পরকালের জীবনকে অবিশ্বাস করে, তাদের কিভাবে বুঝানো সম্ভব?
- কবরের আযাব কি সত্য?
- স্বাভাবিক দাফন না হলেও কবরে আযাব হবে কবরের আজাব অস্বীকার করার বিধান
- পাপী মুমিনের কবরের আজাব কি হালকা করা হবে? শাফায়াত কাকে বলে? তা কত প্রকার ও কি কি?
- মুমিন ও মুশরিকদের শিশু সন্তানদের পরিণাম কি?
- জান্নাতে পুরুষদের জন্য হুর থাকার কথা বলা হয়েছে। প্রশ্ন হল মহিলাদের জন্য কি আছে?
- মহিলারা জাহান্নামের অধিকাংশ সংখ্যা মহিলা হওয়ার কারণ কি?
- তাকদীরের মাসআলা এড়িয়ে চলার বিধান
- মানুষ কি নিজ কর্ম সম্পাদনের ব্যাপারে স্বাধীন?
- সৃষ্টির পূর্বে মানুষের ভাগ্যে যা লেখা হয়েছে, তা কি দু’আর মাধ্যমে পরিবর্তন করা সম্ভব?
- রিজিক এবং বিবাহ কি লাওহে মাহফুজে লিখিত আছে?
- মুসিবত নাযিল হলে যে ব্যক্তি অসন্তুষ্ট হয়, তার হুকুম কি?
- রোগ কি এক জনের শরীর থেকে অন্যজনের শরীরে স্থানান্তরিত হয়? কোন কিছু দেখে বা শুনে কল্যাণ-অকল্যাণ নির্ধারণ করার বিধান
- বদ নজরের প্রকৃতি কি এবং তার চিকিৎসা কি?
- আকীদার মাসআলায় কি অজ্ঞতার অযুহাত গ্রহণ করা হবে? | আল্লাহর আইন ছেড়ে মানব রচিত আইন দ্বারা রাষ্ট্র পরিচালনা
- করার হুকুম কি?
- গাইরুল্লাহ-এর নৈকট্য হাসিলের জন্য পশু কুরবানী করা বড় শিক আল্লাহ তায়া’লা বা তাঁর রাসূল অথবা দ্বীন নিয়ে হাসি ঠাট্টা করার হুকুম কি?
- কবরবাসীর কাছে দু’আ করার বিধান কি? আল্লাহর ওলী হওয়ার সঠিক আলামত কি?
- যাদু কাকে বলে? যাদু শিক্ষার হুকুম কি?
- যাদুর মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে মিল-মিশের ব্যবস্থা করার হুকুম কি? গণক কাকে বলে? গণকের কাছে যাওয়ার হুকুম কি?
- রিয়া বা মানুষকে শুনানোর নিয়তে ইবাদত করার হুকুম কি? কুরআনের শপথ করার হুকুম কি?
- গাইরুল্লাহর নামে শপথ করার হুকুম কি?
- কবরের তাওয়াফ, কবরবাসীর কাছে দু’আ এবং তাদের জন্য নযর-মানত করার হুকুম কি?
- নবী (স) এর কবর মসজিদের ভিতরে হওয়ার জবাব
- কবরের উপরে গম্বুজ নির্মাণ করা কি?
- মসজিদে দাফন করার হুকুম কি?
- নবী (সাঃ) এর কবর যিয়ারতের নিয়তে সফর করার হুকুম কি?
- কবরের মাধ্যমে বরকত কামনা এবং তার চার পার্শ্বে তাওয়াফ করা হারাম ।
- প্রাণী অথবা মানুষের ছবি বিশিষ্ট কাপড় পরিধান করে সালাত পড়ার হুকুম কি?
- ঘরের দেয়ালে ছবি ঝুলানোর বিধান কি?
- ক্যামেরার মাধ্যমে ছবি উঠানোর বিধান কি?
- ইসলামে বিদআতের কোন স্থান নেই ।
- ঈদে মীলাদুন নবী পালনের লকম কিছু
- তওবা করার পর কি ছেড়ে দেয়া সালাতের কাযা আদায় করত হবে?
- বেনামাযী সন্তানদের ব্যাপারে পরিবারের কর্তার কর্তব্য কি? সফর অবস্থায় আযান দেয়ার বিধান কি?
- একক ব্যক্তির জন্য আযান ও ইক্বামতের বিধান কি?
- দু’সালাত একত্রিত আদায় করলে কি আলাদা আলাদা ইক্বামত দিতে হবে? নফল সালাতের জন্য ইক্বামত আছে কি?
- “আসালাতু খাইরুম্ মিনান্ নাওম” কথাটি কি ফজরের প্রথম আযানে বলতে হবে না দ্বিতীয় আযানে?
- টেপ রেকর্ডারের মাধ্যমে আযান দিলে হবে কি?
- মসজিদে প্রবেশ করার সময় দেখলাম আযান হচ্ছে। এসময় কোন্ কাজটি উত্তম?
- আযানের জবাবে ‘রাযিতু বিল্লা-হি রাব্বা, ওয়াবিল ইসলা-মি দী- না, ওয়াবি মুহাম্মাদিন নাবিয়্যা ওয়া রাসূলা।’ দু’আটি কখন বলতে হবে?
- আযানের দু’আর শেষে “ইন্নাকা লা তুলিফুল মীআ’দ” বাক্যটি বৃদ্ধি করে পড়া কি সহীহ্ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত?
- ইকামতের শব্দগুলো কি মুক্তাদীদেরকেও বলতে হবে?
- ইকামতে ‘ক্বাদক্বামাতিচ্ সালাত’ বলার সময় ‘আক্কামাহাল্লাহু ওয়া আদামাহা’ বলা কি ঠিক?
- সালাত আদায় করার জন্য উত্তম সময় কি?
- অজ্ঞতা বশতঃ সময় হওয়ার আগেই সালাত আদায় করে নেয়ার বিধান কি?
- কাযা নামাযের তারতীব বা ধারাবাহিকতা
- এশা সালাতের জন্য মসজিদে প্রবেশ করে মনে পড়ল, মাগরিব সালাত বাকী আছে, এখন তার করণীয় কি?
- একাধিক সালাত ছুটে গেলে কাযা আদায় করার নিয়ম কি? অধিক পাতলা পোশাকে সালাত আদায় করার বিধান কি?
- সামনে, পিছনে ও উভয় পার্শে খোলা থাকে এমন পোশাক পরে নারীর সালাত হবে কি?
- নিক্কাব ও হাত মোজা পরিধান করে কি নারীর সালাত আদায় করা বৈধ?
- অজানা অবস্থায় কাপড়ে নাপাকি নিয়ে সালাত পড়লে তার বিধান কি ?
- টাখনুর নীচে কাপড় ঝুলিয়ে পরিধান করার শাস্তি কি?
- ফরয গোসল না করেই সালাত আদায় করে ফেললে করণীয় কি? সালাতরত অবস্থায় নাক থেকে রক্ত বের হলে কি করবে? কোন মসিজদে কবর থাকলে সেখানে সালাত আদায় করার বিধান কি ?
- টয়লেটের ছাদের উপর সালাত আদায় করার বিধান কি?
- মসজিদুল হারামের যমীনে (ঋষড়ড়ৎ) জুতা নিয়ে হাঁটার বিধান কি?
- ক্বিবলা থেকে সামান্য সরে গিয়ে সালাত আদায় করলে কি সালাত ফিরিয়ে পড়বে?
- একদল লোক ক্বিবলামুখী না হয়েই সালাত আদায় করে নিয়েছে। তাদের এই নামাযের কি হবে?
- নিয়ত মুখে উচ্চারণ করার বিধান কি?
- নফল আদায়কারী ব্যক্তির পিছনে ফরয সালাত আদায় করার বিধান কি?
- মুসাফিরের মুকীম ইমামের পিছনে সালাত পড়ার বিধান ।
- সালাতে শামিল হওয়ার জন্য দ্রুত পায়ে হেঁটে আসার বিধান কি? জামাআত চলাবস্থায় ইমামের সাথে রাকাআত ধরার জন্য দ্রুত চলার বিধান কি?
- মুসল্লীদের মনোযোগে ব্যাঘাত হয় এমনভাবে উচ্চৈঃস্বরে কুরআন তেলাওয়াত করার বিধান কি?
- তাহিয়্যাতুল মসজিদ নামাযের বিধান
- মসজিদুল হারামে নারী-পুরুষের কাতারের নিয়ম
- কাতার থেকে শিশু-কিশোরদেরকে সরিয়ে দেয়া জায়েয কি?
- দু’স্তম্ভের মধ্যবর্তী স্থানে সালাত আদায় করার বিধান কি?
- নারীদের জন্য উত্তম কাতার কাতার কোনটি?
- মসজিদের বাইরে সংশ্লিষ্ট রাস্তায় সালাত আদায় করার বিধান কি?
- কাতারে মুসল্লীদের পরস্পর কাঁধের সাথে কাঁধ এবং পায়ের সাথে পা মিলানোর বিধান কি?
- নামাযে রফউল ইয়াদায়ন বা হাত উত্তোলনের বিধান কি?
- ইমামকে রুকূ অবস্থায় পেলে কয়টি তাকবীর দিতে হবে?
- নামাযে কোথায় হাত বাঁধতে হবে?
- স্বশব্দে ‘বিসমিল্লাহ্…” পাঠ করার বিধান কি?
- দু’আ ইস্তেফতাহ্ বা সালাত শুরুর দু’আ (ছানা) পাঠ করার হুকুম কি ?
- ‘আমীন’ বলা কি সুন্নাত?
- (ইয়্যাকানা’বুদু ওয়া ইয়্যাকা নাসতাঈন) পাঠ করার সময় ‘আমরা আল্লাহ্র কাছে সাহায্য চাই’ । এরূপ কথা বলার বিধান কি? নামাযে সূরা ফাতিহা পাঠ করার বিধান কি ?
- ইমামের পিছনে মুক্তাদী কখন সূরা ফাতিহা পাঠ করবে? সালাত বা কুরআন তেলাওয়াতের সময় কিভাবে অন্তর নম্র করা যায়?
- সূরা ফাতিহা পাঠ করার পর কিছুক্ষণ চুপ থাকার বিধান কি?
- ফজরের এক রাকাআত সালাত ছুটে গেলে বাকী রাকাআতটি কি স্বশব্দে না নীরবে পাঠ করবে?
- রুকু থেকে উঠার পর আবার হাত বাঁধার মাসআলা ।
- ‘রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদু’ বলার পর ‘ওয়াশ্ শুরু’ শব্দ বৃদ্ধি করে বলার বিধান কি?
- সিজদায় যাওয়ার পদ্ধতি কি?
- সামনের দিকে অতিরিক্ত বেড়ে গিয়ে সিজদা করার বিধান কি? সিজদার কারণে কপালে দাগ পড়া কি নেক লোকের পরিচয়? দু’সিজদার মধ্যবর্তী সময়ে তর্জনী আঙ্গুল নাড়ানোর বিধান কি? জালসা ইস্তেরাহা করার বিধান কি?
- তাশাহুদের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত তর্জনী আঙ্গুল নড়ানোর বিধান কি? প্রথম তাশাহুদে শুধু তাশাহুদের শব্দগুলো পাঠ করবে? নাকি দরূদও পাঠ করবে?
- নামাযে তাওয়ারুক করার বিধান কি?
- শুধুমাত্র ডান দিকে একবার সালাম ফেরানো কি যথেষ্ট হবে?
- সালাত শেষ হওয়ার সাথে সাথেই কি ইমাম উঠে চলে যেতে পারেন? নাকি কিছুটা অপেক্ষা করবেন?
- সালাত শেষ করেই পার্শ্ববর্তী মুসল্লীর সাথে মুছাফাহা করা
- তাসবীহ্ দানা দ্বারা তাসবীহ্ পড়ার বিধান কি?
- নামাযের পর সুন্নাত সম্মত যিকির সমূহ কি কি?
- নামাযের পর হাত উত্তোলন করে দু’আ করার বিধান কি?
- ফরয সালাতান্তে সমস্বরে সূরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসী প্রভৃতি পাঠ করার বিধান কি?
- টয়লেট সারতে গেলে জামাআত ছুটে যাওয়ার আশংকা থাকলে কি করবে?
- সালাত পড়ার সময় চোখ বন্ধ রাখার বিধান কি?
- সালাতরত অবস্থায় ভুলক্রমে আঙ্গুল ফুটালে কি সালাত বাতিল হয়ে যাবে?
- সুতরার বিধান কি? এবং এর সীমা কতটুকু?
- মসজিদে হারামে মুসল্লীর সম্মুখ দিয়ে অতিক্রম করার বিধান কি? নামাযের সময় মুসল্লীদের সম্মুখে বৈদ্যুতিক হিটার রাখার বিধান কি?
- নামাযের ক্বিরাতে জান্নাত ও জাহান্নামের আলোচনা আসলে জান্নাতের প্রার্থনা এবং জাহান্নাম থেকে আশ্রয় কামনা করা কি জায়েয?
- সাহু সিজদা করার কারণ সমূহ কি কি?
- ইমাম ভুলক্রমে এক রাকাআত সালাত বৃদ্ধি করেছেন
- তাহাজ্জুদ নামাযে ভুলক্রমে তৃতীয় রাকাআতের জন্য দাঁড়িয়ে পড়লে করণীয় কি?
- অজ্ঞতা বশতঃ তওয়াফে এফাযা ছেড়ে দিলে করণীয় কি?
- তওয়াফের সময় হজরে আসওয়াদকে চুম্বন করা আবশ্যক নয়
- পূর্ণ সাত চক্কর তওয়াফ না করলে ওমরা হবে না
- হজ্জ-ওমরায় নিজের ভাষায় দু’আ করাই উত্তম
- তওয়াফ-সাঈতে কি বিশেষ কোন দু’আ আছে?
- ওমরা শেষ করার পর ইহরামের কাপড়ে নাপাকী দেখতে পেলে কি করবে?
- মাক্কামে ইবরাহীমের পদচিহ্ন কি প্রকৃতই ইবরাহীম (সা) এর পদচিহ্ন
- কা’বা শরীফের গিলাফ ধরে দু’আ বা কান্নাকাটি করা জায়েয কি?
- ওমরায় মাথা মুণ্ডন বা চুল ছোট করার বিধান কি?
- তামাত্তু হজ্জ সম্পর্কিত একটি মাসআলা
- তামাত্তু হজ্জের ইহরাম বেঁধে ওমরা শেষ চুল কাটেনি… তামাত্তুকারী কুরবানী দিতে পারে নি ।
- ওমরা করে জনৈক লোক নিজ দেশে গিয়ে মাথা মুণ্ডন করেছে… তামাত্তু হজ্জের ইহরাম বেঁধে ওমরা করে কোন কারণ বশতঃ হজ্জের ইচ্ছা পরিত্যাগ করেছে। তাকে কি কোন কাফ্ফারা দিতে হবে?
- তামাত্তু হজ্জের ইহরাম বাঁধার পর ওমরা শেষ করে অজ্ঞতা বশতঃ হালাল হয়নি।…
- আরাফাত থেকে ফেরার পথে মুযদালিফার রাস্তা হারিয়ে ফেলে … সামর্থ থাকা সত্বেও অন্যকে কঙ্কর নিক্ষেপের দায়িত্ব প্রদান করা কঙ্কর যদি হাওয বা গর্তের মধ্যে না পড়ে
- সাতটি কঙ্করের মধ্যে দু’একটি কঙ্কর হাওযে না পড়লে …
- যে কঙ্কর একবার নিক্ষিপ্ত হয়েছে তা কি পুনরায় নিক্ষেপ করা যাবে?
- তওয়াফে এফাযার পূর্বে হজ্জের সাঈ করা কি জায়েয? কখন জামরা আক্কাবায় কঙ্কর মারলে আদায় হবে? .
- বিশেষ করে ঈদের দিনের তওয়াফের পূর্বে সাঈ করা কি জায়েয?
- তওয়াফের পর কি সরাসরি সাঈ করতে হবে? নাকি বিলম্ব করা যাবে?
- ওমরায় যে ব্যক্তি মাথার এদিক ওদিক থেকে অল্প করে চুল কাটে কঙ্কর মারার সময় কি?
- জনৈক হাজী আরাফাতে অসুস্থ হয়ে পড়ায় মীনায় রাত কাটায়নি, কঙ্কর নিক্ষেপ করেনি এবং তাওয়াফে এফাযাও করেনি
- মুযদালিফার সীমা সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণে বাইরে অবস্থান করলে করণীয় কি?
- এফরাদ হজ্জকারী যদি তওয়াফে কুদূমের সাথে সাঈ করে নেয় কিরাণকারীর জন্য একটি তওয়াফ ও একটি সাঈ যথেষ্ট হবে? জনৈক ব্যক্তি রাত বরোটা পর্যন্ত মিনায় থেকে মক্কা চলে গেছে
- ১২ তারিখে সূর্যাস্তের পূর্বে মিনা ত্যাগ করার পর কাজ থাকার
- ১৩ জিলহজ্জ সকালে কঙ্কর মারা জায়েয আছে কি?
- ১২ তারিখে কঙ্কর না মারলে এবং বিদায়ী তওয়াফ না করলে রাতের বেলায় মিনায় স্থান না পেলে মানুষ কি করবে?
- বিদায়ী তওয়াফ করার পর মক্কায় অবস্থান করার বিধান?
- ওমরাকারীর জন্য বিদায়ী তওয়াফ করার বিধান কি?
- ইহরাম বাঁধার পর হজ্জ সম্পন্ন করতে বাধাপ্রাপ্ত হলে করণীয় কি?
- হজ্জের ইচ্ছা করার পর যদি তাকে নিষেধ করে দেয়া হয়, তবে হজ্জ করতে এসে পাপের কাজে লিপ্ত হলে কি হজ্জের সওয়াব কমে যাবে?
- জাল পাসপোর্ট বানিয়ে হজ্জ করলে হজ্জ হবে কি? আরো …….
ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম
অধ্যায়ঃ ঈমান
প্রশ্নঃ (১) তাওহীদ কাকে বলে? উহা কত প্রকার ও কিকি?
উত্তরঃ- তাওহীদ শব্দটি (,) ক্রিয়ামূল থেকে উৎপত্তি হয়েছে। এর আভিধানিক অর্থ কোন জিনিসকে একক হিসাবে নির্ধারণ করা। ‘না’ বাচক ও ‘হ্যাঁ” বাচক উক্তি ব্যতীত এটির বাস্তবায়ন হওয়া সম্ভব নয়। অর্থাৎ একককৃত বস্তু ব্যতীত অন্য বস্তু হতে কোন বিধানকে অস্বীকার করে একককৃত বস্তুর জন্য তা সাব্যস্ত করা । উদাহরণ স্বরূপ আমরা বলব, “আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন মা’বূদ নেই” একথার সাক্ষ্য দেয়া ব্যতীত কোন ব্যক্তির তাওহীদ পূর্ণ হবে না। যে ব্যক্তি এই সাক্ষ্য প্রদান করবে, সে আল্লাহ ছাড়া অন্যান্য সকল বস্তু হতে উলুহিয়্যাতকে (ইবাদত) অস্বীকার করে শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য তা সাব্যস্ত করবে। কারণ শুধুমাত্র নাফী বা ‘না’ বাচক বাক্যের মাধ্যমে কোন বস্তুকে গুণাগুণ থেকে মুক্ত করা হয়। আর শুধুমাত্র ‘হ্যাঁ’ বাচক বাক্যের মাধ্যমে কোন বস্তুর জন্য কোন বিধান সাব্যস্ত করলে সেই বিধানে অন্যের অংশ গ্রহণকে বাধা প্রদান করে না। যেমন উদাহরণ স্বরূপ যদি আপনি বলেন, “অমুক ব্যক্তি দাঁড়ানো’। এই বাক্যে আপনি তার জন্য দণ্ডায়মান হওয়াকে সাব্যস্ত করলেন। তবে আপনি তাকে দণ্ডায়মান গুণের মাধ্যমে একক হিসাবে সাব্যস্ত করলেন না। হতে পারে এই গুণের মাঝে অন্যরাও শরীক আছে। অর্থাৎ অমুক ব্যক্তির সাথে অন্যান্য ব্যক্তিগণও দাঁড়িয়ে থাকতে পারে। আর যদি বল, “যায়েদ ব্যতীত আর কেউ দাঁড়ানো নেই” আপনি দণ্ডায়মান হওয়াকে শুধুমাত্র যায়েদের সাথে সীমিত করে দিলেন। এই বাক্যে আপনি দণ্ডায়মানের মাধ্যমে যায়েদকে একক করে দিলেন এবং দাঁড়ানো গুণটিকে যায়েদ ব্যতীত অন্যের জন্য হওয়াকে অস্বীকার করলেন। এভাবেই তাওহীদের প্রকৃত রূপ বাস্তবায়ন হয়ে থাকে। অর্থাৎ নাফী (না বোধক) ও ইসবাত (হ্যাঁ বোধক) বাক্যের সমন্বয় ব্যতীত তাওহীদ কখনো প্রকৃত তাওহীদ হিসাবে গণ্য হবে না। মুসলিম বিদ্বানগণ তাওহীদকে তিনভাগে বিভক্ত করেছেন ।
১) তাওহীদুর রুবূবীয়্যাহ ২) তাওহীদুল উলুহীয়্যাহ
৩) তাওহীদুল আসমা অস্ সিফাত
কুরআন ও হাদীস গভীরভাবে গবেষণা করে আলেমগণ এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, তাওহীদ উপরোক্ত তিন প্রকারের মাঝে সীমিত ।
প্রথমতঃ তাওহীদে রুবূবীয়্যার বিস্তারিত পরিচয়ঃ
সৃষ্টি, রাজত্ব, কর্তৃত্ব ও পরিচালনায় আল্লাহকে এক হিসাবে বিশ্বাস করার নাম তাওহীদে রুবূবীয়্যাহ্ ।
১- সৃষ্টিতে আল্লাহর একত্বঃ
আল্লাহ একাই সব কিছুর সৃষ্টিকর্তা। তিনি ছাড়া অন্য কোন সৃষ্টিকর্তা নেই। আল্লাহ তাআ’লা বলেনঃ “আল্লাহ ছাড়া কোন স্রষ্টা আছে কি? যে তোমাদেরকে আকাশ ও যমীন হতে জীবিকা প্রদান করে । প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন মা’বূদ নেই ।” (সূরা ফাতিরঃ কাফিরদের অন্তসারশূন্য মা’বূদদেরকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে আল্লাহ বলেন, “সুতরাং যিনি সৃষ্টি করেন, তিনি কি তারই মত, যে সৃষ্টি করে না? তবুও কি তোমরা শিক্ষা গ্রহণ করবে না?” (সূরা নাহলঃ ১৭)
সুতরাং আল্লাহ তাআ’লাই একমাত্র সৃষ্টিকর্তা। তিনি সকল বস্তু সৃষ্টি করেছেন এবং সুবিন্যস্ত করেছেন। আল্লাহ তাআ’লার কর্ম এবং মাখলুকাতের কর্ম সবই আল্লাহর সৃষ্টির অন্তর্ভূক্ত। তাই আল্লাহ তাআ’লা মানুষের কর্মসমূহও সৃষ্টি করেছেন- একথার উপর ঈমান আনলেই তাকদীরের উপর ঈমান আনা পূর্ণতা লাভ করবে ।
যেমন আল্লাহ বলেছেন, “আল্লাহ তোমাদেরকে এবং তোমাদের কর্মসমূহকেও সৃষ্টি করেছেন।” (সূরা আস-সাফ্ফাতঃ ৯৬)
মানুষের কাজসমূহ মানুষের গুণের অন্তর্ভুক্ত। আর মানুষ আল্লাহর সৃষ্টি। কোন জিনিষের স্রষ্টা উক্ত জিনিষের গুণাবলীরও স্রষ্টা। যদি বলা হয় আল্লাহ ছাড়া অন্যের ক্ষেত্রেও তো সৃষ্টি কথাটি ব্যবহার করা হয়েছে। যেমন আল্লাহ বলেছেন, “আল্লাহ সৃষ্টিকর্তাদের মধ্যে উত্তম সৃষ্টিকর্তা।” (সূরা মুমিনূনঃ ১৪)
রাসূল বলেছেন, কিয়ামতের দিন ছবি অংকনকারীদেরকে বলা হবে, তোমরা দুনিয়াতে যা সৃষ্টি করেছিলে, তাতে রূহের সঞ্চার কর।’ উপরোক্ত প্রশ্নের উত্তর এই যে, আল্লাহর মত করে কোন মানুষ কিছু সৃষ্টি করতে অক্ষম। মানুষের পক্ষে কোন অস্তিত্বহীনকে অস্তিত্ব দেয়া সম্ভব নয় । কোন মৃত প্রাণীকেও জীবন দান করা সম্ভব নয়। আল্লাহ ছাড়া অন্যের তৈরী করার অর্থ হল নিছক পরিবর্তন করা এবং এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় রূপান্তরিত করা মাত্র। মূলতঃ তা আল্লাহরই সৃষ্টি। ফটোগ্রাফার যখন কোন বস্তুর ছবি তুলে, তখন সে উহাকে সৃষ্টি করে না। বরং বস্তুটিকে এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় পরিবর্তন করে মাত্র। যেমন মানুষ মাটি দিয়ে পাখির আকৃতি তৈরী করে এবং অন্যান্য জীব-জন্তু বানায় । সাদা কাগজকে রঙ্গীন কাগজে পরিণত করে। এখানে মূল বস্তু তথা কালি, রং ও সাদা কাগজ সবই তো আল্লাহর সৃষ্টি। এখানেই আল্লাহর সৃষ্টি এবং মানুষের সৃষ্টির মধ্যে পার্থক্য সুস্পষ্ট হয়ে উঠে ।
২- রাজত্বে আল্লাহর একত্বঃ
মহান রাজাধিরাজ একমাত্র আল্লাহ তাআ’লা । তিনি বলেনঃ “সেই মহান সত্বা অতীব বরকতময়, যার হাতে রয়েছে সকল রাজত্ব । আর তিনি প্রতিটি বিষয়ের উপর ক্ষমতাবান।” (সূরা মুলকঃ ১)
আল্লাহ আরো বলেন, “হে নবী! আপনি জিজ্ঞাসা করুন, সব কিছুর কর্তৃত্ব কার হাতে? যিনি আশ্রয় দান করেন এবং যার উপর কোন আশ্রয় দাতা নেই।” (সূরা মুমিনূনঃ ৮৮)
সুতরাং সর্ব সাধারণের বাদশাহ একমাত্র আল্লাহ তাআ’লা । আল্লাহ ব্যতীত অন্য কাউকে বাদশাহ বলা হলে তা সীমিত অর্থে বুঝতে হবে। আল্লাহ তাআলা অন্যের জন্যেও রাজত্ব ও কর্তৃত্ব সাব্যস্ত করেছেন। তবে তা সীমিত অর্থে । যেমন তিনি বলেন, “অথবা তোমরা যার চাবি-কাঠির (নিয়ন্ত্রনের) মালিক হয়েছো।”(সূরা নূরঃ ৬১)
আল্লাহ আরো বলেনঃ “তবে তোমাদের স্ত্রীগণ অথবা তোমাদের আয়ত্বধীন দাসীগণ ব্যতীত ।” (সূরা মুমিনূনঃ ৬)
আরো অনেক দলীলের মাধ্যমে জানা যায় যে, আল্লাহ ছাড়া অন্যদেরও রাজত্ব রয়েছে। তবে এই রাজত্ব আল্লাহর রাজত্বের মত নয়। সেটা অসম্পূর্ণ রাজত্ব। তা ব্যাপক রাজত্ব নয়। বরং তা একটা নির্দিষ্ট সীমা রেখার ভিতরে। তাই উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় যে, যায়েদের বাড়ীতে রয়েছে একমাত্র যায়েদেরই কর্তৃত্ব ও রাজত্ব। তাতে আমরের হস্তক্ষেপ করার কোন ক্ষমতা নেই এবং বিপরীত পক্ষে আমরের বাড়ীতে যায়েদও কোন হস্তক্ষেপ করতে পারে না। তারপরও মানুষ আপন মালিকানাধীন বস্তুর উপর আল্লাহ প্রদত্ত নির্ধারিত সীমা- রেখার ভিতরে থেকে তাঁর আইন-কানুন মেনেই রাজত্ব করে থাকে। এজন্যই রাসূল (স) বলেনঃ অকারণে সম্পদ বিনষ্ট করতে নিষেধ করেছেন। আল্লাহ তাআ’লা “যে সমস্ত ধন-সম্পদ আল্লাহ তোমাদের জীবন ধারণের উপকরণ স্বরূপ দান করেছেন, তা তোমরা নির্বোধ লোকদের হাতে তুলে দিওনা।” (সূরা নিসাঃ ৫)
মানুষের রাজত্ব ও মুলূকিয়ত খুবই সীমিত। আর আল্লাহর মালিকান ও রাজত্ব সর্বব্যাপী এবং সকল বস্তুকে বেষ্টনকারী। তিনি তাঁর রাজত্বে যা ইচ্ছা, তাই করেন। তাঁর কর্মের কৈফিয়ত তলব করার মত কেউ নেই। অথচ সকল মানুষ তাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।
৩- পরিচালনায় আল্লাহর একত্বঃ
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এক ও অদ্বিতীয় ব্যবস্থাপক এবং পরিচালক । তিনি সকল মাখলূকাত এবং আসমা-যমিনের সব কিছু পরিচালনা করেন । আল্লাহ তা’আলা বলেন, “সৃষ্টি করা ও আদেশ দানের মালিক একমাত্র তিনি। বিশ্ব জগতের প্রতিপালক আল্লাহ তা’আলা অতীব বরকতময়।” (সূরা আ’রাফঃ ৫৪)
আল্লাহর এই পরিচালনা সর্বব্যাপী। কোন শক্তিই আল্লাহর পরিচালনাকে রুখে দাঁড়তে পারে না। কোন কোন মাখলুকের জন্যও কিছু কিছু পরিচালনার অধিকার থাকে। যেমন মানুষ তার ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি এবং কর্মচারীদের উপর কর্তৃত্ব করে থাকে। কিন্তু এ কর্তৃত্ব নির্দিষ্ট একটি সীমার ভিতরে। উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে আমাদের বক্তব্যের সত্যতা প্রমাণিত হল যে, তাওহীদে রুবূবীয়্যাতের অর্থ সৃষ্টি, রাজত্ব এবং পরিচালনায় আল্লাহকে একক হিসাবে বিশ্বাস করা ।
দ্বিতীয়তঃ তাওহীদুল উলুহীয়্যাহ্ঃ
এককভাবে আল্লাহর ইবাদত করার নাম তাওহীদে উলুহীয়্যাহ। মানুষ যেভাবে আল্লাহর ইবাদত করে এবং নৈকট্য হাসিলের চেষ্টা করে, অনুরূপ অন্য কাউকে ইবাদতের জন্য গ্রহণ না করা। তাওহীদে উলুহীয়্যাতের ভিতরেই ছিল আরবের মুশরিকদের গোমরাহী। এ তাওহীদে উলুহিয়াকে ক্রেন্দ্র করেই তাদের সাথে জিহাদ করে আল্লাহর রাসূল না, তাদের জান-মাল, ঘরবাড়ী ও জমি- জায়গা হরণ হালাল মনে করেছিলেন। তাদের নারী-শিশুদেরকে দাস-দাসীতে পরিণত করেছিলেন। এই প্রকার তাওহীদ দিয়েই আল্লাহ তাআ’লা রাসূলগণকে প্রেরণ করেছিলেন এবং সমস্ত আসমানী কিতাব নাযিল করেছেন। যদিও তাওহীদে রুবূবীয়্যাত এবং তাওহীদে আসমা ওয়াস্ সিফাতও নবীদের দাওয়াতের বিষয়বস্তু ছিল, কিন্তু অধিকাংশ সময়ই নবীগণ তাদের স্বজাতীয় লোকদেরকে তাওহীদে উলুহীয়্যার প্রতি আহবান জানাতেন । মানুষ যাতে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও জন্য ইবাদতের কোন অংশই পেশ না করে, সদাসর্বদা রাসূলগণ তাদের উম্মতদেরকে এই আদেশই দিতেন। চাই সে হোক নৈকট্যশীল ফেরেশতা, আল্লাহর প্রেরিত নবী, আল্লাহর সৎকর্মপরায়ণ অলী বা অন্য কোন মাখলুক । কেননা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও ইবাদত করা বৈধ নয়। যে ব্যক্তি। প্রকার তাওহীদে ত্রুটি করবে, সে কাফির মুশরিক। যদিও সে তাওহীদে কবীয়াহ এবং তাওহীদে আসমা ওয়াস সিফাতের স্বীকৃতী প্রদান করে থাকে। সৃষ্টিকারী। একমাত্র মালিক এবং সব কিছুর পরিচালক, কিন্তু আল্লাহর ইবাদতে যদি অন্য কাউকে শরীক করে, তবে তার এই স্বীকৃতী ও বিশ্বাস কোন কাজে আসবে না। যদি ধরে নেয়া হয় যে, একজন মানুষ তাওহীদে রুবূবীয়াতে এবং তাওহীদে আসমা ওয়াস্ সিফাতে পূর্ণ বিশ্বাস করে, কিন্তু সে কবরের কাছে যায় এবং কবরবাসীর ইবাদত করে কিংবা তার জন্য কুরবানী পেশ করে বা পশু জবেহ করে তাহলে সে কাফির এবং মুশরিক। মৃত্যুর পর সে হবে চিরস্থায়ী জাহান্নামী।। আল্লাহ তাআ’লা বলেন,“নিশ্চয়ই যে ব্যক্তি শির্কে লিপ্ত হবে, আল্লাহ তার উপর জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন। তার ঠিকানা জাহান্নাম। আর যালেমদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই।” (সূরা মায়িদাঃ ৭২)
কুরআনের প্রতিটি পাঠকই একথা অবগত আছে যে, নবী যে সমস্ত কাফেরদের সাথে যুদ্ধ করেছেন, তাদের জান-মাল হালাল মনে করেছেন এবং তাদের নারী-শিশুকে বন্দী করেছেন ও তাদের দেশকে গণীমত হিসাবে দখল করেছেন, তারা সবাই একথা স্বীকার করত যে, আল্লাহই একমাত্র সৃষ্টিকর্তা ও প্রতিপালক। তারা এতে কোন সন্দেহ পোষণ করত না। কিন্তু যেহেতু তারা আল্লাহর সাথে অন্যেরও উপাসনা করত, তাই তারা মুশরিক হিসাবে গণ্য হয়েছে এবং তাদের জান-মাল হরণ হালাল বিবেচিত হয়েছে।
তৃতীয়তঃ তাওহীদুল আসমা ওয়াস্ সিফাতঃ
তাওহীদুল আসমা ওয়াস্ সিফাতের অর্থ হল, আল্লাহ নিজেকে যে সমস্ত নামে। নামকরণ করেছেন এবং তাঁর কিতাবে নিজেকে যে সমস্ত গুণে গুণান্বিত করেছেন। সে সমস্ত নাম ও গুণাবলীতে আল্লাহকে একক ও অদ্বিতীয় হিসাবে মেনে নেওয়া। আল্লাহ নিজের জন্য যা সাব্যস্ত করেছেন, তাতে কোন পরিবর্তন, পরিবর্ধন, তার ধরণ বর্ণনা এবং কোন রূপ উদাহরণ পেশ করা ব্যতীত আল্লাহর জন্য তা সাব্যস্ত করার মাধ্যমেই এ তাওহীদ বাস্তবায়ন হতে পারে। সুতরাং আল্লাহ নিজেকে যে নামে পরিচয় দিয়েছেন বা নিজেকে যে গুণাবলীতে গুণান্বিত করেছেন, তাঁর উপর ঈমান আনয়ন করা আবশ্যক। এ সমস্ত নাম ও গুণাবলীর আসল অর্থ আল্লাহর জন্য সাব্যস্ত করে তার উপর ঈমান আনতে হবে- কোন প্রকার ধরণ বর্ণনা করা বা দৃষ্টান্ত পেশ করা যাবেনা। এই প্রকারের তাওহীদে আহলে কিবলা তথা মুসলমানদের বিরাট একটি অংশ গোমরাহীতে পতিত হয়েছে। এক শ্রেণীর লোক আল্লাহর সিফাতকে অস্বীকারের ক্ষেত্রে এতই বাড়াবাড়ি করেছে যে, এর কারণে তারা ইসলাম থেকে বের হয়ে গেছে। আর এক শ্রেণীর লোক মধ্যম পন্থা অবলম্বন করেছে। আর এক শ্রেণীর লোক আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাতের কাছাকাছি। কিন্তু সালাফে সালেহীনের’ মানহাজ হল, আল্লাহ নিজের জন্য যে নাম নির্ধারণ করেছেন এবং নিজেকে যে সবগুণে গুণাম্বিত করেছেন, সে সব নাম ও গুণাবলীর উপর ঈমান আনয়ন করতে হবে।

ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম
Reviews
There are no reviews yet.