যুবকদের জন্য উপদেশ ও নির্দেশনা

৳ 140

যুবকদের জন্য উপদেশ ও নির্দেশনা
লেখক : ড. সালেহ ফাওযান
অনুবাদ : শাইখ আবদুল্লাহ শাহেদ আল-মাদানী
প্রকাশনী : তাওহীদ পাবলিকেশন্স
বিষয় : ফিকহ ও ফাতাওয়া-মাসায়েল
পৃষ্ঠা : ২২০
কভার : পেপার ব্যাক
Description

যুবকদের জন্য উপদেশ ও নির্দেশনা

যুবকদের জন্য উপদেশ ও নির্দেশনা
প্রকাশনী : তাওহীদ পাবলিকেশন্স
বিষয় : ফিকহ ও ফাতাওয়া-মাসায়েল
পৃষ্ঠা : ২২০
কভার : পেপার ব্যাক
বইটি কিনতে কিল্ক করুন: যুবকদের জন্য উপদেশ ও নির্দেশনা
আরো জানতে কিল্ক করুন: তাওহীদ পাবলিকেশন্স

যুবকদের জন্য উপদেশ ও নির্দেশনা

বর্তমান সময়ে দ্বীনের সঠিক জ্ঞানের ব্যাপক চর্চা না হওয়ার কারণে একদিকে যেমন তারা ইসলামের সঠিক শিক্ষা থেকে দূরে সরে গিয়ে দ্বীনের নামে শির্ক, বিদআত ও কুসংস্কারে লিপ্ত হয়েছে অন্যদিকে তারা তাদের অর্জিত গৌরব ও মর্যাদা সম্পূর্ণরূপে হারিয়ে ফেলেছে।

বিশেষ করে বর্তমানে দ্বীনের যোগ্য আলেম ও দাঈদের সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণে মুসলিম যুবকদের মধ্যে চরম মুর্খতা বিরাজ করছে। তাই তাদের বিরাট একটি অংশ দ্বীনের সঠিক দিক-নির্দেশনার অভাবে হতাশার মধ্যে কালাতিপাত করছে।

অন্য একটি অংশ দ্বীনের জ্ঞান অর্জন করতে গিয়ে চরমপন্থী ও উগ্রবাদী আলেমদের খপ্পরে পড়ে জঙ্গিবাদের দিকে ঝুকে পরছে। এই শ্রেনীর আলেমগণ জিহাদের নামে মুসলিম যুবকদেরকে সন্ত্রাসবাদ ও ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের দিকে টেনে নিচ্ছে। তাদের ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপকে অযুহাত বানিয়ে ইহুদী-খৃষ্টানসহ ইসলামের শত্রুরা গোটা মুসলিম জাতিকে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে অভিযুক্ত করছে। সেই সঙ্গে তারা ইসলামের সুমহান আদর্শকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বলেও আখ্যা দিয়ে যাচ্ছে। অথচ ইসলাম এমন একটি দ্বীন, যার সাথে সন্ত্রাসবাদের কোনো সম্পর্ক নেই। ইসলাম মানুষকে শান্তি, নিরাপত্তা ও সহনশীলতার আহবান জানায়। দুনিয়া ও আখেরাতে তাদেরকে শান্তিময় জীবন এবং কল্যাণের পথ দেখায়।

বিজ্ঞ আলেমদের মতে বর্তমানে সঠিক ইসলামের দাওয়াত অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে অধিক সঙ্কটময় সময় অতিক্রম করছে। এহেন জটিল পরিস্থিতিতে দ্বীনের সত্যিকার আলেমদের সক্রিয় ভূমিকা রাখা আবশ্যক। অন্যথায় ইসলামের দাওয়াত আরো পিছিয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

জাতির এই করুণ অবস্থা উপলব্ধি করতে পেরে সৌদি আরবের প্রবীণ ও বর্ষিয়ান আলেম আল্লামা ডঃ সালেহ ফাওযান হাফিযাহুল্লাহ যুবকদের জন্য কতিপয় উপদেশ ও নির্দেশনা সিরিজ নামে যেই পুস্তক রচনা করেছেন, মুসলিম যুবকদের জন্য তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ইসলামের নামে উগ্রবাদ, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ এবং ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের সাথে সম্পৃক্ত যুবকদেরকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে বইটি যথেষ্ট অবদান রাখবে বলে আমার বিশ্বাস।

বইটি মূলতঃ আরবী ভাষাভাষী মুসলিমদের জন্য লিখা হলেও সন্ত্রাসবাদ যেহেতু এখন আরব বিশ্বের সীমা পার হয়ে আমাদের সমাজ পর্যন্ত চলে এসেছে, তাই বইটি বাংলাভাষী মুসলিম যুবকদের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

অনেক আগেই বাংলায় এর অনুবাদ বের হওয়া আবশ্যক ছিল। তাই শাইখের অনুমতি নিয়ে বইটির বাংলা অনুবাদ প্রকাশের কাজে হাত দেই। অতি অল্প সময়ে অনুবাদ সমাপ্ত হওয়ায় আমি আল্লাহর শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি। বইটি পাঠ করে বাংলাভাষী যুবকগণ দ্বীনের সঠিক শিক্ষা পেলেই আমার শ্রম সার্থক হয়েছে বলে মনে করবো। বইটির সম্পাদনা, প্রকাশনা ও প্রচারের কাজে যারা সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন, তাদেরকে আল্লাহ তাআলা উত্তম বিনিময় দান করুন। আমীন


যুবকদের জন্য উপদেশ ও নির্দেশনা

যুবকদের জন্য উপদেশ ও নির্দেশনা

১) দ্বীনের সঠিক জ্ঞানই ফিতনা থেকে বাঁচার একমাত্র উপায়

২) দ্বীনের উপর ঐক্যবদ্ধ থাকা এবং দলাদলি বর্জন করা আবশ্যক

৩) ইসলামের দৃষ্টিতে জিহাদ এবং তার প্রকারভেদ ও হুকুম

৪) কারো উপর কুফুরীর হুকুম প্রয়োগ করা ও তার মূলনীতি

মূল :

ড. সালেহ ফাওযান

অনুবাদ :

শাইখ আবদুল্লাহ শাহেদ আল-মাদানী

লিসান্স : মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, এম, এম, ফাস্ট ক্লাশ

জুবাইল দাওয়া এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদী আরব

প্রকাশনায়

তাওহীদ পাবলিকেশন্স

ঢাকা-বাংলাদেশ


সিরিজভিত্তিক সূচিপত্র

যুবকদের জন্য কতিপয় উপদেশ ও নির্দেশনা সিরিজ-১-৪

  • ভূমিকা
  • ১) দ্বীনের সঠিক জ্ঞানই ফিতনা থেকে বাঁচার একমাত্র উপায়
  • ২) দ্বীনের উপর ঐক্যবদ্ধ থাকা এবং দলাদলি বৰ্জন করা আবশ্যক
  • ৩) ইসলামের দৃষ্টিতে জিহাদ এবং তার প্রকারভেদ ও হুকুম
  • ৪) কারো উপর কুফুরীর হুকুম প্রয়োগ করা ও তার মূলনীতি

বিস্তারিত সূচিপত্র

ভূমিকা

সিরিজ নম্বর-১

দ্বীনের সঠিক জ্ঞানই ফিতনা থেকে বাঁচার একমাত্র উপায়

অনুবাদকের সংযুক্তিঃ

দ্বীনের সঠিক জ্ঞানই ফিতনা থেকে বাঁচার একমাত্র উপায়, এ বিষয়ে শাইখ সালেহ ফাওযানের আলোচনার উপর বিন বায রাহিমাহুল্লাহর মন্ত ব্য শেষে কতিপয় প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন : (১) কুরআনের যেই আয়াতে মুসলিমদের অভিভাবকদের আনুগত্য করার আদেশ করা হয়েছে, তাতে শাসকদের আনুগত্য বলতে কী বুঝানো হয়েছে? তারা কি আলেম সমাজ? না কি শাসক গোষ্ঠি? শাসকরা যদি নিজেদের উপর এবং তাদের জনগণের উপর যুলুম করে, তাহলেও কি তাদের আনুগত্য করতে হবে?

প্রশ্ন : (২) প্রচলিত আইন তৈরী করার হুকুম কী? মানব রচিত আইন মেনে চলা কি জায়েয? মানব রচিত আইন তৈরী করার কারণে কি ।

শাসককে কাফের বলা যাবে?

প্রশ্ন : (৩) যে শাসক আল্লাহ যা হারাম করেছেন, তাকে হালাল করে আইন বানায়, তার সাথে কিরূপ আচরণ করা হবে?

প্রশ্ন : (৪) হে মহামান্য শাইখ! আপনি অবশ্যই জানেন যে, বর্তমান সময়ে মুসলিম জাতির উপর দিয়ে কী পরিমাণ ফিতনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে? তাদের মধ্যে রয়েছে বহু জামা’আত। তাবগলীগ জামা’আত, জামা’আতুল ইখওয়ান, সালাফী এবং আরও অন্যান্য জামা’আত । প্রত্যেক জামা’আতই বলে থাকে, সুন্নাতের অনুসরণের ক্ষেত্রে তারাই সঠিক পথে রয়েছে। হে সম্মানিত শাইখ! আল্লাহ আপনাকে হেফাযত করুন! আমি আল্লাহর দোহাই দিয়ে আপনাকে জিজ্ঞাসা করছি, এগুলো থেকে কোন দলটি সঠিক? এদের থেকে আমরা কোনটির অনুসরণ করব? আল্লাহ আপনাকে উত্তম বিনিময় দান করুন।

যুবকদের জন্য উপদেশ ও নির্দেশনা

প্রশ্ন : (৫) আমরা এমন দেশে বাস করি যেখানে কুরআন-সুন্নাহর এমন কোনো আলেম নেই, যার নিকট থেকে জ্ঞান অর্জন করা যেতে পারে। আমরা কেবল ইসলামী বই-পুস্তক এবং ক্যাসেটের উপর নির্ভর করি। আর আপনারা বলেছেন যে, আলেম-উলামার কাছে বসা ও তাদের কাছে জিজ্ঞাসা করা ব্যতীত ইলম অর্জন করা সম্ভব নয়। এ পরিস্থিতিতে আমরা কী করব?

“দ্বীনের সঠিক জ্ঞানই ফিতনা থেকে বাঁচার একমাত্র উপায়”, -এ বিষয়ে দৈনিক মিডিল ইষ্ট পত্রিকার সাথে শাইখ বিন বায রাহিমাহুল্লাহর একটি সাক্ষাৎকার

প্রশ্ন : (১) বর্তমান বিশ্বে শাসক ও শাসিতের মধ্যকার সম্পর্কের বিষয়টি অন্যতম আলোড়ন সৃষ্টিকারী একটি বিষয়। এ সম্পর্কে ইসলামী শরীয়তের মূলনীতি কী? সম্মানিত শাইখ! কেউ কেউ মনে করে শাসকরা যদি পাপাচার ও কবীরা গুনাহয় লিপ্ত হয়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করা এবং শাসকদেরকে ক্ষমতা থেকে নামানোর চেষ্টা করা জায়েয। যদিও এতে করে মুসলিমদের জান- মালের ক্ষতি হয়। আমাদের মুসলিম বিশ্ব আরও অনেক সমস্যার সম্মুখীন। এ বিষয়ে সম্মানিত শাইখের অভিমত জানতে চাই ।

প্রশ্ন : (২) সম্মানিত শাইখ! আপনি অবগত আছেন যে, আপনি যা বললেন, তা তো আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আতের অন্যতম মূলনীতি । তবে দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আতের কেউ কেউ মনে করে এটি ব্যর্থবোধ সম্পন্ন লোকেদের চিন্তাধারা ব্যতীত 95 অন্য কিছু নয়। তাতে যালেমের কাছে হার মানা হয়ে যায়। এ কথা অনেকের পক্ষ থেকেই বলা হয়েছে। এজন্য তারা শাসক পরিবর্তনের জন্য যুবকদেরকে আহ্বান করছে। এতে আপনার মতামত কী?

প্রশ্ন : (৩) যদিও আমরা ধরে নেই, কোনো কোনো জামা’আতের মতে শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ জায়েয, তাহলে কি ঐ শাসকের সহযোগী এবং সরকারের প্রত্যেক কর্মচারী যেমন পুলিশ, নিরাপত্তা বাহিনী এবং অন্যান্য কর্মচারী-কর্মকর্তাকে হত্যা করা জায়েয?

প্রশ্ন : (৪) সম্মানিত শাইখ! আল্লাহ তা’আলা আপনাকে হেফাযত করুন। কতিপয় যুবক মনে করে মুসলিমদের দেশে যে-সব কাফের স্থায়ীভাবে বসবাস করে অথবা যারা সাময়িকভাবে অবস্থান করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আচরণ করা শরীয়ত সম্মত। এজন্যই কেউ কেউ তাদেরকে হত্যা করা বৈধ মনে করে। বিশেষ করে যখন তাদেরকে খারাপ কাজ করতে দেখা যায় ।

যুবকদের জন্য উপদেশ ও নির্দেশনা

প্রশ্ন : (৫) কোনো দেশে ইসলামী আদালত না থাকলে কী করবে?

প্রশ্ন : (৬) সৎকাজের আদেশ দেওয়া এবং অন্যায়ের প্রতিবাদ করা বিশেষ করে ক্ষমতা প্রয়োগ করে অন্যায়ের প্রতিবাদ করা কি সকলের দায়িত্ব? না কি শাসক শ্রেণী ও তাদের প্রতিনিধিদের দায়িত্ব?

প্রশ্ন : (৭) সম্মানিত শাইখ! আল্লাহ আপনাকে হেফাযত করুন! কেউ কেউ মনে করে, তার জন্য শাসক কর্তৃক জারিকৃত সাধারণ আইন- কানুন যেমন ট্রাফিক আইন, আয়কর আইন, পাসপোর্ট সংক্রান্ত আইন….ইত্যাদি আইন-কানুন লংঘন করা জায়েয আছে। এ যুক্তিতে সে উপরোক্ত আইন-কানুনগুলো ভঙ্গ করে যে, এগুলো শরঈ ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত নয়, -এ ব্যাপারে আপনার অভিমত কী?

প্রশ্ন : (৮) সম্মানিত শাইখ! যে শাসকের হাতে আনুগত্যের বাইআত করা হয়েছে, তার জন্য কি দুআ করা আবশ্যক?

প্রশ্ন : (৯) সম্মানিত শাইখ! আল্লাহ তা’আলা আপনাকে হেফাযত করুন। শাসকদের জন্য যারা দুআ করে না তাদের জন্য আপনার  নসীহত কী?

সিরিজ নম্বর-২ 

দ্বীনের উপর ঐক্যবদ্ধ থাকা এবং ফির্কাবন্দী ও দলাদলি বর্জন করার গুরুত্ব

প্রশ্ন : (১) সম্মানিত শাইখ!

মুসলিমগণ ঐক্যের ডাক দিচ্ছে এবং দলাদলি পরিহার করার আহ্বান জানাচ্ছে। তবে তবে যেখানে স্বয়ং ঐক্যের আহ্বায়কদের মধ্যেই জ্ঞান অর্জন এবং ঐক্যের মূলনীতি সম্পর্কে মতভেদ রয়েছে, সেখানে কিভাবে ঐক্য তৈরী হবে? দ্বীনের ব্যাপারে মতভেদ ও ঐক্যের মূলনীতি সম্পর্কে তাদের মতভেদ এতদূর গিয়ে পৌঁছেছে, যাতে তারা আদর্শিক বিভ্রান্তির মধ্যে এবং পথ ও পদ্ধতিগত ভুলের মধ্যেই রয়েছে । সুতরাং আমরা কিভাবে এ ভয়াবহ সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারবো? শাইখের নিকট এ বিষয়ে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা চাই ।

যুবকদের জন্য উপদেশ ও নির্দেশনা

প্রশ্ন : (২) সম্মানিত শাইখ! ঐক্যবদ্ধ থাকা এবং দলাদলি পরিহার করা এবং মুসলিমদের কালেমা তাইয়্যেবার ছায়াতলে একত্রিত হওয়ার ব্যাপারে আপনার নিকট থেকে কিছু উপদেশ কামনা করছি। আপনার কাছে আমাদের ঐসব যুবকদের জন্য কিছু উপদেশ কামনা করছি, যারা মূলত সালাফদের মানহাজের উপরেই রয়েছে। তাদেরকে সালাফে সালেহীনদের চরিত্রে চরিত্রবাণ হওয়ার জন্য উপদেশ দেবেন বলে আশা করছি। বিশেষ করে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আতের লোকেরা যে- 128 সব মাসআলায় পরস্পর ভিন্নমত পোষণ করে, যাতে অপরের প্রতি খারাপ ধারণা সৃষ্টি হয় এবং তাদের সৎ নিয়তের ব্যাপারে প্রশ্ন তুলা হয়, সে ব্যাপারে কিছু নসীহত করুন। বিশেষ করে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আতের মধ্যকার যে-সব যুবক ভিন্ন মত পোষণ করে তাদের মতের পক্ষে যদি হারামাইনের দেশের কোনো আলেমের সমর্থন পাওয়া যায় তখন কী করা হবে?

প্রশ্ন : (৩) হারামাইনের দেশ মক্কা-মদীনা আল্লাহর অনুগ্রহে সালাফে সালেহীনের মানহাজের উপরই চলছে। এ দেশের পূর্ব, পশ্চিম এবং উত্তর-দক্ষিণের সকল অধিবাসী পরস্পর ভালোবাসার বন্ধনেই আবদ্ধ ছিল। কিন্তু বর্তমানে আমরা এখানে যেই মতভেদ দেখতে পাচ্ছি, তার 129 কারণ আপনি কী বলে মনে করেন? এখানে যে-সব দল দেখা যাচ্ছে, তারা সকলেই কি সঠিক পথে রয়েছে? তাদের সকলের মত ও মানহাজ এক না হলেও তাদের মাঝ্যে কি ঐক্য তৈরী করা আবশ্যক?

প্রশ্ন : (৪) জামা’আতে ইসলামীর সাথে অন্যান্য দলসমূহের যেই মতপার্থক্য রয়েছে, তা কি গ্রহণযোগ্য, না অগ্রহণীয়?

একাধিক সমস্যা এবং তার সমাধান

(১) যুবকদের সঠিক নির্দেশনা প্রদানগত সমস্যা

(২) ভিন্নমতের লোকেদের সাথে আলোচনা ও বিতর্ক করা

(৩) মানুষের সাথে সুসম্পর্ক তৈরী করা ও সম্পর্ক ছিন্ন করা প্রসঙ্গে

(৪) আলেমদের পারস্পরিক মতভেদ এবং এ সম্পর্কে সাধারণ মুসলিমদের অবস্থান

যুবকদের জন্য উপদেশ ও নির্দেশনা

সিরিজ নম্বর- ৩

ইসলামের দৃষ্টিতে জিহাদ, তার প্রকারভেদ ও হুকুম

জিহাদের সংজ্ঞা ও প্রকারভেদঃ

(১) নফসের সাথে জিহাদ করাঃ

(২) শয়তানের সাথে জিহাদ করাঃ

(৩) পাপী মুসলমিদের সাথে জিহাদঃ

(৪) মুনাফেকদের বিরুদ্ধে জিহাদঃ

(৫) কাফেরদের বিরুদ্ধে জিহাদ :

আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের প্রকারভেদ

১) ফরজে আঈন

২) ফরযে কেফায়া

জেহাদ সম্পর্কে কতিপয় প্রশ্ন ও তার উত্তরঃ

১) জিহাদ করা এবং ইল্ম অর্জন করা এ দু’টি কাজের মধ্যে কোনটি উত্তম?

২) মুসলিম শাসকদের আদেশ মান্য করা এবং তাদের আনুগত্য করা কি সালাফী আকীদার মূলনীতির অন্তর্ভুক্ত?

৩) শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা কি শুধু অস্ত্র নিয়ে বের হওয়ার মাধ্যমেই হয়? না কথার মাধ্যমেও হয়ে থাকে?

প্রশ্ন (৪) যারা বলে জিহাদ ওয়াজিব হওয়ার জন্যে আমীর ও ঝাণ্ডা উত্তলন করা জরুরী নয়? তাদের উত্তরে আপনার মতামত কি?

প্রশ্ন (৫)আবূ বসীরের ঘটনাকে দলীল হিসেবে গ্রহণ করে যারা বলে যে, জিহাদে যেতে হলে ইমামের অনুমতির প্রয়োজন নেই তাদের ব্যাপারে আপনার মতামত কী?

প্রশ্ন (৬) বর্তমানে জিহাদের হুকুম কী? বর্তমানে জিহাদ কোথায় পাওয়া যাবে? কাফের কিংবা বিদআতী শাসকের পতাকা তলে শামিল হয়ে জিহাদ করার হুকুম কী?

যুবকদের জন্য উপদেশ ও নির্দেশনা

প্রশ্ন : (৭) বুখারী শরীফের হাদীস, এবং এই “ইমাম হলেন ঢালের ন্যায়। তাঁর নেতৃত্বে যুদ্ধ করা হয় ও প্রতিরক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়” -এটি ঐ ব্যক্তির দলীল হতে পারে যে বলে থাকে জিহাদ পরিচালনার জন্য এমন একজন ইমাম আবশ্যক যিনি জিহাদের ঝাণ্ডা উঠাবেন?

প্রশ্ন (৮) ইমামের অনুমতি ছাড়া বিভিন্ন স্থানে গিয়ে জিহাদে শরীক হওয়া কি ঠিক?

প্রশ্ন (৯) আমাকে ছাড়া যদি আমার পিতা-মাতার আরও সন্তান থাকে এবং কোনো ব্যাপারেই যদি আমার প্রতি তারা মুখাপেক্ষী না হয়ে থাকেন তাহলে তো আমাকে জিহাদে যেতে বাঁধা দেওয়াতে তাদের কোন যুক্তিই থাকে না। এক্ষেত্রে আমার জিহাদে যাওয়ার হুকুম

প্রশ্ন (১০) পিতা-মাতা অনুমতি দিলে ইমামের অনুমতি ছাড়া কি জিহাদের জন্য বের হওয়া যাবে?

সিরিজ নম্বর-৪

কারো উপর কুফুরীর হুকুম প্রয়োগ করা এবং তার মূলনীতি বিস্ফোরণ ঘটানো জিহাদ নয় কী ?

প্রশ্ন (১) আস্ সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতাহু । সম্মানিত শাইখ! আমরা শুনছি যে আপনি আল্লাহ তা’আলার এ বাণীর ব্যাখ্যা করাকে পছন্দ করেন না। আল্লাহ তা’আলা বলেন,“যারা আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান দিয়ে বিচার করে না, তারা কাফের” (সূরা মায়েদা ৫ : ৪৪) অর্থাৎ যারা আল্লাহর শরীয়ত বাদ দিয়ে অন্য কিছু দিয়ে ফয়সালা করে, তাদের মাঝে কোনো পার্থক্য করা ছাড়াই তাদের সকলকেই কি কাফের মনে করেন? এ বিষয়ে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আল্লাহ আপনাকে উত্তম বিনিময় দান করুন ।

যুবকদের জন্য উপদেশ ও নির্দেশনা

প্রশ্ন : (২) সম্মানিত শাইখ! তাকফীর বা কাউকে কাফের বলার মাসআলায় আলেমদের যেহেতু বিরাট মতভেদ রয়েছে, তাই এ বিষয়ে আমাদেরকে জানিয়ে বাধিত করবেন। শাসকদের প্রত্যেক কথা বা কাজ কি তাদের কাফের হওয়ার প্রমাণ করে? না কি তাদের কথার ব্যাখ্যা রয়েছে? অর্থাৎ যেই শাসক আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের শরীয়ত বাদ দিয়ে নিজেই আইন তৈরী করে, তার এ কাজের কারণেই কি আমরা তাকে কাফের বলব? না কি আমরা তাকে জিজ্ঞাসা করব? সে যদি ব্যর্থতার অযুহাত পেশ করে এবং বলে, সে ইসলামী শরীয়ত বাস্তবায়ন করতে অক্ষম, তাহলে কি আমরা তাকে এমন মুসলিম বলব, যার মধ্যে কুফুরী, পাপাচার এবং যুলুম রয়েছে? না কি তাকে কাফের বলব এবং দ্বীন থেকে বের হয়ে গেছে বলে সাব্যস্ত করব?

প্রশ্ন : (৩) :কাফেরদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করা এবং তাদেরকে সহযোগিতা করার মধ্যে পার্থক্য কী?

অনুবাদকের সংযুক্তিঃ

প্রশ্ন : (৪) সম্মানিত শাইখ! যারা সৌদি আরবের শাসক পরিবারকে কাফের বলে এবং সেখানকার আলেমদেরকে তোষামোদকারী হিসাবে 21: অপবাদ দেয়, তাদের ব্যাপারে আপনার মতামত কী?

প্রশ্ন : (৫) কতিপয় লোক একটি বিরাট মাসআলার ব্যাপারে (মানুষকে কাফের বলার ব্যাপারে) অনেক কথাই বলে যাচ্ছে। অথচ বিজ্ঞ আলেমগণ ছাড়া অন্য কেউ এ সম্পর্কে অবগত নয়। আর এটি হলো  নির্দিষ্ট করে কাউকে কাফের বলার মাসআলা। আপনি কি এ দিকে ইঙ্গিত করেছেন?

প্রশ্ন : (৬) কিছু কিছু মুসলিম দেশ অনেক পাপ কাজের বৈধতা দেয় যেমন মদ পান করা, মদের ব্যবসা করা, যেনা করা, পতিতালয় করা ইত্যাদির অনুমোদন দেয়। তাদের এ কাজ কি তাদের সুস্পষ্ট কুফুরী প্রমাণ করে? তাদের বিরুদ্ধে কি বিদ্রোহ করা বৈধ?

প্রশ্ন : (৭) সম্মানিত শাইখ! যেই মসজিদের ইমাম এ দেশের শাসকদেরকে কাফের বলে, তার পিছনে নামায পড়া কি জায়েয?


যুবকদের জন্য উপদেশ ও নির্দেশনা

ভূমিকা

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তা’আলার জন্য। দুরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক নবী মুহাম্মাদ (স), তাঁর সাহাবী ও পরিবার-পরিজনের প্রতি। মানবতার মুক্তি ও কল্যাণের জন্য আজ থেকে প্রায় দেশ হাজার বছর আগে শেষ নবীর মাধ্যমে যেই দ্বীন ইসলাম আগমণ করেছে তার আলো গ্রহণ করে মুসলিম জাতি পৃথিবীতে একটি গৗরবময় এবং সর্বোন্নত জাতিতে পরিণত হয়েছিল। তারা এর যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমেই আল্লাহ তা’আলার ওয়াদা মোতাবেক পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল। জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিক্ষা- সংস্কৃতি, সভ্যতা, অর্থনীতি, সমাজনীতি ও রাজনীতিসহ জীবনের সকল ক্ষেত্রেই তারা তৎকালীন সমস্ত জাতির অগ্র নায়ক ছিল। কিন্তু বর্তমান সময়ে দ্বীনের সঠিক জ্ঞানের ব্যাপক চর্চা না হওয়ার কারণে একদিকে যেমন তারা ইসলামের সঠিক শিক্ষা থেকে দূরে সরে গিয়ে দ্বীনের নামে শির্ক, বিদআত ও কুসংস্কারে লিপ্ত হয়েছে অন্যদিকে তারা তাদের অর্জিত গৌরব ও মর্যাদা সম্পূর্ণরূপে হারিয়ে ফেলেছে। বিশেষ করে বর্তমানে দ্বীনের যোগ্য আলেম ও দাঈদের সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণে মুসলিম যুবকদের মধ্যে চরম মুর্খতা বিরাজ করছে। তাই তাদের বিরাট একটি অংশ দ্বীনের সঠিক দিক-নির্দেশনার অভাবে হতাশার মধ্যে কালাতিপাত করছে। অন্য একটি অংশ দ্বীনের জ্ঞান অর্জন করতে গিয়ে চরমপন্থী ও উগ্রবাদী আলেমদের খপ্পরে পড়ে জঙ্গিবাদের দিকে ঝুকে পরছে। এ শ্রেনীর আলেমগণ জিহাদের নামে মুসলিম যুবকদেরকে সন্ত্রাসবাদ ও ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের দিকে টেনে নিচ্ছে। তাদের ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপকে অযুহাত বানিয়ে ইহুদী-খৃষ্টানসহ ইসলামের শত্রুরা গোটা মুসলিম জাতিকে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে অভিযুক্ত করছে। সেই সঙ্গে তারা ইসলামের সুমহান আদর্শকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বলেও আখ্যা দিয়ে যাচ্ছে। অথচ ইসলাম এমন একটি দ্বীন, যার সাথে সন্ত্রাসবাদের কোনো সম্পর্ক নেই। ইসলাম মানুষকে শান্তি, নিরাপত্তা ও সহনশীলতার আহ্বান জানায়। দুনিয়া ও আখেরাতে তাদেরকে শান্তিময় জীবন এবং কল্যাণের পথ দেখায় ।

বিজ্ঞ আলেমদের মতে বর্তমানে সঠিক ইসলামের দাওয়াত অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে অধিক সঙ্কটময় সময় অতিক্রম করছে। এহেন জটিল পরিস্থিতিতে দ্বীনের সত্যিকার আলেমদের সক্রিয় ভূমিকা রাখা আবশ্যক। অন্যথায় ইসলামের দাওয়াত আরও পিছিয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। জাতির এ করুণ অবস্থা উপলব্ধি করতে পেরে সৌদি আরবের প্রবীণ ও বর্ষিয়ান আলেম আল্লামা ড. সালেহ ফাওযান হাফিযাহুল্লাহ যুবকদের জন্য কতিপয় উপদেশ ও নির্দেশনা সিরিজ নামে যেই পুস্তক রচনা করেছেন, মুসলিম যুবকদের জন্য তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।

যুবকদের জন্য উপদেশ ও নির্দেশনা

ইসলামের নামে উগ্রবাদ, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ এবং ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের সাথে সম্পৃক্ত যুবকদেরকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে বইটি যথেষ্ট অবদান রাখবে বলে আমার বিশ্বাস। বইটি মূলত আরবী ভাষাভাষী মুসলিমদের জন্য লিখা হলেও সন্ত্রাসবাদ যেহেতু এখন আরব বিশ্বের সীমা পার হয়ে আমাদের সমাজ পর্যন্ত চলে এসেছে, তাই বইটি বাংলাভাষী মুসলিম যুবকদের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেক আগেই বাংলায় এর অনুবাদ বের হওয়া আবশ্যক ছিল। তাই শাইখের অনুমতি নিয়ে বইটির বাংলা অনুবাদ প্রকাশের কাজে হাত দেই। অতি অল্প সময়ে অনুবাদ সমাপ্ত হওয়ায় আমি আল্লাহর শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি। বইটি পাঠ করে বাংলাভাষী যুবকগণ দ্বীনের সঠিক শিক্ষা পেলেই আমার শ্রম সার্থক হয়েছে বলে মনে করব। বইটির সম্পাদনা, প্রকাশনা ও প্রচারের কাজে যারা সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন, তাদেরকে আল্লাহ তা’আলা উত্তম বিনিময় দান করুন। আমীন

শাইখ আব্দুল্লাহ শাহেদ আল-মাদানী

যুবকদের জন্য উপদেশ ও নির্দেশনা

যুবকদের জন্য উপদেশ ও নির্দেশনা

Reviews (0)

Reviews

There are no reviews yet.

Be the first to review “যুবকদের জন্য উপদেশ ও নির্দেশনা”

Your email address will not be published.

Shopping cart
Facebook Twitter Instagram YouTube WhatsApp WhatsApp

Sign in

No account yet?