সহীহ দুআ ঝাড়ফুঁক ও যিক্‌র

৳ 72

সহীহ দুআ ঝাড়ফুঁক ও যিক্‌র
লেখক : আব্দুল হামীদ ফাইযী আল মাদানী
প্রকাশনী : তাওহীদ পাবলিকেশন্স
বিষয় : দুআ ও যিকির
পৃষ্ঠা : ১৭৬
কভার : পেপার ব্যাক
Description

সহীহ দুআ ঝাড়ফুঁক ও যিক্‌র

সহীহ দুআ ঝাড়ফুঁক ও যিক্‌র
প্রকাশনী : তাওহীদ পাবলিকেশন্স
বিষয় : দুআ ও যিকির
পৃষ্ঠা : ১৭৬
কভার : পেপার ব্যাক
বইটি কিনতে কিল্ক করুন: সহীহ দুআ ঝাড়ফুঁক ও যিক্‌র
আরো জানতে কিল্ক করুন: তাওহীদ পাবলিকেশন্স

সহীহ দুআ ঝাড়ফুঁক ও যিক্‌র একটি দুর্দান্ত এবং পুনরাবৃত্তিযোগ্য মাস্টার পেন থেকে গ্রহের সবচেয়ে জনপ্রিয় বইগুলির মধ্যে একটি বই ডাউনলোড করুন: , লেখকের মস্তিষ্কের ফ্যান্টাসি মহাবিশ্বের চিন্তার জন্য এবং সময়কে এগিয়ে দেওয়ার জন্য দুর্দান্ত খাবার লেখার ক্ষেত্রে অভাবনীয় প্রতিভা রয়েছে। সহীহ দুআ ঝাড়ফুঁক ও যিক্‌র বইটির অনেক অনুরাগী এবং অনুরাগী রয়েছে, সহীহ দুআ ঝাড়ফুঁক ও যিক্‌র বইটি প্রচুর প্রচারে বিক্রি হয়েছে এবং অনলাইনে বা কোনও ট্যাবলেটে পড়া খুব সহজ ।


সহীহ দুআ ঝাড়ফুঁক ও যিক্‌র

সহীহ দুআ ঝাড়ফুঁক ও যিক্‌র

প্ৰণয়নে

শায়খ আবদুল হামীদ ফাইযী আল-মাদানী

বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক ইসলামী গবেষক, লেখক, মুহাক্কিক আলিম ও দাঈ

তাওহীদ পাবলিকেশন্স

ঢাকা, বাংলাদেশ ।


সহীহ দুআ ঝাড়ফুঁক ও যিক্‌র

بسْمِ اللهِ الرَّحْمنِ الرَّحِيمِ

বাংলায় আরবী শব্দের উচ্চারণ পদ্ধতি

বাংলা ভাষায় আরবী হরফগুলো মাখরাজসহ বিশুদ্ধভাবে উচ্চারণ করা অত্যন্ত দুরূহ। আরবীকে বাংলায় উচ্চারণ করতে গিয়ে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিকৃত করা হয়েছে, যা আরবী ভাষার জন্য অতিমাত্রায় দূষণীয়। কেননা, অনেক ক্ষেত্রে উচ্চারণ বিকৃতির কারণে অর্থগত ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে যায় ।

আরবী হরফগুলোর বাংলা উচ্চারণ বিশুদ্ধভাবে করার প্রচেষ্টায় নানাভাবে করা হয়েছে। কিন্তু আরবী ২৮টি বর্ণমালার প্রতিবর্ণ এ পর্যন্ত কেউ-ই পূর্ণাঙ্গভাবে ব্যবহার করেন নি । আলহামদুলিল্লাহ! সম্ভবত আমরাই সর্বপ্রথম ২৮টি বর্ণমালাকে আলাদাভাবে উপস্থাপন করতে সক্ষম হলাম। একটু চেষ্টা ও খেয়াল করলেই স্বল্পশিক্ষিত পাঠক- পাঠিকাও এ উচ্চারণ রীতিমালা আয়ত্ব করে মোটামুটি শুদ্ধভাবে উচ্চারণ করতে পারবেন বলেই আমাদের একান্ত বিশ্বাস

আইন অক্ষরের পরে ইয়া সাকিন হলে সেক্ষেত্র ঈ লিখা হবে। ফাতহাহ বা যাবারের বাম পাশে ইয়া সাকিন হলে য় ব্যবহৃত হবে। যেমন লায়স এ। ওয়াও এর উচ্চারণ ব এর মতো হলে সেক্ষেত্রে উক্ত ব এর উপর বিন্দু অর্থাৎ ব হবে। ফাতহাহ বা যাবারের বাম পাশে হামযাহতে যের হলে সেক্ষেত্রে য়ি ব্যবহৃত হবে। আইন (৫) অক্ষরে সাকিন হলে সেক্ষেত্রে (‘) ব্যবহার করা হয়েছে। যেমন ( i) আ’মাশ । হামযাহ সাকিনের ক্ষেত্রে (‘) ব্যবহার করা হয়েছে। যেমন (:) মু’মিন। অনুরূপভাবে শেষাক্ষরে হামযাহ থাকলেও ওয়াকফের কারণে (‘) ব্যবহার করা হয়েছে। খাড়া যাবার বা মাদ্দে আসলির ক্ষেত্রে (1) এর উপরে খাড়া যাবার-ই ব্যবহার করা হয়েছে।


সহীহ দুআ ঝাড়ফুঁক ও যিক্‌র

ভূমিকা

اَلْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ العَالَمِينَ، وَالصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ عَلَى سَيّدِ الْمُرْسَلِينَ، وَعَلَى الِهِ وَصَحْبِهِ أَجْمَعِينَ وَبَعْدُ

সহীহ সুন্নাহ বা হাদীস্ত্র দ্বারা শুদ্ধ আমাল ও ইবাদাত করতে বাংলার মুসলিম সমাজকে অনুপ্রাণিত করার উদ্দেশ্যে এটি একটি ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। যেহেতু সন্দিগ্ধ দঈফ হাদীস্ত্রকে ভিত্তি ক’রে কোন আমাল করার চেয়ে সহীহ হাদীসুকেই ভিত্তি করে নিঃসন্দেহে নিশ্চিতরূপে আমাল করাটাই উত্তম । কারণ দঈফ হাদীস্ত্র দ্বারা আমাল ‘বিদআত’ বলে পরিগণিত।

বাংলা ভাষায় লিখিত অধিকাংশ দুআ’ ও যিরের বই-পুস্তকগুলোতে অনেক দঈফ হাদীস্ত্র থেকে দুআ’ ও যিকর সংকলিত হয়েছে। যার প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রেখে -আমার জানা মতে বিশুদ্ধ হাদীস্ত্র থেকে বিশুদ্ধ দুআ’গুলো অত্র পুস্তিকায় সংকলন করেছি। এ প্রয়াস আল-মাজমাআহর সমবায় ইসলামী দাওয়াত অফিসের কর্তৃপক্ষের নিকট ব্যক্ত হলে তাঁরা সহীহ দুআ ঝাড়ফুঁক ও যিক্‌র বইটিকে প্রকাশ করার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এর জন্য আমি নিজের এবং তাঁদের জন্য আল্লাহর নিকট উত্তম প্রতিদানের আশা রাখি।

অর্থ :হৃদয়ঙ্গম সহ নামায, দুআ’ ও যিক্র-আদি করাই উত্তম ও আবশ্যিক ভেবে এ সহীহ দুআ ঝাড়ফুঁক ও যিক্‌র পুস্তিকায় প্রত্যেক দুআ’র শেষে তার অর্থ সংযোজিত হয়েছে। আরবী জানেন না এমন বাংলা ভাষী পাঠকের জন্য দুআ’র বাংলা উচ্চারণও তার সাথে যুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু আরবী ভিন্ন কোন অন্য ভাষায় কুরআন কারীমের আয়াত লিখা ওলামাদের ফাতওয়া মতে অবৈধ বলে কোন কুরআনী দুআ’র উচ্চারণ দেওয়া সম্ভব হয়নি। আশা করি আল্লাহ ও তাঁর যিক্র-ভক্ত মুসলিম পাঠক কোন কারী আলিমের নিকট মৌখিক মুখস্ত করে নেবেন। অথবা নিজে আরবী শিখে সৃষ্টিকর্তা সুমহান প্রভুর বাণী নিজে পড়ার সৌভাগ্য লাভ করবেন। কারণ ভক্তি-ভাজনের বচনামৃতে পরিতৃপ্ত না হতে পারলে ভক্তের ভক্তি অপূর্ণই থেকে যায় ।


সহীহ দুআ ঝাড়ফুঁক ও যিক্‌র
সূচিপত্র
  • ভূমিকা
  • যিকরের ফদীলত
  • যিকরের উপকারিতা
  • যিকরের প্রকার
  • তিলাওয়াতের ফদীলত
  • দুআ’র ফদীলত
  • দুআ’র আদব
  • কখন ও কোথায় দুআ’ কবুল হয়
  • দুআ’ কবুল না হবার কারণ
  • দুআ’ কবুল হবার কারণ
  • শুদ্ধ দুআ’
  • তাসবীহ ও তাহলীল
  • শয়নকালে দুআ’ ও যিক্‌র
  • ঘুম না এলে
  • সকাল ও সন্ধ্যায় যিক্‌র
  • রাত্রে ভয় পেলে
  • দুঃস্বপ্ন দেখলে
  • রাত্রিকালে ইবাদাতের ফদীলত
  • ঘুম থেকে জাগার পর যিক্‌র
  • কাপড় পরার দুআ’
  • নতুন কাপড় পরার দুআ’
  • কাউকে নতুন কাপড় পরে থাকতে দেখলে
  • কাপড় খোলার সময়
  • প্রস্রাব পায়খানার পূর্বের দুআ’
  • প্রস্রাব পায়খানার স্থান থেকে বের হয়ে
  • ঘর থেকে বের হতে
  • অদূর পূর্বে ও পরে যিক্‌র
  • ঘরে প্রবেশ করতে
  • সালাত
  • মাসজিদে যেতে পথে
  • মাসজিদে প্রবেশ করতে
  • মাসজিদ থেকে বের হতে
  • আযানের সময়
  • নামায শুরু করার সময়
  • কতিপয় আয়াতের জওয়াবে
  • রুকূ’র যিকর
  • রুকূর্ত থেকে উঠে
  • সিজদা যিক্‌র
  • দুই সিজদার মাঝে
  • তিলাওয়াতের সিজদায়
  • তাশাহহুদ
  • দরূদ
  • দুআঁ’য়ে মাসূরা
  • ফরদ নামাযের পরে যিক্‌র
  • ইস্তিখারার দুআ’
  • দুআ’য়ে কুনূত
  • বিতরের নামাযে সালাম ফিরে
  • ঈদের তাকবীর
  • হাজ্জের নিয়তকালে
  • উমরাহর নিয়তকালে
  • তালবিয়্যাহ
  • কা’বাহ দর্শনের সময়
  • তাওয়াফ কালে দুই রুকনের মাঝে
  • মাকামে ইব্রাহীমে পৌঁছে
  • সাফা পর্বতে পৌঁছে
  • সাফা ও মারওয়ায় চড়ে
  • সাঈর দুআ’
  • আরাফাতের দুআ’
  • যবেহ করার সময়
  • ঝাড়ফুঁক
  • রোগী সাক্ষাৎ করতে
  • রোগীকে ঝাড়তে
  • ব্যাধিগ্রস্ত লোক দেখলে
  • বেদনা দূর করতে
  • জ্বর হলে
  • জ্বিন বদনজর ও যাদু ইত্যাদিত থেকে ঝাড়তে
  • বিষধর জন্তুর দংশনে ঝাড়তে
  • জ্বিন ও বদ্ নজরাদি হতে শিশুদের বাঁচাতে
  • জিন ঝাড়তে
  • জিন থেকে পানাহ চাইতে
  • শয়তানের কুমন্ত্রণা ও অনিষ্ট হতে রক্ষা পেতে এবং
  • শয়তান বিতাড়ণ করতে
  • দাজ্জালের ফিতনা থেকে মুক্তি চাইতে
  • মৃত্যু চাইতে
  • জীবন থেকে নিরাশ হলে
  • মরণাপন্নকে তালকীন
  • মৃতব্যক্তির চক্ষু বন্ধ করার সময়
  • মসীবতের সময়
  • জানাযাহর দুআ’
  • জানাযাহয় শিশুর জন্য দুআ’
  • মৃতব্যক্তির পরিজনকে সান্ত্বনা দিতে
  • কবরে লাশ রাখার সময়
  • কবর যিয়ারতের দুআ’
  • বিবিধ
  • দুশ্চিন্তা দূর করার দুআ’
  • উপস্থিত বিপদ দূর করতে
  • সংকট মুহূর্তে
  • শত্রু বা অত্যাচারী শাসকের সাক্ষাতে
  • মনে সন্দেহ হলে
  • গুপ্ত শির্ক হতে পানাহ চাইতে
  • অশুভ ধারণা হলে
  • ঋণমুক্ত ও ধনী হতে
  • হতাশাজনক কিছু ঘটলে
  • সন্তোষজনক কিছু ঘটলে
  • অসন্তোষজনক কিছু ঘটলে
  • খুশী বা আশ্চর্যজনক কিছু ঘটলে বা দেখলে
  • মনোরম কিছু দেখলে
  • আগামীতে কিছু করব বললে
  • কাউকে হাসতে দেখলে
  • ঘাবড়ে গেলে বা ভয় পেলে
  • ঝড়বাতাসের সময়
  • মেঘ দেখলে
  • বৃষ্টি নামলে
  • মেঘ গর্জন কালে
  • বৃষ্টির পর
  • অনাবৃষ্টি হলে
  • অতিবৃষ্টি হলে
  • খাওয়ার আগে দুআ’
  • খাওয়ার পরে দুআ’ যা চাইতে
  • অপরের নিকট পানাহার করলে তার জন্য দুআ’ ১
  • কেউ কিছু পান করালে তার জন্য দুআ’
  • রোযা ইফতারের সময়
  • অপরের নিকট ইফতার করলে
  • নতুন চাঁদ দেখলে
  • নতুন ফল-ফসল দেখলে
  • হাঁচির সময়
  • জুমুআহ, বিবাহবন্ধন ইত্যাদির খুতবাহ
  • বরকনের জন্য দুআ’
  • বাসরের দুআ’
  • সহবাসের পূর্বে দুআ’
  • সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে
  • ক্রোধের সময়
  • মজলিস ও জালসায় দুআ’
  • কাফফারাতুল মাজলিস
  • দুআ’র বদলে দুআ’
  • কারো প্রশংসা করতে হলে
  • কাউকে কষ্ট দিয়ে থাকলে তার জন্য দুআ’
  • কেউ অর্থ দিয়ে সাহায্য করতে চাইলে
  • ঋণ পরিশোধ করলে
  • কেউ কোন উপকার বা সাহায্য করলে কিংবা
  • উপহার দিলে
  • কোন পশু ক্রয় করলে
  • যানবাহন চড়লে
  • সফরে বের হবার সময়
  • সফরকারীর নিজের পরিবারের জন্য দুআ’
  • সফরকারীকে বিদায়কালে দুআ’
  • পথ চলতে
  • কোন গ্রাম বা শহর প্রবেশ করতে
  • বাজার প্রবেশ করলে
  • যানবাহন দুর্ঘটনাগ্রস্ত হলে
  • সফরকারীর ভোরের যিক্
  • সফরে কোন অচেনা স্থানে বিশ্রাম নিলে
  • সফর থেকে ফিরে এলে
  • জিহাদ বা হাজ্জ থেকে ফিরে এলে
  • সালাম
  • সালামের জওয়াব
  • অমুসলিম সালাম দিলে
  • মোরগের ডাক শুনলে
  • গাধার ডাক শুনলে
  • মহানবী (সা.) এর নাম শুনলে
  • আল্লাহ তাআলার আসমা’এ হুসনা
  • প্রার্থনামূলক কুরআনী দুআ’
  • সুন্নাহতে প্রার্থনামূলক দুআ’
  • দুনিয়া ও আখিরাতের মঙ্গল চাইতে
  • তাকওয়া, পবিত্রতা ও সচ্ছলতা চাইতে
  • দ্বীন ও আনুগত্য চাইতে
  • দুর্বলতা, অলসতা, কৃপণতা ও স্থবিরতা থেকে বাঁচতে
  • গোনাহ থেকে ক্ষমা চাইতে
  • আল্লাহর গযব থেকে পানাহ চাইতে
  • অঙ্গ আদির অনিষ্ট হতে পানাহ চাইতে
  • দুর্ভাগ্য ও দুশমন-হাসি থেকে রক্ষা চাইতে
  • সৎ ও সঠিক পথ চাইতে
  • অধিক ধন ও জন চাইতে
  • আল্লাহর সাহায্য ও দ্বীনদারী চাইতে
  • বিভিন্ন ব্যাধি থেকে আশ্রয় চাইতে
  • দুশ্চরিত্র ও মন্দ কর্ম থেকে পানাহ চাইতে
  • সৎকর্ম ও আল্লাহপ্রেম চাইতে
  • পথভ্রষ্টতা থেকে রেহাই চাইতে
  • দুর্ঘটনাগ্রস্ত হওয়া থেকে মুক্তি চাইতে
  • আল্লাহর অনুগ্রহ ও রুষী চাইতে
  • দারিদ্র্য ও অভাব থেকে পানাহ চাইতে
  • মন্দ প্রতিবেশী থেকে আশ্রয় চাইতে
  • জ্ঞান ও ইল্‌ম চাইতে
  • দোযখ ও কবরের আযাব থেকে বাঁচতে
  • অত্যাচারীর বদলা নিতে
  • বিনতি চাইতে
  • সুন্দর চরিত্র চাইতে
  • সর্বমোট
  • লেখকের অন্যান্য বই

সহীহ দুআ ঝাড়ফুঁক ও যিক্‌র
যিকরের ফদীলত

‘যিকর’-এর অর্থ স্মরণ। মু’মিন সর্বদা আল্লাহর রহমত ছায়ায় প্রতিপালিত, তার জীবন আল্লাহর দয়াবারিতে সদা সিক্ত। তার জীবনের সকল কিছুই আল্লাহর দান। প্রতি পদে তাকে আল্লাহরই আনুগত্য করতে হয় । আল্লাহই তার স্রষ্টা, মালিক, বিধানকর্তা এবং একমাত্র উপাস্য। তাই তার নিকটে আল্লাহ সদা স্মরণীয়। অন্তরে, মুখে ও কর্মে তাঁর যিক্র করা মুসলিমের অপরিহার্য কর্তব্য।

আল্লাহ তাআলা বলেন,অর্থাৎ, আল্লাহর যিকর (স্মরণ)-ই সবচেয়ে বড়।’ (সূরাহ আনকাবৃত ২৯ : ৪৫)

তিনি আরো বলেন,

(فَاذْكُرُونِي أَذْكُرْكُمْ وَاشْكُرُوا لِي وَلَا تَكْفُرُونِ)

অর্থাৎ, অতএব তোমরা আমাকে স্মরণ কর আমিও তোমাদেরকে স্মরণ করব। তোমরা আমার প্রতি কৃতজ্ঞ হও এবং কৃতঘ্ন হয়ো না।’ (সূরাহ বাকারাহ 2 : ১৫২)

তিনি অন্যত্র বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে অধিকরূপে স্মরণ কর।’ (সূরাহ আহযাব ৩৩ : ৪১)

তিনি আরো বলেন, ‘আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও আল্লাহকে অধিক স্মরণকারিণী নারী-এদের জন্য আল্লাহ ক্ষমা ও মহা প্রতিদান রেখেছেন।” (সূরাহ আহযাব ৩৩ : ৩৫)

তিনি আরো বলেন, “হে মু’মিনগণ তোমাদের ঐশ্বর্য ও সন্তান-সন্ততি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণে উদাসীন না করে, যারা উদাসীন হবে তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত।” (সূরাহ মুনাফিকূন ৬৩ : ৯)

তিনি আরো বলেন, “সেই সমস্ত গৃহে — যে সমস্ত গৃহকে আল্লাহ নির্মাণ ও সম্মান করতে এবং তাতে তাঁর নাম স্মরণ করতে আদেশ দিয়েছেন সেখানে সকাল-সন্ধ্যায় তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করে সেসব লোক, যাদেরকে তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য এবং ক্রয়-বিক্রয় আল্লাহর স্মরণ হতে এবং নামায পড়া ও যাকাত প্রদান করা হতে বিরত রাখে না। তারা ভয় করে সেদিনকে, যেদিন তাদের অন্তর ও দৃষ্টি ভীতি-বিহ্বল হয়ে পড়বে।” (সূরাহ নূর ২৪ : ৩৬-৩৭)

সহীহ দুআ ঝাড়ফুঁক ও যিক্‌র

“তুমি তোমার প্রতিপালককে মনে মনে সবিনয় ও সশঙ্কচিত্তে অনুচ্চস্বরে প্রত্যুষে ও সন্ধ্যায় স্মরণ কর এবং উদাসীনদের দলভুক্ত হয়ো না।” (সূরাহ আ’রাফ ৭ : ২০৫)

তিনি অন্যত্র বলেন, “হে ঈমানদারগণ! তোমরা যখন কোন দলের সম্মুখীন হবে, তখন অবিচলিত থাক এবং আল্লাহকে অধিক অধিক স্মরণ কর; যাতে তোমরা সফলকাম হও।” (সূরাহ আনফাল ৮ : ৪৫)

তিনি আরো বলেন, “অতঃপর যখন তোমরা হাজ্জ সম্পন্ন করে নেবে, তখন আল্লাহকে এমনভাবে স্মরণ করবে যেমন তোমরা তোমাদের পিতৃপুরুষকে স্মরণ করতে অথবা তদপেক্ষা গভীরভাবে।” (সূরাহ বাকারাহ 2:200)

তিনি বলেন, “অতঃপর নামায সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ অনুসন্ধান কর ও আল্লাহকে অধিকরূপে স্মরণ কর; যাতে তোমরা সফলকাম হও। (সূরাহ জুমুআহ ৬২ : 10 )

তিনি আরো বলেন, “সে (য়ূনুস) যদি আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা না করত, তাহলে সে পুনরুত্থানদিবস পর্যন্ত সেথায় (মাছের পেটে) অবস্থান করত।” (সূরা সাফ্ফাত ৩৭: ১৪৩-১৪৪)

আল্লাহর রসূল (সা.) বলেন, “কোন সম্প্রদায় যখন আল্লাহর যিক্র করতে বসে তখন ফিরিশতামণ্ডলী তাদেরকে বেষ্টিত করেন, আল্লাহর রহমত তাদেরকে ছেয়ে নেয়, তাদের উপর শান্তি বর্ষণ হয় এবং আল্লাহ তাঁর নিকটবর্তী ফিরিশ্তাবর্গের নিকট তাদের কথা আলোচনা করেন ।”১

“আল্লাহর ভ্রমণরত অতিরিক্ত ফিরিশ্তাদল আছেন, যাঁরা যিকরের মজলিস অনুসন্ধান করে থাকেন।””

“যে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং যে করে না, উভয়ের উপমা জীবিত ও মৃতের ন্যায় ৷””

“আমি কি তোমাদেরকে তোমাদের উত্তম কাজের সন্ধান দেব না? যা তোমাদের প্রভুর নিকট সবচেয়ে পবিত্র, তোমাদের মর্যাদায় সবচেয়ে উচ্চ, সোনা-চাঁদি দান করার চেয়ে উত্তম এবং শত্রুর সম্মুখীন হয়ে গর্দান কাটা ও কাটানোর চেয়ে শ্রেয়।” সকলে বললেন, “নিশ্চয় বলে দিন।’ তিনি বললেন, “আল্লাহ তাআলার যিকর ।”

সহীহ দুআ ঝাড়ফুঁক ও যিক্‌র

“আল্লাহ তাআলা বলেন, আমি আমার বান্দার ধারণার কাছে থাকি যখন সে আমাকে স্মরণ করে তখন আমি তার সঙ্গে থাকি। যদি সে আমাকে অন্তরে স্মরণ করে তাহলে তাকেও আমি আমার অন্তরে স্মরণ করি, যদি সে আমাকে কোন সভায় স্মরণ করে তবে আমি তাকে তার চেয়ে উত্তম সভায় স্মরণ করে থাকি– ”৫

“মুফারিদগণ আগে বেড়ে গেছে।” সকলে জিজ্ঞাসা করল, ‘হে আল্লাহর রসূল! ‘মুফারিদ কারা?’ তিনি বললেন, “আল্লাহর অধিক অধিক যিক্রকারী পুরুষ ও নারী।”৬

এক ব্যক্তি বলল, ‘হে আল্লাহর রসূল! কল্যাণের দরজা তো অনেক। তার সবটা পালন করতে আমি সক্ষম নই । অতএব আমাকে এমন কাজের সন্ধান দিন, যাকে আমি দৃঢ়ভাবে ধরে থাকব, আর অধিক ভার দিবেন না যাতে আমি ভুলে না যাই (যেহেতু আমি বৃদ্ধ হয়ে গেছি)।’ তিনি বললেন, “তোমার জিহ্বা যেন সর্বদা আল্লাহর যিকরে আর্দ্র থাকে।””

“যে ব্যক্তি এমন মজলিসে বসে, যেখানে সে আল্লাহর যিক্র করে না (এর জন্য) আল্লাহর তরফ থেকে তার উপর পরিতাপ আসবে ।”৮

যিকরের উপকারিতা

আল্লাহর যিকর ও স্মরণে শতাধিক উপকার ও লাভ রয়েছে । যেমন, যিক্ শয়তান দূর করে, রহমানকে সন্তুষ্ট করে, অন্তর থেকে দুশ্চিন্তা দূর করে ও অশান্তি অপসারণ করে, হৃদয়ে প্রশান্তি ও উৎফুল্লতা আনে, দেহ- মনকে সবল করে, চিত্তকে জ্যোতির্ময় করে, মুখমণ্ডলকে দীপ্তিময় করে, রুযী আনয়ন করে, আল্লাহর ভালোবাসা দান করে, জীবনে আল্লাহর ভীতি আনে, মু’মিনকে আল্লাহর প্রতি প্রত্যাবর্তন করায়, আল্লাহর সামীপ্য প্ৰদান করে, মা’রিফাতের দ্বার উন্মুক্ত করে, আল্লাহর স্মরণ দান করে, অন্তর জীবিত করে, আত্মা ও অন্তরকে আহার প্রদান করে, পাপমুক্ত করে, বহু উদ্বেগ দূরীভূত করে, আল্লাহর আযাব ও গযব থেকে নিস্তার দেয়, শান্তি ও রহমত আনে, পরচর্চা, গীবত, চুগলী, গালমন্দ, মিথ্যা, অশ্লীলতা, বাজে ও অসার কথা থেকে দূরে রাখে, কিয়ামতে পরিতাপ থেকে নিষ্কৃতি দেয়, নির্জনে ক্রন্দনের সাথে যিক্রকারীকে ছায়াহীন কিয়ামতে আল্লাহর আরশ তলে ছায়া দান করে, হৃদয়ের শূন্যতা ও প্রয়োজন দূর করে, মু’মিনকে সতর্ক ও সংযমী করে, বন্ধুত্ব, প্রেম, সাহায্য ও প্রেরণার মাধ্যমে আল্লাহর সঙ্গতা দান করে, অত্যাধিক নেকী ও পুরস্কারের অধিকারী করে, হৃদয়ের কঠোরতা দূর করে, মনের রোগ নিরাময় করে।

সহীহ দুআ ঝাড়ফুঁক ও যিক্‌র

যিকরকারীর জন্য ফিরিশ্তা দুআ’ করেন, যিকরের মজলিস ফিরিশ্তাবর্গের মজলিস, যিক্রকারীদের নিয়ে আল্লাহ তাআলা ফিরিশ্তাবর্গের নিকট গর্ব করেন ।

যিক্র শুক্ররের মস্তক, যিকর  দুআ’কে কবুলের যোগ্য করে, মু’মিনকে আল্লাহর আনুগত্যে সহায়তা করে, মুশকিল আসান করে, বিপদ ও বালা দূর করে, অন্তর থেকে সৃষ্টির ভয় দূর করে, মেহনতের কাজে শক্তি প্রদান করে, যিকরে আছে মিষ্ট স্বাদ, আল্লাহর প্রেম ইত্যাদি ।

যিকর দুই প্রকার :

যিকরের প্রকার

১। আল্লাহ তাআলার সুন্দরতম নামাবলী এবং মহত্তম গুণাবলীর যিক্র করা, এসব দ্বারা তাঁর প্রশংসা ও গুণগান করা এবং আল্লাহর জন্য যা উপযুক্ত নয় তা থেকে তাঁকে পাক ও পবিত্র মনে করা।

এই যিকরও আবার দুই প্রকারের :

ক- আল্লাহর নাম ও গুণাবলী দ্বারা তাঁর প্রশংসা রচনা করা। যেমন ‘সুবহানাল্লাহ’, আল-হামদু লিল্লাহ’, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’, আল্লাহু আকবার’ প্রভৃতি ।

খ- আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর অর্থ ও আহকাম উল্লেখ করা । 

১. মুসলিম ৪/২০৭৪

২. বুখারী ৭/১৬৮ ও মুসলিম ৪/২০৬৯ ৩. বুখারী ৭/১৬৮, মুসলিম ১/৫৩৯

৪. তিরমিযী ৫/৪৫৮, ইবনু মাজাহ ২/১২৪৫, সহীহুল জামি— ২৬২৯ নম্বর ৫. বুখারী ৮/১৭১, মুসলিম ৪/২০৬১ নম্বর

৬. মুসলিম ৪/২০৬২ নম্বর

৭. তিরমিযী ৫/৪৫৮, ইবনু মাজাহ ২/১২৪৬ ৮. আবূ দাউদ ৪/২৬৪, সহীহুল জামি’ ৫/৩42

৯. বিস্তারিত দ্রষ্টব্য, আল-ওয়াবিলুস সায়ব, ইবনুল কায়্যিম

সহীহ দুআ ঝাড়ফুঁক ও যিক্‌র

সহীহ দুআ ঝাড়ফুঁক ও যিক্‌র

Reviews (0)

Reviews

There are no reviews yet.

Be the first to review “সহীহ দুআ ঝাড়ফুঁক ও যিক্‌র”

Your email address will not be published.

Shopping cart
Facebook Twitter Instagram YouTube WhatsApp WhatsApp

Sign in

No account yet?