স্বলাতে মুবাশ্‌শির

৳ 295

স্বলাতে মুবাশ্‌শির
লেখক : আব্দুল হামীদ ফাইযী আল-মাদানী
প্রকাশনী : তাওহীদ পাবলিকেশন্স
বিষয় : সালাত/নামায
পৃষ্ঠা : ৫৬৮, কভার : হার্ড কভার,

Description

স্বলাতে মুবাশ্‌শির

স্বলাতে মুবাশ্‌শির
লেখক : আব্দুল হামীদ ফাইযী আল-মাদানী
প্রকাশনী : তাওহীদ পাবলিকেশন্স
বিষয় : সালাত/নামায
পৃষ্ঠা : ৫৬৮, কভার : হার্ড কভার,
বইটি কিনতে কিল্ক করুন: স্বলাতে মুবাশ্‌শির
আরো জানতে কিল্ক করুন: তাওহীদ পাবলকিশেন্স


স্বলাতে মুবাশ্‌শির

নবী (স) বলেন,

“তোমরা সেই মর্ত নামায পড়, যে মত আমাকে পড়তে দেখেছ।”

(বুখারী ও মুসলিম)

স্বলাতে মুবাশ্‌শির

আব্দুল হামীদ ফাইযী আল-মাদানী

বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক ইসলামী গবেষক, লেখক, মুহাক্কিক আলিম ও দাঈ

প্রকাশনায়

তাওহীদ পাবলিকেশন্স

ঢাকা-বাংলাদেশ


স্বলাতে মুবাশ্‌শির

আব্দুল হামীদ ফাইযী আল-মাদানী এর জীবনী

শায়খ আব্দুল হামীদ ফাইযী আল-মাদানী হাফিযাহুমুল্লাহ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আউশগ্রাম থানার অন্তর্গত আলেফনগর গ্রামে ১৯৬৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন । হাতে-খড়ি গ্রামের মক্তব থেকেই। বাংলা লেখাপড়া আউশগ্রাম হাই স্কুলে । আরবী শিক্ষার প্রাথমিক মাদরাসা হলো পুবার ইসলামিয়া নিজামিয়া মাদরাসা । এখানকার আদর্শ উস্তায ছিলেন মুহতারাম নাজমে আলম শামসী (রহিমাহুল্লাহ)। মাধ্যমিক বিভাগের পড়াশুনা হয় বীরভূম জেলার মহিষাডহরীর জামিআ রিয়াযুল উলুমে । এখানকার আদর্শ উস্তায ছিলেন শাইখুল হাদীয় মুহতারাম আব্দুর রউফ শামীম (হাফিযাহুল্লাহ)। উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি ভারতের উত্তর প্রদেশের প্রসিদ্ধ শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান “জামিআ ফাইযে আম” সফর করেন। এখানে তাঁর আদর্শ উস্তায ছিলেন হাফিয নিসার আহমদ আযমী (হাফিযাহুল্লাহ)। ফাইযে আম থেকে তিনি স্কলারশীপ নিয়ে সৌদি আরবের মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে কৃতিত্বের সাথে “লিসান্স” ডিগ্রী লাভ করেন ।

বর্তমানে তিনি সৌদি আরবের আল-মাজমাআহ শহরে ইসলামিক সেন্টারে দাওয়াত ও তাবলীগের কাজে নিয়োজিত আছেন ।তিনি পিস টিভি বাংলার একজন আলোচক । এছাড়াও তিনি ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ের উপর আলাচেনা পেশ করে থাকেন। এ যাবৎ তিনি ছোট-বড় প্রায় শতাধিক বই রচনা, অনুবাদ ও সম্পাদনা করেছেন এবং এখনও তাঁর কলম তেজস্বী ঘোড়ার মত চলমান রয়েছে ।

আমরা দুআ’ করছি আল্লাহু তাআলা যেন শায়খকে হায়াতে তাইয়েবা দান করেন । আমীন!


স্বলাতে মুবাশ্‌শির

সূচীপত্র

বিষয়:

  • অভিমত
  • ভূমিকা নিয়ত
  • নামাযের শর্তাবলী
  • নামাযের আরকানসমূহ
  • নামাযের ওয়াজিবসমূহ
  • নামায কখন ফরয হয়?
  • নামাযের মাহাত্ম্য
  • নামাযের গুরুত্ব
  • পবিত্রতা
  • গোসল করার নিয়ম
  • ওযূ ও তার গুরুত্ব
  • ওযূ করার নিয়ম
  • ওযূর শেষে দুআ’
  • ওযূর আনুষঙ্গিক মাসায়েল রোগীর পবিত্রতা ও ওযূ-গোসল ওযূ নষ্ট হওয়ার কারণসমূহ যাতে ওযূ নষ্ট হয় না

স্বলাতে মুবাশ্‌শির

  • যে যে কাজের জন্য ওযূ জরুরী বা মুস্তাহাব
  • মোজার উপর মাসাহ
  • মাসাইর শর্তাবলী
  • মাসাইর সময়কাল
  • মাসাহর নিয়ম
  • মাসাই নষ্ট হয় কিসে?
  • মাসাইর আনুষঙ্গিক মাসায়েল
  • তায়াম্মুম
  • কোন্ কোন্ অবস্থায় তায়াম্মুম বৈধ?
  • কিসে তায়াম্মুম হবে? তায়াম্মুম করার পদ্ধতি
  • তায়াম্মুম কিসে নষ্ট হয়? তায়াম্মুমের আনুষঙ্গিক মাসায়েল মিসওয়াক করার গুরুত্ব
  • নামাযীর লেবাস
  • নামাযের ভিতর বিশেষ লেবাস
  • নামাযের ওয়াক্তসমূহ
  • ফজরের সময়
  • যুহরের সময়
  • আসরের সময়
  • মাগরিবের সময়
  • ইশার সময়

স্বলাতে মুবাশ্‌শির

  • নামাযের সময় নির্দিষ্টীকরণের পশ্চাতে হিকমত
  • যে যে সময়ে (নফল) নামায নিষিদ্ধ ওয়াক্ত-বিষয়ক আরো কিছু মাসআলা আযান ও তার মাহাত্ম্য
  • আযানের প্রারম্ভিক ইতিহাস
  • আযানের শব্দাবলী
  • আযানের বিশেষ নিয়মাবলী
  • মুআফ্ফিনের কি হওয়া ও কি করা উচিত?
  • আযানের জওয়াব
  • মাসজিদ ছাড়া অন্য স্থানে আযান
  • কায়া নামাযের জন্য আযান
  • সময় পার হলে আযান
  • খাস মহিলামহলে আযান ও ইকামাত
  • ঝড়-বৃষ্টির সময় আযানের বিশেষ শব্দ
  • তাহাজ্জুদ ও সাহারীর আযান
  • সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে আযান
  • জিন-ভূতের ভয়ে আযান

স্বলাতে মুবাশ্‌শির

  • আযানের পর মাসজিদ থেকে বের হওয়া
  • আযান ও ইকামাতের মাঝে ব্যবধান
  • আযান ও ইকামাতের মাঝে দুআঁ’
  • ইকামাত
  • ইকামাতের জওয়াব ইকামাত কে দেবে?
  • ইকামাত ও নামায শুরু করার মাঝে ব্যবধান মাসজিদ ও নামায পড়ার জায়গা
  • মাসজিদের মাহাত্ম্য
  • গুরুত্বপূর্ণ চারটি মাসজিদ
  • মাসজিদ নির্মাণের ফযীলত
  • মাসজিদে যাওয়ার মাহাত্ম্য
  • মাসজিদের প্রতি আসক্তি ও তথায় অবস্থানের
  • ফযীলত
  • মাসজিদে যাওয়ার আদব
  • মাসজিদে প্রবেশ ও বের হওয়ার সময় দুআ’
  • তাহিয়্যাতুল মাসজিদ নামায
  • মাসজিদ হবে পবিত্র ও সুগন্ধময়
  • মাসজিদে যা অবৈধ
  • মাসজিদে যা করা বৈধ

স্বলাতে মুবাশ্‌শির

  • মাসজিদ নির্মাণ-বিষয়ক কিছু ফতোয়া
  • মাসজিদে শির্ক ও বিদআত
  • মাসজিদ-বিষয়ক আরো কিছু মাসায়েল
  • যে সকল স্থানে নামায পড়া মকরূহ ও অবৈধ
  • সুতরাহ
  • সুতরাহ কিসের হবে?
  • সুতরাহ কতদূরে রাখা হবে?
  • ইমামের সুতরাই মুক্তাদীদের সুতরাহ
  • নামাযীর সামনে বেয়ে পার হওয়া হারাম
  • কেউ সামনে বেয়ে পার হতে চাইলে নামাযীর কর্তব্য
  • বিনা সুতরায় নামায বাতিল কখন?
  • কিবলাহ
  • কিবলার অভিমুখ
  • কিবলাহ জানতে না পারলে
  • কোন্ কোন্ অবস্থায় কিবলাহ-মুখ না হলেও নামায শুদ্ধ
  • নামাযের নিয়ত
  • নামাযে সলফদের একাগ্রতার নমুনা নামাযের মধ্যে যা করা বৈধ
  • নামাযে যা করা মকরূহ অথবা নিষিদ্ধ নামায যাতে বাতিল হয়
  • কার নামায কবুল নয়? কাম্বা নামায

স্বলাতে মুবাশ্‌শির

  • কাম্বা নামাযে তারতীব জরুরী ইশার জামাআতে মাগরিবের নামায তারতীব কখন বিবেচ্য নয়?
  • কাম্বা উমরী ও নামাযের কাফ্ফারাহ জামাআত সম্পৰ্কীয় মাসায়েল
  • জামাআতের মান ও গুরুত্ব জামাআতের ফযীলত ও মাহাত্ম্য
  • কোন্ জামাআতে স্নাওয়াব বেশী?
  • কার উপর এবং কোন্ নামাযের জামাআত ওয়াজিব? জামাআতে মহিলাদের অংশ গ্রহণ
  • জামাআত তথা মাসজিদে যাওয়ার কিছু আদব
  • কি কি ওযরে জামাআত ছাড়া যায়?
  • কতগুলো নামাযী হলে জামাআত হবে?
  • নামাযের কতটুকু অংশ পেলে জামাআতের ফযীলত
  • পাওয়া যায়?
  • মাসজিদের জামাআত ছুটে গেলে
  • মাসজিদে দ্বিতীয় জামাআত
  • জামাআতের নামায দেরীতে হলে
  • ইমামতির বিবরণ

স্বলাতে মুবাশ্‌শির

  • ইমাম হওয়ার সর্বাধিক বেশী যোগ্য কে?
  • যাদের ইমামতি বৈধ ও শুদ্ধ
  • যাদের ইমামতি শুদ্ধ নয়
  • ইমাম ও মুক্তাদীর দাঁড়াবার স্থান ও নিয়ম
  • ইমামের কর্তব্য
  • মুক্তাদীর কর্তব্য
  • ইমামের পশ্চাতে কিরাআত
  • মুক্তাদীর জামাআতে শামিল হওয়ার বিভিন্ন অবস্থা রুকূ’ পেলে রাকআত গণ্য মাসবূকের ইকতিদা
  • আয়াতের জবাবে মুক্তাদীর দুআ’ বলা ইমাম ভুল করলে মুক্তাদীর কর্তব্য
  • ইমামের ইমামতি করায় কোন সমস্যা দেখা দিলে
  • ইমামের লজ্জাস্থান খোলা দেখলে
  • ইমাম সূরা ভুল পড়লে
  • একই নামায দুইবার পড়া যায় কি?
  • ইমামের তাকবীর পৌঁছানো

স্বলাতে মুবাশ্‌শির

  • এক নামায পড়ার পর অপর নামাযের জন্য অপেক্ষা
  • করার ফযীলত
  • জুমুআর নামায
  • জুমুআহ যাদের উপর ফরয নয়
  • জুমুআর সময়
  • জুমুআর জন্য নিম্নতম নামাযী সংখ্যা
  • জুমুআর স্থান
  • জুমুআর আযান
  • জুমুআর খুতবার আহকাম
  • জুমুআয় উপস্থিত ব্যক্তির কর্তব্য
  • স্থানীয় ভাষায় খুতবা
  • জুমুআর নামায ও তার সুন্নতী কিরাআত
  • জুমুআর রাকআত ছুটে গেলে
  • জুমুআর আগে ও পরে সুন্নত
  • জুমুআর পরে ৪ অথবা ২ রাকআত সুন্নত
  • জুমুআর দিনের ফযীলত ও বৈশিষ্ট্য
  • জুমুআর দিনে করণীয়
  • জুমুআর দিন যা অবৈধ

স্বলাতে মুবাশ্‌শির

  • ঈদের দিন জুমুআহ পড়লে
  • মুসাফিরের নামায
  • কসর নামায
  • কতদূর সফরে কসর বিধেয়
  • কোথা থেকে কসর শুরু হবে? কসরের সময়-সীমা
  • সফরে সুন্নত ও নফল নামায মুসাফিরের ইমাম ও মুক্তাদী হয়ে নামায মুসাফিরের সফরের আগে-পরে নামায নামায জমা করে পড়ার বিধান
  • কোন্ কোন্ অবস্থায় জমা করা যায়? বৃষ্টি-বাদলে নামায জমা
  • অন্য কোন অসুবিধার কারণে নামায জমা জমা বিষয়ক অন্যান্য জরুরী মাসায়েল
  • বিভিন্ন যানবাহনে নামায
  • রোগীর নামায
  • সালাতুল খাওফ (ভয়ের নামায)
  • ভয় বেশী হলে
  • সুন্নত ও নফল (অতিরিক্ত) নামায
  • নফল নামায ঘরে পড়া ভাল
  • নফল নামাযে লম্বা কিয়াম করা উত্তম
  • নফল নামায বিনা ওজরে বসে পড়াও বৈধ সুন্নত নামাযের কায়া
  • নফল নামাযের প্রকারভেদ

স্বলাতে মুবাশ্‌শির

  • সুন্নাতে মুআক্কাদাহ ও গায়র মুআক্কাদাহ
  • সুন্নাতে মুআক্কাদাহ বা রাতেবাহ
  • ফজরের পূর্বে দু’ রাকা’আত সুন্নত
  • যুহরের সুন্নত
  • মাগরিবের সুন্নত
  • ইশার সুন্নত
  • সুন্নাতে গায়র মুআক্কাদাহ
  • আসরের পূর্বে ২ অথবা ৪ রাকআত
  • মাগরিবের আগে ২ রাকআত
  • ইশার পূর্বে ২ রাকআত
  • তাহাজ্জুদ নামায
  • তাহাজ্জুদ নামাযের মাহাত্ম্য
  • তাহাজ্জুদের বিভিন্ন আদব তাহাজ্জুদের সময়
  • তাহাজ্জুদের রাকআত সংখ্যা তাহাজ্জুদের কিরাআত
  • তাহাজ্জুদ নামাযের কাম্বা
  • বিত্র নামায
  • বিতরের সময়
  • বিত্র নামাযের রাকআত সংখ্যা
  • ১ রাকআত বিত্র
  • বিত্র নামাযের মুস্তাহাব কিরাআত
  • বিতরের কুনূত
  • কুনূতের স্থান ও নিয়ম
  • বিতরের নামাযের সালাম ফিরে দুআ’ এক রাতে দু’বার বিত্র নিষিদ্ধ বিরের পর নফল ২ রাকআত
  • বিতরের কাম্বা
  • বিত্র নামাযে জামাআত
  • পাঁচ-ওয়াক্ত নামাযে কুনূত

স্বলাতে মুবাশ্‌শির

  • চাশতের নামায
  • চাত নামাযের সময়
  • চাত নামায কত রাকআত
  • চাশতের নামায মাসজিদে পড়ার পৃথক ফযীলত
  • যাওয়াল (সূর্য ঢলার) পূর্বে নামায
  • ইস্তিখারার নামায
  • সালাতুত তাসবীহ
  • সালাতুত তাসবীহ নামাযের সময়
  • সালাতুল হা-জাহ
  • সালাতুত তাওবাহ
  • চন্দ্র ও সূর্যগ্রহণের নামায
  • সালাতুল ইস্তিসকা
  • বৃষ্টি প্রার্থনার দ্বিতীয় পদ্ধতি বৃষ্টি প্রার্থনার তৃতীয় পদ্ধতি
  • শবে মি’রাজের নামায
  • শা’বান মাসের খেয়ালী নামায
  • শবে বরাতের নামায

স্বলাতে মুবাশ্‌শির

  • রমাযান মাসের খেয়ালী শবে কদরের নামায
  • শওয়াল মাসের খেয়ালী নামায
  • যুলকা’দাহ মাসের খেয়ালী নামায
  • যুলহাজ্জ মাসের খেয়ালী নামায পরিশিষ্ট-১ ঈদের নামায
  • ঈদের নামাযের সময়
  • ঈদের নামাযের জন্য আযান ও ইকামাত
  • ঈদের নামাযের জন্য সুতরাহ
  • ঈদের নামাযের পদ্ধতি
  • ঈদের নামাযের কিরাআত
  • ঈদের নামাযের আগে ও পরে নামায
  • ঈদের নামায পুরো অথবা কিছু অংশ ছুটে গেলে
  • পরিশিষ্ট-২ জানাযার নামায
  • জানাযার নামাযের পদ্ধতি
  • প্রমাণপঞ্জী
  • বর্ধিত প্রমাণপঞ্জী………

স্বলাতে মুবাশ্‌শির

মাওলানা মুহাম্মাদ মুকাম্মাল হক রিয়াযী সাহেবের

অভিমত

নামায ইসলামের পঞ্চ স্তম্ভের অন্যতম। ইসলামে তার গুরুত্ব অপরিসীম তার গুরুত্ব সম্পর্কে কুরআন-হাদীস্ত্রের পাতা ভরপুর । নামায না পড়লে মুসলিম থাকা যায় না । আবার সঠিক পদ্ধতিতে তা আদায় না করলে জীবনের সব আমল পণ্ড। সেই জন্য সঠিক পদ্ধতিতে নামায পড়া আমাদের সকলের কর্তব্য। এই উদ্দেশ্যে উপনীত হতে হলে সঠিক নামায শিক্ষার পুস্তকের প্রয়োজন ।

বর্তমানে আমাদের সমাজে অধিকাংশ মানুষ নিজ নিজ কায়দায় নামায পড়ে; সুন্নতী তরীকার ধার ধারে না এবং জানেও না । এভাবে কত মানুষ করের পেটে চলে গেছে তার সংখ্যা আল্লাহই ভাল জানেন ।ভুল পদ্ধতিতে নামায পড়ার কয়েকটি কারণের মধ্যে নামাযের সঠিক তথ্য সম্বলিত পুস্তক না থাকা এবং অপর দিকে তথাকথিত বাজারী নামায শিক্ষা পুস্তকের অধিক প্রচলন একটি প্রধান কারণ। যেমন ফ্রেম, তেমনি ইট। সোজা ফ্রেমে সোজা ইঁট এবং বাঁকা ফ্রেমে বাঁকা ইট হওয়াটাই স্বাভাবিক । অবশ্য সঠিক নামায শিক্ষার পুস্তক একেবারে যে নেই, তা বলছি না । তবে তার সংখ্যা অতিশয় নগণ্য ।

শ্রদ্ধেয় মাওলানা আব্দুল হামীদ আল-ফাইযীর বই ‘স্বলাতে মুবাশ্‌শির’ পাঠ করে উপলব্ধি করতে পারলাম যে, সেটি নামাযের সঠিক মাসায়েল সম্বলিত, কুরআন-হাদীসের দলীল সমৃদ্ধ, সুসজ্জিত, সুবিন্যস্ত এবং মার্জিত ভাষায় প্রণীত। আল্লাহর কাছে আমার আশা, এ ধরনের পুস্তক নামাযের সঠিক পথ ও তথ্য দানে, নামাযীদের চাহিদা এবং শূন্যস্থান পূরণে সহায়ক হবে- ইন শা আল্লাহ ।

হে আল্লাহ! এ স্বলাতে মুবাশ্‌শির পুস্তকের প্রণেতাকে এবং যাঁরা এই পুস্তকের প্রকাশনার ব্যাপারে সাহায্য-সহযোগিতা করেছেন, তাঁদের সকলকেই ইহ-পরকালে উত্তম বদলা দান কর । আমীন ।

বিনীত

মুহাম্মাদ মুকাম্মাল হক উয়াইনাহ, সাউদী আরব


স্বলাতে মুবাশ্‌শির

ভূমিকা

নামায ইসলামের অন্যতম প্রধান ইবাদাত। দ্বীনের দ্বিতীয় স্তম্ভ। এ ইবাদাত কিভাবে শুদ্ধ হবে-সে চিন্তা প্রত্যেক নামাযীর । মুসলিম মাত্রই জানা দরকার যে, যে কোনও ইবাদাত ও আমল কবুল হয় একটি ভিত্তিতে । আর সে ভিত্তি হল ‘তাওহীদ’। সুতরাং যার তাওহীদ নেই, তার নামায নেই । সে নামাযী হলেও তার নামায মকবুল নয় আল্লাহর দরবারে । পক্ষান্তরে প্রত্যেক ইবাদাত ও আমল কবুল হয় দুটি মৌলিক শর্ত পালনের মাধ্যমে; (১) ইখলাস (সে কাজ কেবল মাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে হতে হবে। আর কারো উদ্দেশ্যে, অন্য কোন স্বার্থে সে কাজ করলে, তা আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য নয়)। (২) রসূল (মালায়া ) এর অনুসরণ । তাঁর নির্দেশ ব্যতীত অন্য কোন তরীকায় বা পদ্ধতিতে সে আমল করলে, তা আল্লাহর কাছে গ্রহণীয় নয় ।

মহান আল্লাহ বলেন, অর্থাৎ “সুতরাং যে ব্যক্তি আল্লাহর সাক্ষাৎ কামনা করে, সে ব্যক্তি যেন নেক আমল করে এবং তার প্রতিপালকের ইবাদাতে অন্য কাউকে শরীক না করে।”১

নবী মুবাশশির (স) বলেন, অর্থাৎ তোমরা সেইরূপ নামায পড়, যেরূপ আমাকে পড়তে দেখেছ।

স্বলাতে মুবাশ্‌শির

অনেক পাঠকের মনে শুরুতেই এ প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক যে, এ স্বলাতে মুবাশ্‌শির পুস্তক কোন্ মযহাবকে ভিত্তি করে লিখিত? এর উত্তরে বলা যায় যে, ইমাম আবূ হানীফা [“সুবহানাহ্ -এর উক্তি “হাদীস্ন সহীহ হলে সেটিই আমার মাযহাব।” অর্থাৎ সহীহ হাদীস্ন পাওয়া গেলে যয়ীফ হাদীস্ত্র বা রায় ও কিয়াসকে বর্জন করে সেই অনুযায়ী আমল করা প্রত্যেক মুসলিমের জন্য ওয়াজিব । আর সেই কথার প্রতি বিশেষ খেয়াল রেখে এই পুস্তক লিখিত ।

নামায শিক্ষার ব্যাপারে পাঠক হয়তো বিভিন্ন বই-পুস্তকে ‘নানা মুনির নানা মত’ লক্ষ্য করবেন । আর এমন মতবিরোধ যে অস্বাভাবিক তা নয় । এর কারণ অনেকটা এই যে, অনেকের নিকট সহীহ হাদীয় অজানা । অনেকের নিকট হাদীয় সহীহ বলে জানা থাকলেও আসলে তা যয়ীফ। আবার কোন হাদীয় এক রিজাল-সূত্রে যয়ীফ হলেও তা যে অন্য রিজাল-সূত্রে সহীহ, তা অনেকের অজানা। সুতরাং যদি কোন মুজতাহিদ নিজ ইজতিহাদে কোন মাসআলা বলে থাকেন এবং দলীল সে কথার সমর্থন করে, অথবা কোন অমুজতাহিদ আলেম যদি কোন মুজতাহিদের কথা নিজ পুস্তকে বা ফতোয়ায় নকল করেন, তাহলে এমন আলেমের বিরুদ্ধে কুপমণ্ডুকতার পরিচয় দিয়ে ‘ভুঁই-ফোঁড়, কাঠমোল্লা’ প্রভৃতি বলে বিরূপ মন্তব্য করা কোন বিজ্ঞ ও যশস্বী আলেমের জন্য শোভনীয় ও সমীচীন নয় ৷

১. সূরা আল-কাহফ ১৮/১১০

২. বুখারী ৬৩১, বায়হাকী সুনানুল কুবরা ২/৩৪৫, ৩৬৭২, দারাকুতনী ১০৬৯, সহীহ ইবনু হিব্বান ১৬৫৮, দারিমী ১২৫৩, মিশকাত ৬৮৩

৩. ইবনু আবেদীন, হাশিয়া ১/৬৩, সিফাতু সালাতিন নাবী (স), আলবানী ৪৬ পৃ., আল-ইরশাদ ইলা সহীহিল ই’তিকাদ ওয়ার রাদ্দু আলা আহলিশ শিরকি ওয়াল ইলহাদ ৭৪ পৃ.

স্বলাতে মুবাশ্‌শির

যেমন পাঠকের উচিত, দলীলের স্বরূপতা দেখে যথাসাধ্য সঠিক কোটি তা নিরূপণ করতে চেষ্টা করা এবং সেই মতে আমল করা। এ ক্ষেত্রে তাঁর জন্যও উচিত নয়, কোন অভিজ্ঞ আলেমের বিরুদ্ধে কোন প্রকারের কটুক্তি করা। এমন ছোটখাট বিষয়ে ইজতিহাদী মতপার্থক্যকে বিভ্রান্তিকর মনে না করা। কারণ, এ সকল (সুন্নতী) বিষয়ে সঠিক ফায়সালা ‘হ্যাঁ’ কিংবা ‘না’ যাই হোক, নামাযের কোন ক্ষতি হবে না। অতএব উদার মনে পরস্পর-বিরোধী মতের মধ্যে যে কোন একটির উপর সঠিক জ্ঞানে আমল করলে তিনি স্নাওয়াব-প্রাপ্ত হবেন। যেমন মুজতাহিদের ফায়সালা সঠিক হলে তিনি ২টি এবং বেঠিক হলে ১টি নেকী লাভ করবেন। আর তাঁর অনিচ্ছাকৃত ভুল ধর্তব্য হবে না ।

পাঠকের হাতে অত্র স্বলাতে মুবাশ্‌শির পুস্তকটি আসলে সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশিত ‘সালাতে মুবাশশির’-এর বিস্তারিত ও বর্ধিত রূপ ।

কেবল সহীহ হাদীষ্মকে ভিত্তি করেই, অধিক ক্ষেত্রে কে কি বলেছেন তা উল্লেখ না করেই কেবল সহীহ দিকটা তুলে ধরেছি আমার এই স্বলাতে মুবাশ্‌শির পুস্তিকায়। মানুষের মনে সহীহ শিক্ষার চেতনা ও বাসনার কথা খেয়াল রেখেই আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস । আল্লাহ যেন তা কবুল করেন, তাই আমার কামনা ।

বিভিন্ন বিতর্কিত মাসায়েলে আমি বর্তমান বিশ্বের প্রধান ৩টি রত্ন; বর্তমান বিশ্বের অদ্বিতীয় মুহাদ্দিস্থ আল্লামা শায়খ মুহাম্মাদ নাসিরুদ্দীন আলবানী, আল্লামা শায়খ ইবনে বায এবং আল্লামা ও ফকীহ শায়খ ইবনে উসাইমীন (রাহিমাহুমুল্লাহু জামীআন)গণের হাদীয়লব্ধ ও সহীহ দলীল ভিত্তিক মতকে প্রাধান্য দিয়েছি। আর এ কথা অবশ্যই প্রমাণ করে যে, আমি তাঁদের প্রত্যেকের; বরং প্রত্যেক হক-সন্ধানী রব্বানী আলেমের ভক্ত ও অনুরক্ত । তা বলে কারো অন্ধভক্ত নই। পক্ষান্তরে প্রত্যেক মুসলিমের কর্তব্য অধিকারীর অধিকার সঠিকরূপে আদায় করা। উলামার যথার্থ কদ্র করা। প্রত্যেক হক- সন্ধানীর অনুরক্ত হওয়া; যদিও বা তাঁদের কোন কোন অভিমত আমার- আপনার বুঝের অনুকূল নয় । বলা বাহুল্য, খাঁটি সোনা স্বর্ণকারই চিনতে পারে; স্বর্ণ-ব্যবসায়ী নয়।

‘নামায’ ইসলামের প্রধান ইবাদাত। ‘নামায’ শব্দটি ফারসী, উর্দু, হিন্দী ও আমাদের বাংলা ভাষায় আরবী ‘সালাত’ অর্থেই পরিপূর্ণরূপে ব্যবহৃত বলেই আমি ‘সালাত’-এর স্থানে ‘নামায’ই ব্যবহার করেছি। তাছাড়া বাংলাভাষীর অধিকাংশ মানুষ ‘সালাত’ শব্দটির সাথে পরিচিত নয় । তাই পরিচিত ও প্রসিদ্ধ শব্দই ব্যবহার করতে আমি প্রয়াস পেয়েছি। আর এতে শরয়ী কোন বাধাও নেই। সুতরাং এ বিষয়ে সুহৃদ পাঠকের কাছে আমার ইজতিহাদী কৈফিয়ত পেশ করে সুদৃষ্টি আকর্ষণ করছি । প্রয়োজনের তাকীদে যা কিছু লিখি, সবই আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় । আল্লাহ যেন তা আমাকে দান করেন এবং কাল কিয়ামতে এরই অসীলায় আমাকে, আমার শ্রদ্ধেয় পিতা-মাতা ও ওস্তাযগণকে, আর এ বই-এর উদ্যোক্তা, প্রকাশক ও সকল আমলকারী পাঠককে তাঁর মেহমান-খানা জান্নাতে স্থান দেন । আমীন

বিনীত

আবদুল হামীদ আল-মাদানী

আল-মাজমাআহ সুউদী আরব


স্বলাতে মুবাশ্‌শির

বিশুদ্ধচিত্ততা এবং মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (স) এর তরীকা, যা সহীহ হাদীসে বৰ্ণিত ।

নামাযের শর্তাবলী

১। নামাযীকে প্রকৃত মুসলিম হতে হবে। ২। জ্ঞানসম্পন্ন হতে হবে। (পাগল বা জ্ঞানশূন্য হবে না।) ৩। বিবেকসম্পন্ন হতে হবে। (সাত বছরের নিম্ন বয়সী শিশু হবে না।) ৪। (ওযু-গোসল করে) পবিত্র হতে হবে। ৫। নামাযের সঠিক সময় হতে হবে। ৬ । শরীরের লজ্জাস্থান আবৃত হতে হবে। ৭। কিবলার দিকে মুখ করতে হবে । ৮ । মনে মনে নিয়ত করতে হবে । ৯ । শরীর, পোশাক ও নামাযের স্থান থেকে নাপাকী দূর করতে হবে।

নামাযের আরকানসমূহ

১। (ফরয নামাযে) সামর্থ্য হলে কিয়াম (দাঁড়ানোর সময় দাঁড়িয়ে নামায পড়া)। ২। তাকবীরে তাহরীমা । ৩ । (প্রত্যেক রাকআতে) সূরা ফাতিহা। ৪। রুকূ‘। ৫ । রুকূ’ থেকে উঠে সোজা হয়ে দাঁড়ানো । ৬ । (সপ্তমাঙ্গে) সিজদাহ । ৭। সিজদাহ থেকে উঠে বসা। ৮। দুই সিজদার মাঝে বৈঠক। ৯। শেষ তাশাহহুদ । ১০ । তাশাহহুদের শেষ বৈঠক । ১১। উক্ত তাশাহহুদে নবী (আপা) এর উপর দরূদ পাঠ । ১২। দুই সালাম । ১৩। সমস্ত রুক্‌নে ধীরতা ও স্থিরতা। ১৪ । আরকানের মাঝে তারতীব ও পর্যায়ক্রম ।

স্বলাতে মুবাশ্‌শির

নামাযের ওয়াজিবসমূহ

১। তাকবীরে তাহরীমা ছাড়া সমস্ত তাকবীর। ২। রুকূ‘র তাসবীহ। ৩। (ইমাম ও একাকী নামাযীর জন্য) ‘সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ’ বলা। ৪। (সকলের জন্য) ‘রাব্বানা ওয়ালাকাল হাম্দ্’ বলা। ৫ । সিজদার তাসবীহ। ৬। দুই সিজদার মাঝে দুআ’ । ৭। প্রথম তাশাহহুদ । ৮ । তাশাহহুদের প্রথম বৈঠক।

নামায কখন ফরয হয়?

হিজরতের পূর্বে নবুওয়াতের ১২ অথবা ১৩তম বছরে শবে-মি’রাজে সপ্ত আসমানের উপরে সরাসরি আল্লাহ ও তাঁর প্রিয় রসূলের সাক্ষাতে (বিনা মাধ্যমে) নামায ফরয হয়। প্রত্যহ ৫০ ওয়াক্তের নামায ফরয হলে মূসা (আ.) ও জিবরীল (আ.) এর পরামর্শমতে মহানবী (স) আল্লাহু তাআলার নিকট কয়েকবার যাতায়াত করে নামায হাল্কা করার দরখাস্ত পেশ করলে ৫০ থেকে ৫ ওয়াক্তে কমিয়ে আনা হয়। কিন্তু আল্লাহর কথা অনড় বলেই ঐ ৫ ওয়াক্তের বিনিময়ে ৫০ ওয়াক্তেরই স্নাওয়াব নামাযীরা লাভ করে থাকেন।

নামায ফরয হওয়ার গোড়াতে (৪ রাকআতবিশিষ্ট নামাযগুলো) দু’ দু’ রাকআত করেই ফরয ছিল । পরে যখন নবী ( (আপারারি) মদীনায় হিজরত করলেন, তখন (যুহর, আসর ও ইশার নামাযে) ২ রাকআত করে বেড়ে ৪ রাকআত হল । আর সফরের নামায হল ঐ প্রথম ফরমানের মুতাবেক।

স্বলাতে মুবাশ্‌শির

নামাযের মাহাত্ম্য

মহান আল্লাহ বলেন,

অর্থাৎ “তুমি তোমার প্রতি প্রত্যাদিষ্ট গ্রন্থ পাঠ কর এবং যথাযথভাবে নামায পড়। নিশ্চয় নামায অশ্লীল ও মন্দ কাজ হতে বিরত রাখে। আর অবশ্যই আল্লাহর যিক্র (স্মরণই) সর্বশ্রেষ্ঠ। ৩

নামায মুমিনের চক্ষুকে শীতল করে, তার যাবতীয় ছোট ছোট গোনাহ বা লঘু ও উপপাপকে মোচন করে দেয়। আবু হুরাইরা বলেন, আমি আল্লাহর রসূল (আনার) -কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, “কি অভিমত তোমাদের, যদি তোমাদের কারো দরজার সামনেই একটি নদী থাকে এবং সেই নদীতে সে প্রত্যহ পাঁচবার গোসল করে, তার শরীরে কোন ময়লা অবশিষ্ট থাকবে কি? সকলে বলল, ‘না, তার শরীরে কোন ময়লা অবশিষ্ট থাকবে না ।’ তিনি বললেন, “অনুরূপই পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের উপমা। ঐ নামাযসমূহের ফলেই (নামাযীর) সমস্ত গোনাহকে আল্লাহ মোচন করে দেন।”

১. সহীহুল বুখারী ৩৪৯, ৩৩৪২, ৩৮৮৭, সহীহ মুসলিম ১৬২, ১৬৪, তিরমিযী ২১৩, নাসাঈ ৪৪৮- ৫০, আহমাদ ১৭৩৭৮, ১৭৩৭৮, মিশকাতুল মাসাবীহ ৫৮৬৪

২. সহীহুল বুখারী ৩৫০, ১০৯০, ৩৯৩৫, সহীহ মুসলিম ৬৮৫, নাসাঈ ৪৫৩-৫, আবূ দাউদ ১১৯৮, আহমাদ ২৫৮০৬, মুওয়াত্তা মালিক ৩৩৭, মিশকাতুল মাসাবীহ ১৩৪৮

৩. সূরা আল-আনকাবূত ২৯/৪৫

৪. বুখারী ৫২৮, মুসলিম ৬৬৭, তিরমিযী ২৮৬৮, নাসাঈ ৪৬২, আহমাদ ৮৭০৫, ৯২২১, দারিমী ১১৮৩

স্বলাতে মুবাশ্‌শির

স্বলাতে মুবাশ্‌শির

Reviews (0)

Reviews

There are no reviews yet.

Be the first to review “স্বলাতে মুবাশ্‌শির”

Your email address will not be published.

Shopping cart
Facebook Twitter Instagram YouTube WhatsApp WhatsApp

Sign in

No account yet?